বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:০২ অপরাহ্ন
মোঃ শহিদুল ইসলাম, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কাপাসিয়া ইউনিয়নে গড়ে ওঠা আশ্রায়ণ প্রকল্প-২ তে ৪ বছর আগে আশ্রয় নেওয়া ২৪টি পরিবারকে ঘর ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন এসিল্যান্ড। নতুবা মামলা করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, তিস্তা ও বহ্ম্রপুত্রনদী ভাঙ্গন কবলিত আশ্রায়ণ প্রকল্প-২তে ১০০টি পরিবারের মধ্যে ২৪টি বাস্তু হারা হত দরিদ্র পরিবারকে আশ্রায়ণ প্রকল্পে ঠাঁই দেয় ৪ বছর আগে উপজেলা প্রশাসন। স্থায়ী ভাবে ঘর বন্দোবস্ত দেয়া না হলেও তাদের হাতে ঘরের চাবি তুলে দেয়া হয়। ঠাঁই পাওয়া এসকল হতদরিদ্র কায়িক শ্রম বিক্রি করে ওই ঘরে ৪ বছর ধরে জীবন জীবিকা নির্বাহ করতে থাকে। সামান্য আয় থেকে কিছু সঞ্চয় ছেলে-মেয়েদের জন্য রেখে যেতে থাকে তাদের পড়াশুনার ব্যয়ভার ও মেয়ের বিয়ের জন্য।
কিন্তু নিয়তির নিষ্ঠুরতায় সম্প্রতি তাদের ভাগ্যে নেমে আসে চরম দুর্দশা। গত এপ্রিলের নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যান মঞ্জু মিয়াকে ভোট না দেওয়ায় তার রোসানলে পড়েন ওই সকল হতদরিদ্র। তার ষড়যন্ত্রে হতদরিদ্র ২৪টি পরিবারকে ঘর ছাড়তে হচ্ছে। ইউপি চেয়ারম্যান প্রশাসনকে আবোল-তাবোল বুঝিয়ে সম্প্রতি এসিল্যান্ডকে প্রকল্প এলাকায় নিয়ে যান এবং তার মাধ্যমে ২৪টি পরিবারকে ঘর ছাড়ার নিদের্শ দিয়ে ঘরগুলোতে তালা লাগিয়ে দেন।
আসবাবপত্র ঘরের বাইরে ও ভিতরে ফেলে রাখা হয়। বিচ্ছিন্ন করা হয় বিদ্যুৎ সংযোগ। এ অবস্থায় পরিবারগুলো চোখে মুখে অন্ধকার দেখছেন। এদিকে এসিল্যান্ড প্রতিবার গুলোকে ঘর ছাড়ার জন্য মোবাইল ফোনে নির্দেশ দিচ্ছেন এবং জানিয়ে দিচ্ছেন ঘর না ছাড়লে মামলা করবেন। এছাড়া তিনি ওই ২৪ হতদরিদ্রের মধ্যে ১৪ জনকে তার অফিসে ডেকে নিয়ে জোড় পূর্বক মুসলেকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ অবস্থায় পরিবারগুলো যাবে কোথায় তার কুল কিনারা খুজে পাচ্ছেন না। ঘর ছাড়া নিদের্শ প্রাপ্ত রাশেদা, আয়নাল, জেলেখা, সুরুতজ্জামান, কল্পনা সহ অনেকে জানান, ৪ বছর আগে বরাদ্দ পাওয়া আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘর এখন তারা ছেড়ে দিয়ে কোথায় যাবেন। এর চেয়ে বরাদ্দ না দিলেই হতো।
স্থানীয় চেয়ারম্যান মঞ্জু মিয়া জানান, ওই ২৪ পরিবারের স্বচ্ছলতা লক্ষ্য করা গেলে তাদের ঘরগুলো ছেড়ে দেয়ার জন্য বলা হয়। সহকারী কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) মাহমুদ আল হাসান জানান, আমি ২৪ পরিবারকে ঘর ছাড়ার জন্য বলিনি। স্থানীয় চেয়ারম্যান পরিবারগুলোর স্বচ্ছলতার কথা জানিয়েছেন। আপনারা জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করতে পারেন। এদিকে ২৪ হতদরিদ্র পরিবারের সদস্যরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট জোড় দাবী ও হস্তক্ষেপ কামনা করছেন যাতে ঘরগুলো ছেড়ে দিতে না হয়।