বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:২৪ অপরাহ্ন

দ. আফ্রিকায় সব হারিয়ে প্রতিবেশীর আশ্রয়ে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী

নিউজ ডেস্ক :: দক্ষিণ আফ্রিকার কোয়াজুলু নাটাল প্রদেশের লেডিস্মীথ এলাকায় মলের পর সবচেয়ে বড় দোকানটি ছিল বাংলাদেশি লুৎফর রহমানের। সেই দোকানে স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যায় বিক্ষোভকারীরা লুটপাটের পরে অগ্নিসংযোগ করে।

দোকান ও থাকার বাসস্থান হারিয়ে তিনিসহ তার প্রতিষ্ঠানের ছয়জনের দলটি অন্য একজন বাংলাদেশির আশ্রয়ে থাকছেন।

সোমবারের ঘটনার পর আহত লুৎফর রহমান ও তার লুটপাট হওয়া দোকানের ছবি দক্ষিণ আফ্রিকার এশিয়ানদের বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পেজগুলোতে ভাইরাল হয়ে যায়।

এর সূত্র ধরে লুৎফর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘সেদিন সকাল থেকে পার্শ্ববর্তী সড়কে বিক্ষোভকারীদের দৌড়াদৌড়ি দেখে দোকান বন্ধ করার জন্য মনস্থির করি। এর মধ্যেই স্থানীয় লোকজন যারা আমাদের নিয়মিত কাস্টমার ছিল, তারা এসে সাহস যোগাতে থাকে। তারা বলে, রাত-দিন আমার দোকান তারা পাহারা দেবে।’

‘এরপর সন্ধ্যা সাতটার সময় কিছু যুবক এসে দোকানের সামনে জড়ো হতে থাকে। এরপর আমরা দোকান বন্ধ করে দিই। তবে তারপরও বিক্ষোভকারীরা দোকানের মেইন গেট ভেঙে সেখানে লুটপাট করে। এরপর তা জ্বালিয়ে দেয়।’

‘এ সময় জীবন রক্ষা করতে পালাতে গিয়ে অন্ধকারে আমি এবং আমার বড় ভাইসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ স্টেশন ও প্রাইভেট সিকিউরিটি সংস্থার কাছে কয়েকবার ফোন করে ঘটনা উল্লেখ করে সহযোগিতা চাইলেও তারা এগিয়ে আসতে পারেনি। কারণ প্রধান সড়ক বিক্ষোভকারীরা আগেই আটকে দিয়েছিল।’

বাংলাদেশি প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা দামের দোকানটা লুটপাট শেষে তারা অগ্নিসংযোগ করে। আমার দুইটি গাড়ির মধ্যে একটি পুড়িয়ে দিয়েছে। বড় গাড়িটা নিয়ে গেছে। সে রাতে পুরোটা সময় খোলা আকাশের নিচে ছিলাম। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে এক প্রতিবেশীর বাসায় আশ্রয় নিয়েছি।

আদালত অবমাননার দায়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা (৭৯) কারাগারে যাওয়ার ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন তার অনুসারীরা।

গত কয়েকদিনের রাজপথে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে তাদের মধ্যে ১২০০ জনকে গ্রেফতার করেছে দেশটির পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও প্রাইভেট নিরাপত্তা সংস্থার গুলিতে মারা গেছে কমপক্ষে ৯০ জন।

শুরুতে আন্দোলন কোয়াজুলু নাটাল প্রদেশে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু তা শনিবার (১০ জুলাই) মধ্যরাত থেকে ফ্রি স্টেট ও ঘাউটেং প্রদেশে ছড়িয়ে পড়ে। জোহানেসবার্গ শহরসহ পার্শ্ববর্তী গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক এলাকাগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড।

এ ঘটনায় শনিবার মধ্যরাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত আলেকজান্ডার, জোহানেসবার্গ সিটি, জেপিস টাউনের, জার্মিস্টন, পিটারমেরিজবার্গ, ফোর্ডসবার্গ, ডেবিটন, একটনভিলে বাংলাদেশি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্যাপক লুটপাট চালিয়েছে আন্দোলনকারীরা। কোনো কোনো এলাকায় নিরাপত্তা সংস্থার তৎপরতার পরও লুটপাট থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিরাপদ রাখা সম্ভব হয়নি।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: