বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:০৮ পূর্বাহ্ন

ইরানের পরমাণু কেন্দ্রে নাশকতার অভিযোগ

নিউজ ডেস্ক :: ইরানের একটি পারমাণবিক কেন্দ্রে ‘অন্তর্ঘাতমূলক’ হামলা হয়েছে বলে দেশটির শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এর একদিন আগেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচির নতুন যন্ত্রপাতির তথ্য প্রকাশ করেছিল দেশটি। খবর বিবিসি বাংলা’র।

ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থার মুখপত্র রেহরোজ কামালভান্দি বলেছেন, রোববার (১১ এপ্রিল) সকালে পারমাণবিক কেন্দ্রের বৈদ্যুতিক নেটওয়ার্কে একটা ঘটনা ঘটেছে। যদিও বিস্তারিত জানাননি তিনি। তবে ইরানের ফার্স নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, এতে কোন হতাহত বা লিকেজের ঘটনা ঘটেনি। ওই ঘটনায় তেহরানের দক্ষিণে নাতানজ পারমাণবিক কেন্দ্রটি বিদ্যুৎবিহীন হয়ে যায়।

পরবর্তীতে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সংস্থাটির প্রধান আলি আকবর সালেহীর একটি বিবৃতি পাঠ করা হয়, যেখানে তিনি ওই ঘটনাকে ‘নাশকতামূলক হামলা’ এবং ‘পারমাণবিক সন্ত্রাস’ বলে বর্ণনা করেছেন। অবশ্য এই ‘সন্ত্রাসী হামলার’ জন্য কাউকে নির্দিষ্ট করে দায়ী করেননি সালেহী।

এদিকে ইসরাইলি গণমাধ্যমে গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে খবর প্রকাশ করা হচ্ছে যে, এটা ইসরাইলি সাইবার হামলার ফলাফল ছিল। তবে ওই ঘটনার ব্যাপারে সরাসরি কোন মন্তব্য করেনি ইসরাইল।

এক বিবৃতিতে এই জঘন্য ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ইসলামিক রিপাবলিক অফ ইরান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থাকে আহবান জানাচ্ছে যেন তারা পারমাণবিক সন্ত্রাসের বিষয়টিকে মোকাবেলা করে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয় ‘সব ধরনের অপরাধীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার অধিকার রয়েছে ইরানের।’

আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা জানিয়েছে, তারা এই ঘটনার কথা শুনেছে, তবে কোন মন্তব্য করেছি।

ইরানের এই ঘটনা এমন সময় ঘটলো যখন ২০১৫ সালের একটি পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার বিষয়ে কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।

শনিবার (১০ এপ্রিল) নাতানজ পারমাণবিক কেন্দ্রে সেন্ট্রিফিউজ সংযোজন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি, যা রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার কাজে সেন্ট্রিফিউজ ব্যবহৃত হয়, যার মাধ্যমে রিঅ্যাক্টর ফুয়েলের পাশাপাশি পারমাণবিক অস্ত্রও তৈরি করা সম্ভব।

তবে এই কর্মকাণ্ডকে ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তির একটি লঙ্ঘন বলে দেখা হচ্ছে। কারণ ওই চুক্তি অনুযায়ী ইরান শুধুমাত্র বিদ্যুৎ তৈরির জন্য সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন ও মজুদ করতে পারে।

গত বছরের জুলাই মাসে নাতানজ কেন্দ্রের সেন্ট্রিফিউজ স্থাপন কেন্দ্রে আগুনের ঘটনা ঘটেছিল। সেই ঘটনাকে অন্তর্ঘাতমূলক হামলা বলে দাবি করেছিল ইরান।

তেহরান থেকে প্রায় আড়াইশ’ কিলোমিটার দক্ষিণে নাতানজ এবং এখানেই ইরানের সবচেয়ে বড় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সাইট।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: