ভারতে করোনা ঠেকাতে একমাস ধরে চলছে লকডাউন। এতে যেমন কমেছে বায়ুদূষণ, সঙ্গে কমেছে পানি দূষণও। ফল ফিরছে হারিয়ে যাওয়া বিরল প্রজাতির প্রাণী। এছাড়াও ভিন্ন ধরনের পাখি দেখা যাচ্ছে লোকালয়ে। তেমনই প্রায় দিন দশক পরে গঙ্গায় দেখা মিলেছে বিরল প্রজাতির ডলফিনের।
লকডাউনে পৃথিবী যে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে বারে বারে তার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। দূষণ কমছে, জীবজন্তুরা নিজেদের মতো রাস্তায় বেরিয়ে আসছে, হরিদ্বারে গঙ্গার পানি পান করার মতো হয়ে যাচ্ছে। ঠিক সেই ভাবেই কলকাতায় এবার দেখা গেল গঙ্গা শুশুক বা সাউথ এশিয়ান রিভার ডলফিন। গত কয়েক দিনে বাবুঘাট, প্রেন্সিপ ঘাট-সহ বিভিন্ন ঘাটেই দেখা মিলেছে এদের। দেশটির উত্তরপ্রদেশের মেরুত নামক এলাকায়ও দেখা যায় এদের। ভারতীয় বন দপ্তরের কর্মকর্তা (আইএফএস) আকাশ দীপ এই তথ্য জানিয়েছেন।
কিন্তু কিভাবে কলকাতার গঙ্গায় বা হুগলী নদীতে ফিরল গঙ্গা শুশুক বা বিরল প্রজাতির ডলফিন? বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, শুশুক বা গাঙ্গেয় ডলফিনদের বিলুপ্তির অন্যতম প্রধান কারণ গঙ্গায় দূষণ। তরল ও কঠিন বর্জ্য তো বটেই, শব্দ দূষণের মাত্রাও এতটাই ভয়াবহ যে ডলফিনরা আর নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলতে পারে না। মাছের ঝাঁকের শব্দ শুনে এরা বুঝতে পারে ঠিক কোন জায়গায় রয়েছে তাদের শিকার। নিজেদের মধ্যে কথা বলার জন্যও শব্দতরঙ্গের একটা নির্দিষ্ট মাত্রা আছে ডলফিনদের। আবার গাঙ্গেয় ডলফিনদের বলা হয় ব্লাইন্ড ডলফিন। এরা মূল আলট্রাসনিক সাউন্ডের সাহায্যে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রেখে চলে। শব্দ এবং পানি দূষণ গত এক মাসে কার্যত নেই বললেই চলে। আর এর জেরেই তারা ফিরে এসেছে আপন জায়গায়।
এই ডলফিনের দৈর্ঘ্যে মিটার দেড়েক। স্ত্রী প্রজাতিরা পুরুষের চেয়ে আকারে বড় হয়। ওজন প্রায় ১৫০ কেজি। গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, মেঘনা, কর্নফুলি, ঘর্ঘরা নদীতে এদের বাস। কলকাতার ঘাটগুলোতে এক সময় এদের প্রচুর দেখা গেলও এখন এদের সংখ্যা হাতে গোনা। তাই ‘বিলুপ্তপ্রায়’ তকমাটিও জুটেছে এদের কপালে।
সূত্র: স্পুটনিক।