বরগুনা প্রতিনিধি :: বরগুনার তালতলীতে ছেলের দাদনের টাকার জন্য বৃহস্পতিবার জাহাঙ্গীর হাওলাদার (৫৫) নামের এক ভাসমান কিটনাশক ব্যাবসায়ীকে মারধরের ঘটনা ঘটে। শুক্রবার সকালে নিজ বাড়ির টয়লেটের সামনে থেকে ঔ ব্যাক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় দাদন ব্যবসায়ী জহিরুলকে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (২৩ জুলাই) সকাল ৮টার দিকে নিজ বাড়ির টয়লেটের সামনে গলায় রশি দিয়ে বাধা অবস্থায় মৃতদেহ উদ্বার করে পুলিশ। জাহাঙ্গীর হাওলাদার (৫৫) তালতলী উপজেলার তেতুলবাড়িয়া এলাকার মৃত্যু আমজেদ হাওলাদারের ছেলে।
২০১৮ সালের দিকে দাদন ব্যবসায়ী জহিরুলের কাছ থেকে জাহাঙ্গীর হাওলাদারের ছেলে আলিম মিয়া ৯০ হাজার টাকা দাদন নেয়। সেই দাদনের টাকাসহ প্রায় দেড় লাখ টাকা দিয়ে জাল ও নৌকা ক্রয় করে নদীতে মাছ শিকার করতে যায়। নদীতে মাছ না থাকায় দাদনের টাকা পরিশোধ করতে না পরলে জহিরুল বিভিন্ন সময় তাদের মানসিকভাবে চাপ প্রয়োগ করেন। একপর্যায়ে জাল ও নৌকা লোকসান দিয়ে দাদন ব্যবসায়ী জহিরুলের কাছেই ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়।
বাকি ২০ হাজার টাকা পরিশোধের জন্য সময় নেয় জাহাঙ্গীর ও ছেলে আলিম। এক মাস পর ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন এবং বাকি টাকার জন্য এক মাস সময় চান। সময় পার হওয়ার সাথে সাথেই ফের চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। এই ঘটনার জের ধরে গতকাল বৃহস্পতিবার (২২জুলাই) বিকালে জাহাঙ্গীর হাওলাদারসহ তার পরিবারের লোকজনদের মারধর করেন জহিরুল ও তার সন্ত্রাসী বাহিনি।
শুক্রবার সকালে তার বাড়ির টয়লেটের সামনে থেকে রশি দিয়ে বাধা অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনার পর থেকে দাদন ব্যবসায়ী জহিরুল পলাতক ছিলো। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত জহিরুলকে আটক করে।
নিহতের স্ত্রী শেফালী বেগম বলেন, দাদনের টাকা পরিশোধ করার জন্য গতকাল জহিরুল আমার ছেলে, স্বামী, পুত্রবধু ও আমকে মারধর করেন। রাতে আমার স্বামীকে বিছানায় না দেখে খোজাখুজি করি। ভোর রাতে টয়লেটের সামনে রশি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় আমার স্বামীর লাশ দেখতে পাই। আমার স্বামীকে জহিরুল ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে। আমি বিচার চাই।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ কামরুজ্জামান বলেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি একটি হত্যাকাণ্ড । লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জহিরুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে।