রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:০০ পূর্বাহ্ন

শিশুশ্রম নির্মূলে সামাজিক সুরক্ষার আওতা বাড়াতে হবে

নিউজ ডেস্ক :: জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) শিশুদের অধিকার রক্ষা এবং ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম দূর করার জন্য ২০০২ সাল থেকে ‘বিশ্ব শিশুশ্রমবিরোধী দিবস’ পালন করে আসছে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতি বছর ১২ জুন এ দিবসটি পালন করা হয়। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘শিশুশ্রম বন্ধে সর্বজনীন সামাজিক সুরক্ষা’।

আইএলও এবং ইউনিসেফ কর্তৃক যৌথভাবে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২০ এর শুরুতে বিশ্বব্যাপী পাঁচ বছর বা তার বেশি বয়সী ১০ জন শিশুর মধ্যে একজন শিশু শিশুশ্রমে জড়িত ছিল− যার আনুমানিক সংখ্যা ১৬০ মিলিয়ন। এর মধ্যে ৬৩ মিলিয়ন কন্যাশিশু এবং ৯৭ মিলিয়ন ছেলেশিশু। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত দুই দশকে শিশুশ্রম কমানোর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সত্ত্বেও, সাম্প্রতিক তথ্য দেখায় যে শিশুশ্রম নিরসনের বৈশ্বিক অগ্রগতি ২০১৬ সাল থেকে থমকে গেছে।

যারা শিশুদেরকে জোরপূর্বক শিশুশ্রমে বাধ্য করে এবং তাদের শ্রম শোষণ করে তাদেরকেও সচেতন করা জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই সাথে ক্রমবর্মান দারিদ্র্য ও আয় বৈষম্য কমিয়ে এনে সকল শিশুর মানসম্মত ও জীবনমুখী শিক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি তারাও যে ভবিষ্যতে একটি সুন্দর ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে তা নিয়ে ভাবার সময় এসেছে।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, কোভিড-১৯ মহামারি বিশ্বব্যাপী আরও লাখ লাখ শিশুকে শিশুশ্রমের ঝুঁকিতে ফেলেছে। এটি ধারণা করা হচ্ছে যে, উপযুক্ত নিরসন কৌশল ছাড়া, উচ্চ দারিদ্র্য এবং ক্রমবর্ধমান অনিশ্চয়তা ও ভঙ্গুরতার কারণে ২০২২ সালের শেষ নাগাদ নতুন করে ৮.৯ মিলিয়ন শিশু শিশুশ্রমে নিয়োজিত হতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে আইএলও পরামর্শ দিয়েছে যে, শিশুশ্রম হ্রাস এবং নির্মূলের জন্য শক্তিশালী সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা প্রয়োজন। পারিবারিক দারিদ্র্যের ঝুঁকি এবং ভঙ্গুরতা হ্রাস করে, জীবিকায়ন প্রকল্প বৃদ্ধি করে এবং শিশুদের স্কুলে ভর্তির সহায়তা করে, শিশুশ্রম নির্মূল ও প্রতিরোধের লড়াইয়ে সরকারি সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা অপরিহার্য।

আইএলও বলছে ২০১০ সাল থেকে পরিচালিত বেশ কয়েকটি গবেষণার ফলাফল দেখায় যে সামাজিক সুরক্ষা-পরিবারগুলোকে অর্থনৈতিক বা স্বাস্থ্যগত ধাক্কা মোকাবিলায় সহায়তা করে, শিশুশ্রম হ্রাস করে এবং স্কুলে পড়াশোনার সুবিধা দেয়৷

সংস্থাটি আরও বলছে, সব শিশু যাতে সামাজিক সুরক্ষা উপভোগ করে তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে খুব কম অগ্রগতি হয়েছে। বিশ্বব্যাপী ০ থেকে ৪ বছর বয়সী ৭৩ দশমিক ৬ শতাংশ বা প্রায় ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন শিশু কোনো সামাজিক সুরক্ষা সুবিধা পায় না। এই বৃহৎ সুরক্ষা ফাঁক বা ব্যবধান দ্রুত বন্ধ করা আবশ্যক। আইএলও মহাপরিচালক গাই রাইডার বলেছেন, ‘সর্বজনীন সামাজিক সুরক্ষায় বিনিয়োগ করার অনেক কারণ আছে কিন্তু শিশুদের অধিকার এবং সুস্থতার ওপর এর ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে শিশুশ্রম নির্মূল করা সবচেয়ে বাধ্যতামূলক হতে হবে’।

আইএলও’র গবেষণায় বলা হয়েছে, বিভিন্ন দেশের সরকারের বিভিন্ন নীতি রয়েছে, যা তারা সামাজিক সুরক্ষার ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারে। যদি নীতিনির্ধারকরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ না করেন, তাহলে কোভিড-১৯ মহামারি, চলমান সংঘাত, ক্রমবর্ধমান দারিদ্র্য এবং জলবায়ু পরিবর্তন শিশুশ্রমের প্রবণতাকে বাড়িয়ে তুলবে।

শিশুশ্রমের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাকে উল্টে দিতে আইএলও ও ইউনিসেফ বিশ্বের সরকারপ্রধানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। যেমন- সর্বজনীন শিশু সুবিধাসহ সবার জন্য পর্যাপ্ত সামাজিক সুরক্ষার ব্যবস্থা করা। মানসম্মত শিক্ষার পেছনে ব্যয় বাড়ানো এবং কোভিড-১৯-এর আগে থেকেই স্কুলের বাইরে থাকা শিশুদেরসহ সব শিশুকে স্কুলে ফিরিয়ে আনা।

পরিবারের প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য যথোপযুক্ত কাজের ব্যবস্থা করা, যাতে পরিবারগুলোকে পারিবারিক উপার্জন বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে শিশুদের অবলম্বন করতে না হয়। শিশুশ্রমকে প্রভাবিত করে এমন ক্ষতিকারক লৈঙ্গিক রীতিনীতি এবং বৈষম্যের অবসান ঘটানো। শিশু সুরক্ষা ব্যবস্থা, কৃষিজ উন্নয়ন, পল্লী জনসেবা, অবকাঠামো এবং জীবন-জীবিকার পেছনে বিনিয়োগ করা।

আমাদের দেশে শিশুশ্রমের দৃশ্যকল্পের দিকে তাকালে তা কম উদ্বেগজনক নয়। বিবিএস-এর ২০১৩ সালের এক জরিপ অনুসারে, বাংলাদেশে প্রায় ১ দশমিক ৭ মিলিয়ন শিশু ১৬টি সেক্টরে কর্মরত। আইএলওর তথ্য অনুযায়ী, শুধুমাত্র ঢাকা শহরেই দেড় লাখের বেশি শিশু বিপজ্জনক কর্মকাণ্ডে জড়িত। কিন্তু বাস্তবতা যে সম্পূর্ণ ভিন্ন তা বোঝার জন্য পরিসংখ্যানের প্রয়োজন নেই। আমাদের দেশে শিশুরা সাধারণত কৃষি, কলকারখানা, গণপরিবহন, আবাসন, খাবারের দোকান, বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ইটভাটা এবং নির্মাণকাজে কাজ করে। কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন শিশুশ্রম দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। শিশুশ্রম বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ দারিদ্র্য ও বৈষম্য। এভাবে দারিদ্র্য ও বৈষম্য বাড়লে আগামী দিনে শিশুশ্রম বৃদ্ধির আশঙ্কা অমূলক নয়।

কোভিড-১৯ মহামারিকালে অনেক শিশু স্কুল থেকে ঝরে পড়েছে এবং কাজে যুক্ত হয়েছে। এভাবে যেসব শিশু নিজেদের শিশুশ্রমে নিয়োজিত করতে বাধ্য হয়েছে তারা শুধু শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়নি, সামাজিক ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা থেকেও বঞ্চিত হয়েছে। কারণ, স্কুলগুলো সামাজিক সুরক্ষা, পুষ্টি, স্বাস্থ্যের পাশাপাশি শিশু এবং তরুণ প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য মনোসামাজিক সহায়তার একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। তাই শিশুশ্রমে নিয়োজিত শিশুরা শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির ঝুঁকিতে থাকে। শিশুশ্রম শিশুদের শিক্ষা ব্যাহত করে, তাদের অধিকার ও ভবিষ্যৎ সুযোগ সীমিত করে এবং তাদের দারিদ্র্য এবং শিশুশ্রমের আন্তঃপ্রজন্মীয় দুষ্টচক্রের দিকে ঠেলে দেয়।

জাতিসংঘ ২০২৫ সালের মধ্যে শিশুশ্রম নির্মূল করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এছাড়াও এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা ৮ দশমিক ৭ জোরপূর্বক শ্রম নির্মূল, আধুনিক দাসপ্রথা ও মানব পাচারের অবসান এবং নিকৃষ্টতম শিশুশ্রমের নিষেধাজ্ঞা ও নির্মূল করার জন্য অবিলম্বে এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা বলেছে। এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা ১৬ দশমিক ২ শিশু শ্রমিকদের নিয়োগ ও ব্যবহার, শোষণ, পাচার এবং সকল প্রকার সহিংসতা ও নির্যাতনের অবসান ঘটানো এবং সকল প্রকার শিশুশ্রমের অবসান ঘটানোর কথা উল্লেখ করেছে।

বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘ কর্তৃক নির্ধারিত এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাই শিশুশ্রম নিরসনে সরকার বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অধীনে বেশ কিছু উদ্যোগ, প্রকল্প ও কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এছাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক এনজিওগুলোও শিশুশ্রম নিরসনে বিভিন্ন প্রকল্প ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা কঠিন হবে কারণ শিশুশ্রমের মাত্রা কমছে না বরং কভিড-১৯ ও চলমান যুদ্ধের কারণে তা আবার বৃদ্ধির সূত্রপাত করেছে। সুতরাং এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে মহামারী চলাকালীন ক্রমবর্ধমান শিশুশ্রমের জন্য আরও অনেক উদ্যোগের প্রয়োজন রয়েছে।

আইএলও এবং ইউনিসেফ শিশু শ্রমের ক্রমবর্ধমান প্রবণতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। এ জন্য সর্বজনীন শিশু যত্নসহ সবার জন্য পর্যাপ্ত সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মানসম্পন্ন শিক্ষায় ব্যয় বৃদ্ধি করা এবং কভিড-১৯ এর আগে যারা স্কুলের বাইরে ছিল তাদের সহ সকল শিশুকে স্কুলে ফিরিয়ে আনা; প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য উপযুক্ত কাজের ব্যবস্থা করা যাতে পরিবারের আয় বাড়াতে সাহায্য করার জন্য পরিবারগুলিকে শিশুদের আশ্রয় নিতে না হয়। শিশুশ্রমকে প্রভাবিত করে এমন ক্ষতিকর চর্চা এবং অসমতা দূর করা। শিশু সুরক্ষা ব্যবস্থা, কৃষি উন্নয়ন, গ্রামীণ জনসেবা, অবকাঠামো এবং জীবিকায়ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করা। জাতীয় বাজেটে শিশুদের সুরক্ষার জন্য পর্যাপ্ত
বরাদ্দ রাখা।

আইএলও এবং ইউনিসেফ বিশ্বব্যাপী শিশুশ্রম প্রতিরোধ ও নির্মূলের জন্য সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য প্রতিবেদনে বেশ কিছু সুপারিশ করেছে যেমন, শিশুদের জন্য সামাজিক সুরক্ষার আওতার ব্যবধান কমিয়ে আনা এর অর্থ শিশুর সুবিধাগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া, সেইসাথে অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরতদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার আওতায় আনা; সমন্বিত সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করা; শিশুশ্রম হ্রাস করা আরো সহজ হবে যদি প্রত্যেক দেশে একটি সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা থাকে যা শিশু এবং পারিবারিক সুবিধা, মাতৃত্ব এবং বেকারত্বের সুবিধা থেকে শুরু করে বার্ধক্য পেনশনের পাশাপাশি স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য পর্যাপ্ত সুবিধা প্রদান করে; নিশ্চিত করতে হবে যে, যে সকল সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং শিশু-শ্রমিক সংবেদনশীল কারণ এটি শিশু শ্রম হ্রাস করতে সর্বাধিক সাহায্য করবে।

শিশু এবং পারিবারিক সুবিধাপ্রাপ্তি কর্মসূচীগুলি বাস্তবায়ন করা যা শিশুদের সহ সমস্ত পরিবারের কাছে পৌঁছায়, বিশেষ করে যারা সবচেয়ে বেশি ঝূঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে রয়েছে; নিবন্ধন পদ্ধতি সহজ করে এবং বিভিন্ন সুবিধা প্রদানের ব্যবস্থা প্রদানের মাধ্যমে দরিদ্রদের জন্য তাদের সামাজিক সুরক্ষা সুবিধাগুলি পেতে সহায়তা করা; শিশুদের জন্য সর্বজনীন, মানসম্পন্ন, মৌলিক শিক্ষা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক পরিষেবাগুলিতে বর্ধিত বিনিয়োগের সাথে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির পরিপূরক কর্মসূচি গ্রহণ করা;

শিশুশ্রমের অবসান এবং কর্মের জন্য ঐক্যমত্য জোরদার করার জন্য সর্বজনীন সামাজিক সুরক্ষা প্রতিষ্ঠার জন্য ইতিমধ্যে বিদ্যমান শক্তিশালী রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি গড়ে তোলা; টেকসই উন্নয়ন এজেন্ডা এবং ২০২১ সালে আন্তর্জাতিক শ্রম সম্মেলনে গৃহীত সহমত, দৃঢ় ঐকমত্য, সেইসাথে ডারবান শিশু শ্রমিক সম্মেলনের ফলাফল, আন্তর্জাতিক উদ্যোগগুলিকে সমন্বয় করতে সাহায্য করতে পারে; উন্নয়নের চালক হিসাবে সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থায় বিনিয়োগের জন্য প্রচারনা চালানো। প্রায় সব দেশেই শিশুদের জন্য তাদের সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য ক্রমান্বয়ে বিনিয়োগের জন্য দেশীয় সম্পদ পুঞ্জীভূত করা।

ইউনিসেফ এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বাংলাদেশে সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা এখনো পর্যন্ত অতিমাত্রায় বিভক্ত। সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থায় রয়েছে ১৩০টি কর্মসূচি যেগুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রে একটির সাথে অপরটি সংযুক্ত নয়। এসব কর্মসূচির লক্ষ্যসমূহ একটির সাথে অন্যটি মিলে যায়, এতে বাজেট কম এবং এদের আওতাও অপ্রতুল। যেকোনো দেশের জন্য যেকোনো পরিপ্রেক্ষিত থেকেই শিশু এবং সামাজিক সুরক্ষায় বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী মানবাধিকার ও অর্থনীতিকে রক্ষা করে।

সুতরাং, চলমান মহামারি ও যুদ্ধের কারণে এবং দারিদ্র্যের কষাঘাতে শৈশব বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহের জন্য সংগ্রাম করছে এমন শিশুদের কথা ভাবার সময় এসেছে। সরকারিভাবে এইসব শিশু ও তাদের পরিবারবর্কে সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থায় নিয়ে আসা বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমাজের বিত্তবানদেরও এক্ষেত্রে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। শিশুশ্রম নির্মূলে সামাজিক উদ্যোগ ও সচেতনতা বৃদ্ধির আন্দোলন আরো জোরদার করা প্রয়োজন।

যারা শিশুদেরকে জোরপূর্বক শিশুশ্রমে বাধ্য করে এবং তাদের শ্রম শোষণ করে তাদেরকেও সচেতন করা জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই সাথে ক্রমবর্মান দারিদ্র্য ও আয় বৈষম্য কমিয়ে এনে সকল শিশুর মানসম্মত ও জীবনমুখী শিক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি তারাও যে ভবিষ্যতে একটি সুন্দর ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে তা নিয়ে ভাবার সময় এসেছে।

লেখক: গবেষক ও উন্নয়নকর্মী।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: