শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২২ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম
চৌদ্দগ্রামে বৃষ্টির প্রার্থনায় ইসতিসকার নামাজ, প্রখর রোদে মুসল্লিদের কান্না হাতিয়ায় সৈকতে দেখা মিলল ‘ইয়েলো বেলিড সি স্নেক’ ফসলি জমি কেটে মাটির ব্যবসা: ভ্রাম্যমাণ আদালতে দুই লাখ টাকা জরিমানা মাটি ব্যবসায়ীর লাখ টাকা জরিমানা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ব্যবস্থাপনা পর্ষদে কুমিল্লার মফিজুর রহমান বাবলু সিনেমা হলে দেখা যাবে আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জয়ের গল্প দেশে পৌঁছেছেন টাইগারদের নতুন কোচ জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এশিয়া : ডাব্লিউএমও নয়াপল্টনে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল জাতি হিসেবে আমাদের সকল প্রাপ্তির দ্বার উন্মোচন করে গেছে মুজিবনগর সরকার-ধর্মমন্ত্রী

বায়ু দূষণে ঢাকা আবারও শীর্ষে

নিউজ ডেস্ক :: বিশ্বে বায়ুদূষণে সোমবার আবারও শীর্ষ অবস্থানে চলে এসেছে ঢাকা। বৈশ্বিক বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ারের  প্রতিবেদন অনুযায়ী, দূষণের তালিকায় শীর্ষস্থানে ঢাকার সঙ্গে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা।

সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে রাজধানীর বায়ুর মান ছিল ১৮০, যা বায়ুমান সূচকে ‘অস্বাস্থ্যকর’। ঢাকায় বায়ুদূষণের উপাদান অতি সূক্ষ্ম বস্তুকণা পিএম–২.৫–এর উপস্থিতি স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে প্রায় ২৭ গুণ বেশি।

গত শুক্র ও শনিবারও ঢাকার বাতাসের মান অস্বাস্থ্যকর ছিল। এই দুই দিন জেলায় যথাক্রমে বায়ুর মানের সূচক ছিল ১৭৫ ও ১৮৭। গতকাল ছিল ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ (সূচক ছিল ২০৪)।

অস্বাস্থ্যকর বায়ুর মানের দিক দিয়ে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে যথাক্রমে রয়েছে সার্বিয়ার বেলগ্রেড, পাকিস্তানের লাহোর ও ভারতের দিল্লি।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা এয়ার ভিজ্যুয়ালের বায়ুদূষণ পর্যবেক্ষণ যন্ত্র দিয়ে বায়ুর মান মাপা হয়।

বাতাসে ভাসমান বস্তুকণার (পার্টিকুলেট ম্যাটার বা পিএম) পরিমাপ করা হয় প্রতি ঘনমিটারে মাইক্রোগ্রাম (পিপিএম-পার্টস পার মিলিয়ন) এককে। এসব বস্তুকণাকে ১০ মাইক্রোমিটার ও ২.৫ মাইক্রোমিটার ব্যাস শ্রেণিতে ভাগ করে তার পরিমাণের ভিত্তিতে ঝুঁকি নিরূপণ করেন গবেষকরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে ২.৫ মাইক্রোমিটার ব্যাসের বস্তুকণার পরিমাণ (পিপিএম) যদি শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকে, তাহলে ওই বাতাসকে বায়ু মানের সূচকে (একিউআই) ‘ভালো’ বলা যায়। এই মাত্রা ৫১-১০০ হলে বাতাসকে ‘মধ্যম’ মানের এবং ১০১-১৫০ হলে ‘বিপদসীমায়’ আছে বলে ধরে নেওয়া হয়। আর পিপিএম ১৫১-২০০ হলে বাতাসকে ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১-৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-৫০০ হলে ‘অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়।

বায়ু দূষণের দিক থেকে বিশ্বে সবচেয়ে উপরের দিকে থাকা ভারতের রাজধানী দিল্লিতে গত ১৭ নভেম্বর বায়ু মান ছিল ৩৮৯। প্রবল দূষণের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয় রাজ্য সরকার।

এক বছরে রাজধানী ঢাকা শহরে বায়ু দূষণ ১০ শতাংশ হারে বেড়েছে বলে একটি যৌথ গবেষণায় উঠে এসেছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) ঢাকা শহরের ৭০টি স্থানের বায়ু দূষণের এই সমীক্ষা চালিয়েছে।

রাজধানীর পুরান ঢাকার আশেপাশের এলাকায় দূষণ সবচেয়ে বেশি বলে সমীক্ষায় উঠে এসেছে। আবাসিক এলাকা ধানমণ্ডি, গুলশান, বাড্ডা ও বনানীতে দূষণের মাত্রা বেড়েছে ‘আশঙ্কাজনকভাবে’।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে ঢাকা শহরের ৭০টি স্থানের গড় বস্তুকণা২.৫ ছিল প্রতি ঘনমিটারে ৩৩৫.৪ মাইক্রোগ্রাম। ভূমি ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে ২০২০ সালে ৫টি এলাকার বস্তুকণা ২.৫ গড় মান ছিল প্রতি ঘনমিটারে ৩৩৫.৪ মাইক্রোগ্রাম যা ২০১৯ সালের তুলনায় প্রায় ১০.২ শতাংশ বেশি। উল্লেখ্য যে, ২০১৯ সালে বস্তুকণা২.৫ গড় মান পাওয়া যায় প্রতি ঘনমিটারে ৩০৪.৩২ মাইক্রোগ্রাম।

পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ঢাকার বাতাসে অতি সূক্ষ্ম বস্তুকণা২.৫ এর পরিমাণ তুলনামূলকভাবে বেশি। এটি সাধারণ জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো অর্থাৎ যানবাহন, শিল্পকারখানা ও বর্জ্য পোড়ানো থেকে সৃষ্টি হয়। তবে নির্মাণকাজ হতে সৃষ্ট ধুলাবালি রাস্তার গাড়ির চাকার সাথে সংঘর্ষের ফলে অতিক্ষুদ্র ধূলিকণায় রূপান্তরিত হতে পারে।

গবেষকেরা বলছেন, ঢাকার এমন বায়ু স্বাস্থ্যের ওপর নানাভাবে প্রভাব ফেলছে। ফুসফুসের নানা রোগ, নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন জটিলতায় পড়ছে ঢাকাবাসী।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: