আজকাল
আজকালকার দিনগুলোতে একঘেয়েমি বি-শাল!
এই গিয়ে ধরুন—সাত-আটটা ইউফ্রেতিসের সমান।
রাত্রিযাপনেও অনীহা ধরেছে অকারণ।
যে গাছটায় মালতীলতা ধরতো ব্যাপক—ওতেও সুখের আকাল!
আগের মতো বিকেলবেলা বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ানো হয় কম।
কী লাভ তাতে? নেই তো পথে ফেরিঅলা কিংবা সোনামণিদের সমাগম।
নিয়মমাফিক চা বানিয়ে, সন্ধ্যায় বসি কবিতাসমগ্র নিয়ে।
আর ছাদে বসে নামাই ইয়বাক্সের অরণ্যে দিগন্ত-খোঁজা বিকাল।
কেমন একটা বিশ্রী সময় যাচ্ছে আজকাল।
‘বিশ্রী’ কারণ অভ্যাসেরই দাস মানুষ–বলে আমরা মানি।
কার কী গেলো, কে কারে কী ক’লো, কী হতে কী কী হলো
এসব নিয়েই বড্ড মাতে চা-বিস্কুটে ছানাছানি।
এখন আর সেসব কোথায় বলুন?
বর্তমানের এই ইউফ্রেতিসে যে লাগছে ভীষণ করুণ!
কতদিন আর ক্ষোভগুলো সব কবিতা পড়ে মোছা যায়?
স্বজনবিমুখ দিনগুলোতে ডুবি কী যে যন্ত্রণায়!
ক’দিন আগে সচ্ছল আষাঢ় দেখেছিলাম,
মিসেসের চোখ দুটো যখন স্মৃতিকাতর হয়েছিল।
এমন একটা সময়ে, যদি আসে অবসান ঘনায়ে—
অসমাপ্ত কর্মযজ্ঞের কী হবে একবার ভাবুন!
ফিরবো কবে সাধারণ যত জীবনযাত্রার আঁচলে কেউ কী তা জানি?
দিনগুলো গলায় আটকানো দলার মতো অস্বস্তিকর, একঘেয়ে বি-শাল।
আপনাদের কারো কী ঝরা শিউলির কথা পড়ে মনে?
বর্ষাকে বিদায় জানিয়ে স্বচ্ছ শরতের বার্তা যারা আনে।
স্নিগ্ধ শারদ আবহাওয়ার জন্য আবার হয়তো–
মিসেসের চোখ বা ছেলেমেয়ের হাসিমুখের খোঁজ করতে হবে।
কিন্তু আমি পুড়ছি সহকর্মীদের কথা ভেবে—
তাদের কী হচ্ছে বা সামনে কী হবে!
বর্ষা-শরৎ নিজ নিয়মে আবর্তিত হবে কিন্তু তাদের কী করে চলবে?
আর যারা কর্মহীন—কী করে কাটছে তাদের বা কাটবে?
এই যাঃ! আবার ডুবে যাচ্ছি যন্ত্রণায়!
বড্ড একঘেয়ে সময়—অস্বস্তিকর বি-শাল!
কবিতায় ক্ষোভ-অতুষ্টি মুছে মুছে,
ধুঁকে ধুঁকে কেটে যাচ্ছে আজকাল।
কবি: চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে শেষবর্ষে পড়ছেন। নিয়মিত কবিতা লিখছেন।