নিউজ ডেস্ক : 'করোনা পরবর্তী সম্ভাব্য মন্দা মোকাবেলায় করণীয় তরুণদের ভাবনা' প্রতিযোগিতার ৩০ বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর রিজওয়ান দাউদ শামস।
মোট ১২১৭ জন প্রতিযোগী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে করোনা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের করণীয় বিষয়ে তাদের সুপারিশ উপস্থাপন করেন। তরুণদের অনেকেই ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকেই তাদের উদ্বেগ ও চিন্তা-ভাবনা প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে। তাদের সেসব চিন্তা-ভাবনাকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে পৌছে দেওয়ার জন্য ইয়ুথ অপরচুনিটিস ও আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেড আয়োজন করেছে 'করোনা পরবর্তী সম্ভাব্য মন্দা মোকাবেলায় করণীয়: তরুণদের ভাবনা' শীর্ষক লেখা প্রতিযোগিতা।
কভিড-১৯ মহামারীর সুদূর প্রসারী প্রভাবে বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষের জীবন ও জীবীকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরিস্থিতির জটিলতা বিবেচনায় এ অবস্থা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ প্রক্রিয়ায় সকলের অংশ গ্রহণ জরুরি। বাংলাদেশের তরণ প্রজন্মের এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হবে, কারণ এই পরিস্থিতির দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব তরুণ প্রজন্মের উপরই পড়বে। এই প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় তরুণদেরকে একটি প্লাটফর্ম তৈরি করে দেওয়া, যেখানে তারা করোনা পরবর্তী পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য দেশের প্রস্তুতি গ্রহণের বিষয়ে তাদের চিন্তা-ভাবনা ও পরামর্শসমূহ উপস্থাপন করতে পারবে। ১০টি বিষয়ে প্রতিযোগীগণ তাদের পরামর্শ প্রেরণ করেছেন। বিষয় ভিত্তিক বিজয়ীদের তালিকা:
১. সামাজিক সুরক্ষা প্রোগ্রামসমূহকে এগিয়ে নেওয়া:
চ্যাম্পিয়ন: মাহমুদুল হাসান নাঈম, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
প্রথম রানার আপ: মারজুকা আহমদ চৌধুরী, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালস
দ্বিতীয় রানার আপ:আতিয়া ইসলাম, রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়
২. টেকসই কৃষিব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ
চ্যাম্পিয়ন: তামান্না পারভেজ, চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়
প্রথম রানার আপ: তানজিনা সুলতানা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
দ্বিতীয় রানার আপ: আরাফাত হোসাইন, ড্যাফডিল ইন্টারন্যাশনাল, ইউনিভার্সিটি
৩. শিক্ষা ও ডিজিটাল শিখন পদ্ধতিকে উৎসাহিতকরণ
চ্যাম্পিয়ন: রাশিদ তাকি (সাকিব), শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
প্রথম রানার আপ: আইভি আক্তার, মাওলানা ভাষানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
দ্বিতীয় রানার আপ: অথৈ গাঙ্গুলি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
৪. তরুণদের চাকরির ব্যবস্থা ও নতুন কর্মক্ষেত্র তৈরি
চ্যাম্পিয়ন: ইমরান হোসাইন, শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি
প্রথম রানার আপ: হুমায়রা আনজুম, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি
দ্বিতীয় রানার আপ: সাকিব হোসাইন খান, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি
৫. প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা
চ্যাম্পিয়ন: হিমাদ্রী সরকার, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
প্রথম রানার আপ: সায়েম রাব্বী, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি
দ্বিতীয় রানার আপ: শাওন তালুকদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
৬. প্রবাসী শ্রমিকদের সুরক্ষা ও রেমিট্যান্সের ধারাবাহিকতা রক্ষা
চ্যাম্পিয়ন: সানজিদা আফরিন, ঢাকা স্কুল অফ ইকনমিক্স, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রথম রানার আপ: ফারিয়া আফরিন, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি
দ্বিতীয় রানার আপ: অভিষেক দে, খুলনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
৭. রফতানি খাতকে পুনরম্নজ্জীবীতকরণ
চ্যাম্পিয়ন: মো. আব্দুল্লাহ আল নোমান, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
প্রথম রানার আপ: নাজমুল হাসান মজুমদার, ফিচার রাইটার, কম্পিউটার জগৎ
দ্বিতীয় রানার আপ: সাদিয়া আফরিন মমি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
৮. কর্মক্ষেত্রে নারীর নিরাপত্তা ও ক্ষমতায়ন
চ্যাম্পিয়ন: নাসরাতুল ফেরদৌস, নোয়াখালি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
প্রথম রানার আপ: ফারহানা আক্তার, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাকা সিটি কলেজ)
দ্বিতীয় রানার আপ: ইসরাত সুলতানা নিশি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
৯. স্বাস্থ্যখাতকে শক্তিশালীকরণ
চ্যাম্পিয়ন: খন্দকার শারার ইকবাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রথম রানার আপ: লামিয়া মহসিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
দ্বিতীয় রানার আপ: শেখমাহের আনসারি মাহিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
১০. ক্ষুদ্র ও মাঝারিশিল্পে (এসএমই) সহায়তা
চ্যাম্পিয়ন: ইসরাত জাহান হলি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রথম রানার আপ: হুমায়রা আফিয়া মিম, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়
দ্বিতীয় রানার আপ: মো. শাহজাহান রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
এই প্রতিযোগিতায় পার্টনার ছিল যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়, এটুআই, বাংলাদেশ সরকার, ব্রিটিশ কাউন্সিল, বাংলাদেশ স্কাউটস, দি ডেইলি স্টার, ব্র্র্যাক আমরা নতুন নেটওয়ার্ক, লাইটক্যাসল, সমকাল, ইউটিভি লাইভ এবং চ্যানেল ২৪।
আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর রিজওয়ান দাউদ শামস বলেন, 'যে কোন দুর্দশা কাটিয়ে ওঠার প্রাণোচ্ছলতা কোন জাতির তরুণদেরই রয়েছে। করোনা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের উত্তরণের বিষয়ে তরুণদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরার জন্য ইয়ুথ অপরচুনিটিস আয়োজিত জাতীয় লেখা প্রতিযোগিতাটি এক অনন্য ও সময়োপযোগী উদ্যোগ। তরুণদের সম্ভাবনার উৎসুক প্রবক্তা হিসেবে আইপিডিসি এরকম উদ্যোগে টাইটেল স্পন্সর হতে পেরে গর্বিত, জাতির তরুণদের জন্য, তরুণদের সাথে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ভবিষ্যতেও কাজ করতে আগ্রহী।'
প্রতিযোগিতায় জমা হওয়া লেখাসমূহ মূল্যায়ন করেছেন ব্র্যাক, এটুআই, বাংলাদেশ কৃষিবিশ্ববিদ্যালয়, লাইট ক্যাসল পার্টনারস, মার্কেটইনসাইট, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, সাস্কাচেওয়ান বিশ্ববিদ্যালয়, ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়, আইপিডিসিফাইন্যান্স, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, ইয়ুথ অপরচুনিটিস, ঢাকা সেন্ট্রাল ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল ও বাংলাদেশ কিডনি ফাউন্ডেশনের বিশিষ্ট বিচারক বৃন্দ।
চূড়ান্ত পর্বে মূল্যায়ন করেছেন:
মিসটিনা জাবিন, ইনভেস্টমেন্টঅ্যাডভাইজর, স্টার্ট আপ বাংলাদেশ, আইসিটিমন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সরকার
রিজওয়ান দাউদ শামস, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর, আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেড
সোনিয়া বশির কবির, প্রতিষ্ঠাতা, এসবিকে টেক ভেঞ্চারস ও এসবিকে ফাউন্ডেশন
ডাক্তার আব্দুন নুর তুষার, চিকিৎসক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব
মানিক মাহমুদ, হেড অব সোশ্যাল ইনোভেশন ক্লাস্টার, এটুআই
মুস্তাফিচ রহমান খান, সিইও ও প্রতিষ্ঠাতা, আপস্কিল ও স্টার্টআপঢাকা; পার্টনার, আইডিএলসিভিসি ফান্ড ১
ফরহাদ জামিল, কান্ট্রি ডিরেক্টর, সিনজেনটা ফাউন্ডেশন
শরিফুল হাসান, হেড অব মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম, ব্র্যাক
ফারাহ চৌধুরী, ম্যানেজার বিওয়াইএলসি'স অফিস অব প্রফেশনাল ডেভেলপমন্টে
অর্পিতা শামসমিজান, সহকারী অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ইয়ুথ অপরচুনিটিসের সহপ্রতিষ্ঠাতা ওসামা বিন নুর বলেন 'দেশের বিভিন্ন প্রান্ত্ম থেকে ১২ শতাধিক প্রবন্ধ পেয়ে আমরা অভিভূত হয়েছিলাম। আমরা তরুণদের নিকট থেকে কিছু চমৎকার পরামর্শ ও সুপারিশ পেয়েছি। আশাকরি সেগুলো বাস্তবায়িত হতে দেখা যাবে।'
ইয়ুথ অপরচুনিটিসের আরেক সহপ্রতিষ্ঠাতা মাকসুদুল এএমমণ্ডল বলেন 'এই ইভেন্টটি সফল করতে সহযোগিতা করার জন্য আমরা আমাদের সকল পার্টনারদের নিকট কৃতজ্ঞ। আশা করি ভবিষ্যতে এ ধরনের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে পারবো, যেখানে তরুণরা দেশের উন্নয় নেতাদের চিন্তা-ভাবনা শেয়ার করার সুযোগ পাবে।' সংবাদ বিজ্ঞপ্তি