শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৫২ অপরাহ্ন

শিরোনাম
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে  প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হবে- সুবর্ণচর উপজেলা আ.লীগ হাতিয়ার উন্নয়নে সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ কর্মসূচিকে কাজে লাগানো হবে – মোহাম্মদ আলী এমপি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ৩৯ বছর পর জমি ফিরে পেলেন যদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবার শিবালয়ে ১৫তম  মাই টিভির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত  ক্রীড়াবিদরা দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনছে- ধর্মমন্ত্রী উজিরপুরে সৎসঙ্গ ফাউন্ডেশনের সেমিনার অনুষ্ঠিত শিবালয়ে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিবাড়ি খেলা অনুষ্ঠিত লঞ্চের দড়ি ছিঁড়ে ৫ জনের মৃত্যু : আসামিদের তিন দিনের রিমান্ড ঈদের দিনে সদরঘাটে দুর্ঘটনায় ঝরল ৫ প্রাণ সৌদির সাথে মিল রেখে নোয়াখালীর ৪ গ্রামে ঈদ উদযাপন

মাদকাসক্ত নারী ও শিশু শাহ আলম সরকার

স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ২০৪১ সালের মধ্যে এ দেশকে একটি উন্নতদেশে রূপান্তরের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। উন্নত দেশের অপরিহার্যতায় মাদকমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা একটি অন্যতম নির্ণায়ক। অবৈধ মাদকের ছোবল থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করার লক্ষ্যে মাদক অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন এবং ইতোমধ্যে একটি অ্যাকশন প্লান অনুমোদিত হয়েছে।

বাংলাদেশ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা সবকিছুতেই বাংলাদেশের উন্নয়ন উল্লেখ করার মতো। কর্মক্ষম মানবসম্পদকে কাজে লাগিয়ে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড আহরণে বাংলাদেশ বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু দেশে মাদকের ব্যবহার উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। এর শুরুটা হয়েছিল আশির দশকে। সে সময় অনেক মধ্যবয়সি ব্যক্তিও হেরোইন ও ফেনসিডিলে আসক্ত হয়ে পড়ে। তখন সমাজের যত্রতত্র মাদকের প্রাপ্তি ও ব্যবহার ছিল উল্লেখ করার মতো। বাংলাদেশে ফেনসিডিল পাচারের জন্য প্রতিবেশী দেশগুলোর সীমান্ত এলাকায় অনেক কারখানাও তৈরি করা হয়। এ প্রক্রিয়া এখনো অব্যাহত আছে।সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই মাদকাসক্তি একটি মারাত্মক সামাজিক ব্যাধি হিসেবে দেখা দিয়েছে।

যে নেশার দ্রব্য গ্রহণ করার ফলে ব্যক্তির শারিরীক ও মানসিক পরিবর্তন ঘটে তাই নেশাদ্রব্য বা মাদকদ্রব্য । বিভিন্ন মাদকদ্রব্য হল মদ, সিগারেট, ফেনসিডিল, ইয়াবা, সিসা, গাঁজা, কোকেইন, হেরোইন, আফিম ইত্যাদি। ইয়াবা সেবনে স্মরণশক্তি ও মনযোগ দেওয়ার ক্ষমতা নষ্ট হয়: আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা দেয়; মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়; লিভার ও কিডনি নষ্ট হয়ে যায়; রক্তচাপ বৃদ্ধি পায় ও হার্টএটাক হয়। গাঁজা সেবনে ভালো মন্দের বিচার করার ক্ষমতা হ্রাস পায়; দৃষ্টিশক্তি ও স্মৃতিশক্তি হ্রাস পায় এবং মতিভ্রম হয়। হেরোইন সেবনে পুরুষত্বহীনতা ও বন্ধ্যাত্ব দেখা দেয় ও ফুসফুস ও হার্টে প্রদহ হয় এবং লিভার সিরোসিস ও ক্যান্সার হয়। ধুমপানে মুখে ঘা ও ক্যান্সার হয়; ফুসফুসে ক্যান্সার হয়; হার্টএটাক ও মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় সর্বশেষ ইনজেকশনের মাধ্যমে মাদক গ্রহণ করলে হেপাটাইটিস বি ও সি হয়।

মাদকের থাবায় নাস্তানাবুদ একটি প্রজন্ম। শহর থেকে গ্রাম, স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়—সর্বত্রই মাদক পাওয়া যাচ্ছে হাতের নাগালে। মাদক এক নীরব ঘাতক। আধুনিকতা নিয়ে ভ্রান্ত ধারণা, পিতামাতার বিবাহ বিচ্ছেদ বা পৃথক থাকা, মাদকাসক্ত বন্ধু, মাদক ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতা, অনলাইনে সহজে মাদকদ্রব্য কেনার সুযোগসহ আরও কিছু কারণে দেশে দিন দিন বাড়ছে নারী মাদকাসক্তের সংখ্যা। সরকারি ও বেসরকারি সেবাকেন্দ্রের তথ্য পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, গত তিন বছরে নারী ও শিশু মাদকাসক্তের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। শহরে উচ্চবিত্ত বা শিক্ষিত পরিবারের নারী মাদকাসক্তদের নিরাময়ের সুযোগ থাকলেও দরিদ্র ও অশিক্ষিত পরিবারের নারী মাদকাসক্তদের তথ্য প্রকাশ পাচ্ছে না। এতে অধিকাংশ মাদকাসক্ত নারী চিকিৎসার বাইরে রয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশের মাদক পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে দেশে ৬৮ লাখ মানুষ মাকদাসক্ত। এদের মধ্যে ৮৪ ভাগ পুরুষ , ১৬ ভাগ নারী । অপরিকল্পিত গর্ভপাতসহ বিভিন্ন কারণে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছেন নারীরা। উচ্চবিত্ত পরিবারের নারীদের মধ্যে এ নিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার প্রবণতা বাড়লেও, মধ্য ও নি¤œবিত্তের মধ্যে তা বাড়েনি। দেশের সরকারি ও বেসরকারি মাদক নিরাময় কেন্দ্রের এক পরিসংখ্যানে জানা গেছে, সামাজিক ও অর্থনৈতিক চাপে এখনও অধিকাংশ মাদকাসক্ত নারী চিকিৎসার বাইরে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, মাদকসেবীদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। নারীদের মাদক গ্রহণের কারণগুলো পুরুষদের কারণের চেয়ে অনেকাংশে ভিন্ন। নারীদের ক্ষেত্রে মূল কারণের তালিকায় আছে— বন্ধুদের চাপ, হতাশা, অর্থনৈতিক কারণ, পাশ্চাত্য সংস্কৃতির অনুসরণ, প্রেমের সম্পর্কে টানাপোড়েন, মাদক ব্যবহারের পারিবারিক ইতিহাস, শারীরিক ও মানসিক সমস্যা, মা-বাবার কলহ, বাল্যবিয়ে, শারীরিক-মানসিক নির্যাতন ইত্যাদি। মানসিক রোগের কারণেও অনেক নারী মাদক ব্যবহার করে। যেমন— সিজোফ্রেনিয়া, ব্যক্তিত্ব বৈকল্য, বিষণ্নতা।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, সরকারি ও বেসরকারি মাদক নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসাসেবা নেওয়ার ভিত্তিতে ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২১ সালে নারী ও শিশু মাদকাসক্ত বেড়েছে দ্বিগুণ। ২০১৯ সালে চিকিৎসা নিয়েছে ৫৪৪ জন নারী ও শিশু রোগী। ২০২০ সালে নিয়েছে ১ হাজার ২৪২ জন এবং ২০২১ সালে চিকিৎসা নিয়েছে ১ হাজার ৭৬ জন। প্রসঙ্গত, দেশে সরকারের চারটি মাদকাসক্ত নিরাময়কেন্দ্র আছে। প্রসঙ্গত, ঢাকায় তেজগাঁও কেন্দ্রে নারীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। এখানে নারীর জন্য ২০টি শয্যা আছে। অন্যদিকে বেসরকারি চিকিৎসা ও নিরাময় কেন্দ্রের সংখ্যা ৩৬৬টি। এর মধ্যে ঢাকা আহছানিয়া মিশনে নারীদের জন্য সর্বাধিক ৩৬ শয্যার ব্যবস্থা আছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগের পরিচালক মো. ফজলুর রহমান বলেন, কয়েক বছর ধরে পুরুষের পাশাপাশি নারী মাদকাসক্তের সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। আমরা লক্ষ্য করছি এর পেছনে অনেকগুলো কারণের মধ্যে পারিবারিক ও সামাজিক সংকট অন্যতম। অধিদপ্তর নারীদের জন্য চিকিৎসা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সারাদেশে মাদক নিয়ন্ত্রণে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা ও মাদকবিরোধী গণসচেতনতামূলক কার্যক্রম বাস্তবায়নসহ বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এতে মাদকাসক্তের সংখ্যা কমে আসবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।

মাদকদ্রব্যের প্রতি আসক্তি কতটা ভয়াবহ রূপ নিতে পারে, বর্তমানে তার প্রভাব অতটা বোঝা না গেলেও সুদূরপ্রসারী মারাত্মক প্রভাব রয়েছে। একটি সময় ছিল যখন সমাজের বিত্তশালী পরিবারের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে মাদক সেবনের আসক্তি ছিল; কিন্তু বর্তমানে তা সব শ্রেণির মধ্যেই ছড়িয়ে গেছে। বিড়ি বা সিগারেট দিয়ে শুরু হয়ে গাঁজা, ফেনসিডিল, ইয়াবা ও মেথঅ্যাম্ফিটামিন দিয়ে শেষ হয়। প্রথমে কেউ বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে কৌতূহলবশত সেবন করে, তারপর একটু একটু করে ভালো লাগা শুরু হয়, পরে আস্তে আস্তে অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়—এ হচ্ছে মাদক গ্রহণের ধাপগুলো। সাধারণত মাদকাসক্ত বন্ধুবান্ধবের প্ররোচনায়ই প্রথম ধাপে মাদক গ্রহণের সূচনা ঘটে। দেশে মাদকসেবীর ৮০ শতাংশ তরুণ-তরুণী, যাদের ৬১ শতাংশই বন্ধুবান্ধবের মাধ্যমে মাদকাসক্ত হয়েছে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে, মাদকবিরোধী জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম নিয়মিতভাবে পরিচালিত হচ্ছে। সারাদেশে ব্যাপক পরিসরে মাদকবিরোধী প্রচার– প্রচারণামুলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি, মিডিয়া ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, শিক্ষক, শিক্ষা ও ধর্মী প্রতিষ্ঠানসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে এত সম্পৃক্ত করা হয়েছে। প্রচারাভিযানে নানা ধরনের কর্মসূচির সাথে মাদকবিরোধী উঠান বৈঠক, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, গোলটেবিল বৈঠক, রচনা ও চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতা, জুমার নামাজের খুৎবার আগে মাদকবিরোধী বয়ানের মতো ব্যতিক্রমধর্মী কর্মসূচি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাছাড়া ২০২০-২১ অর্থবছরে মাদকের ক্ষতিকর প্রভাব সংবলিত ৩৫ হাজার ৭৬১ টি অ্যাম্বুশড পোস্টার এবং ৩২ হাজার ৭৭৫টি পিভিসি পোস্টার বিতরণ করা হয়েছে। সারাদেশে ৩১ হাজার ১৭৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩১ হাজার ৮০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাদকবিরোধী কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এশিয়ান টিভি চ্যানেলে ‘মাদকমুক্ত সুস্থজীবন’ নামীয় ২০ পর্বের মাদকবিরোধী টকশোর আয়োজন করা হয়েছে এবং এটিএন বাংলা, চ্যানেল আই, আরটিভি, মাইটিভি ও মোহনা টেলিভিশনে ২৪টি মাদকবিরোধী টকশো আয়োজন করা হয়েছে।

মাদক অপরাধের মামলাসমূহ দ্রুত নিষ্পত্তি এবং পূর্বের আইনে সৃষ্ট জাটিলতা নিরসনকল্পে মাদকদ্রব্য অপরাধসমূহ ট্রাইব্যুনালের পরিবর্তে অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ী ‘এখতিয়ার সম্পন্ন আদালত’ কর্তৃক বিচার্য হবার সুযোগ রেখে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ সংশোধন করে ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ (সংশোধন) আইন, ২০২০’ প্রণয়ন করা হয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ৫৮ হাজার ৮৭৬টি অভিযান পরিচালনা করে ১৬ হাজার ২৫৪টি মামলায় ১৭ হাজার ১৩৩ জন আসামীর বিরু্দ্েধ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তাছাড়া মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ২১ হাজার ১৭২টি অভিযান পরিচালনা করে ১০ হাজার ৯৫জন আসামীর বিরুদ্ধে ১০ হাজার ১৪৪টি মামলা দায়ের করে তাৎক্ষণিকভাবে সাজা প্রদান করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্যের পরিমাণ (ইয়াবা থেকে বিদেশি মদ পর্যন্ত মোট-২,৮৫৪, ৪১৮.৪৬)। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউব এবং এলইডি বিলবোর্ড, টিভি, ওয়েবিনার ওয়েবসাইটের ফেইজবুক পেইজ ও ইউটিউব ইত্যাদির মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক মানুষ মাদক সচেতনতার আওতাভুক্ত হয়েছে। বর্তমানে ফেসবুক ফলোয়ারের সংখ্যা ১ লক্ষ ২৫ হাজার ২১৩ এবং লাইক এর সংখ্যা ১ লক্ষ ১৮ হাজার ৬৪১টি। এছাড়াও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সেবাসমূহ সম্পর্কে পরামর্শ/অভিযোগ/মতামত প্রদানে একটি হটলাইন নম্বর ০১৯০৮-৮৮৮৮৮৮ স্থাপন করা হয়েছে।

দেশে মাদকাসক্তদের শারীরিক ও মানসিক চিকিৎসার জন্য সরকারিভাবে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহীতে ১টি করে মোট ৪ টি মাদকাসক্তি নিরাময়কেন্দ্র রয়েছে। যার বর্তমান বেড সংখ্যা ১৯৯টি। এ ছাড়াও সরকারিভাব দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে ২০০ শয্যার মাদকসক্তি নিরাময়কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ে ৪৫টি জেলায় ৩৬৫টি মাদকাসক্তি নিরাময়কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। সরকারি চিকিৎসাকেন্দ্রে বিনামূল্যে রোগীদের থাকা খাওয়া ওষুধপত্র ও চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে। তাছাড়া মাদকাসক্তি নিরাময়কেন্দ্রে রোগীর পাশাপাশি অভিভাবকদের ও বিশেষ কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে ১১ হাজার ৭৭৯ জনকে কাউন্সলিং সেবা প্রদান করা হয়েছে। নারী মাদকাসক্তদের চিকিৎসা সুবিধাসহ বর্তমানে কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি নিরাময়কেন্দ্রটি ১২৪ বেডে উন্নীত করা হয়েছে। ঢাকা কেন্দ্রিয় মাদকাসক্তি নিরাময়কেন্দ্রে ২০২০-২১ অর্থবছরে ৭০ জন পথশিশুকে চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়েছে। সরকারি পর্যায়ে ১৮ হাজার ২৯১ জন এবং বেসরকারি পর্যায়ে ১৬ হাজার ৩৩২ জন মাদকাসক্ত রোগীকে চিকিৎসা প্রদানের জন্য ১৭৬ জন এডুকেশন প্রফেশনালদের ইকো প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সরকার মাদকাসক্তদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য কক্সবাজারে জমি অধিগ্রহণের উদ্দেশ্যে ১৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে।

মাদকমুক্ত সমাজ গড়ে তোলা সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, পরিবার, সমাজ-সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। মাদকদ্রব্যের প্রচার ও প্রসার বন্ধ করা, নজরদারি বৃদ্ধি এবং মাদকদ্রব্য ব্যবহারের কুফল সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে পারলে দেশ ভবিষ্যতে একটি মাদকমুক্ত জাতি পেতে পারে। আসুন, মাদকের বিরুদ্ধে আমরা সবাই সচেতন হই, দলমত ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সবাই এক হয়ে কাজ করি। জীবনকে ভালোবেসে মাদকমুক্ত থাকি।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: