তবে এ রিপোর্ট লেখার মুহূর্তে উপজেলা শিক্ষা অফিসার নাজমুন নাহার টেলিফোনে বলেন, ফারুক বিন জামান গত ১০ সেপ্টেম্বর তারিখে সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন আর ১২ তারিখে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ সভাপতি নির্বাচনে তিনি অংশ গ্রহণ করেননি। তিনি আরও বলেন, খাদেরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি নির্বাচনের বিতর্কের সাথে প্রধান শিক্ষক ও নারায়ণপুর এলাকার ক্লাস্টার সেলিনা বেগম দায়ী।আমি শুধু সাক্ষর করেছি।
অনুসন্ধান করে জানা গেছে, ফারুক বিন জামান কে গত ৬ সেপ্টেম্বর তারিখে মতলব দক্ষিণ উপজেলার শ্রেষ্ঠ সভাপতি নির্বাচিত করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বাছাই কমিটির সভাপতি রেনু দাস ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও বাছাই কমিটির সদস্য সচিব নাজমুন নাহার।
এদিকে খাদেরগাঁও সহ মতলব দক্ষিণ উপজেলায় বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে তাকে কিভাবে সভাপতি নির্বাচন করা হয়েছিলো। এই অনিয়মের সাথে ফেঁসে যাবার ভয়ে পিছনের তারিখ দিয়ে পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করে উপজেলা শিক্ষা অফিসার নাজমুন নাহার। বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে উপজেলা শিক্ষা অফিসার নাজমুন নাহার, সহকারী শিক্ষা অফিসার ও খাদেরগাঁও ইউপির ক্লাস্টার সেলিনা বেগম এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রৌশনারা বেগম কোনো কাগজপত্র যাচাই-বাছাই না করে অনিয়মের মাধ্যমেই ফারুক বিন জামান কে বিদ্যালয়ের সভাপতি এবং গত ৬ সেপ্টেম্বর উপজেলার শ্রেষ্ঠ সভাপতি নির্বাচিত করেন।
উল্লেখ্য, সরকারি নীতিমালা ভঙ্গ করে মতলব দক্ষিণ উপজেলার খাদেরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচন ও উপজেলার শ্রেষ্ঠ সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার অনিয়ম ওঠেছিল। বিষয়টি নিয়ে ঐ বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সম্প্রতি পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর প্রভাব খাটিয়ে গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে জোরপূর্বক ফারুক বিন জামান খাদেরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি মনোনীত হন।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কমিটি গঠন বিষয়ে বর্তমান আইন অনুযায়ী , গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক জারীকৃত প্রজ্ঞাপনে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে যে, প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক সংশ্লিষ্ট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিকটবর্তী কোন সরকারী/বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক/শিক্ষিকার মধ্যে শিক্ষক প্রতিনিধি নেয়ার নিয়ম রয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে স্পষ্ট আরও উল্লেখ রয়েছে যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি পদে নির্বাচন করতে হলে প্রার্থীকে অবশ্যই অনার্স (স্নাতক) পাশ হতে হবে। একই সাথে প্রার্থীর সন্তানকেও ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী হতে হবে। এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির (এসএমসি) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার ক্ষেত্রে প্রাথমিক যোগ্যতা হিসেবে সভাপতি প্রার্থীর সন্তানকে অবশ্যই ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হতে হবে। এছাড়া বিদ্যোৎসাহী সদস্যদেরও সন্তান বিদ্যালয়ের ছাত্র/ছাত্রী হতে হবে এবং তাদেরও শিক্ষাগত যোগ্যতা নূন্যতম এসএসসি হতে হবে। কমিটির সভাপতিকে অবশ্যই স্নাতক ডিগ্রিধারী হতে হবে। এমন শর্ত যুক্ত করে প্রাইমারী স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনে নতুন নীতিমালা জারি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনে সু-স্পষ্ট বলা আছে কোন সরকারী প্রাথমিক বিদালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি দ্বিতীয় বারের পরে আর তৃতীয় বার হতে পারবে না।