বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:০৬ অপরাহ্ন

শিরোনাম
হাতিয়ার উন্নয়নে সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ কর্মসূচিকে কাজে লাগানো হবে – মোহাম্মদ আলী এমপি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ৩৯ বছর পর জমি ফিরে পেলেন যদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবার শিবালয়ে ১৫তম  মাই টিভির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত  ক্রীড়াবিদরা দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনছে- ধর্মমন্ত্রী উজিরপুরে সৎসঙ্গ ফাউন্ডেশনের সেমিনার অনুষ্ঠিত শিবালয়ে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিবাড়ি খেলা অনুষ্ঠিত লঞ্চের দড়ি ছিঁড়ে ৫ জনের মৃত্যু : আসামিদের তিন দিনের রিমান্ড ঈদের দিনে সদরঘাটে দুর্ঘটনায় ঝরল ৫ প্রাণ সৌদির সাথে মিল রেখে নোয়াখালীর ৪ গ্রামে ঈদ উদযাপন নোয়াখালীতে দুর্বৃত্তরা ঘর আগুনে পুড়ে দিয়েছে, ১০ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি

ঘুরেফিরে আলোচনায় নির্বাচনকালীন সরকার

নিউজ ডেস্ক :: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপে উঠে এসেছে তিন শতাধিক প্রস্তাব। লিখিত ও মৌখিক বক্তব্যে ঘুরেফিরে বারবার আলোচনায় ছিল নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা কী হবে, তা নিয়ে। উঠে আসে বিগত দুটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রাজনৈতিক দলগুলোর অভিজ্ঞতাও। আওয়ামী লীগসহ ১৪টি রাজনৈতিক দল সরাসরি নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে তাদের অবস্থান জানিয়েছে।

এর মধ্যে চারটি রাজনৈতিক দল বর্তমান সরকার রেখেই নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছে। আওয়ামী লীগ ছাড়া বাকি তিনটিই দল ওই সরকারকে দৈনন্দিন কাজে সীমাবদ্ধ রাখার প্রস্তাব করেছে। বাকি ১০টি রাজনৈতিক দল বর্তমান সরকার রেখে নির্বাচন আয়োজনের বিপক্ষে মত দিয়েছে।

বিএনপিসহ ৯টি রাজনৈতিক দল সংলাপে অংশ নেয়নি, যাদের বেশির ভাগই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছে। এছাড়া নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত করতে ৯টি রাজনৈতিক দল তফশিল ঘোষণার পর সংসদ ভেঙে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তাব বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

আওয়ামী লীগের সঙ্গে বসার মধ্য দিয়ে রোববার কার্যত এ সংলাপ শেষ হয়েছে। এতে নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ২৮টি অংশ নিয়েছে। বিএনপিসহ ৯টি দল সংলাপ বর্জন করেছে। বাকি দুটি দল জাতীয় পার্টি-জেপি ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি সংলাপের জন্য ভিন্ন সময় চেয়েছে।

যদিও এসব দাবি সম্পর্কে বিভিন্ন সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল জানিয়েছেন, এসব প্রস্তাব বাস্তবায়নের এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের নেই। বিষয়টি সাংবিধানিক ও রাজনৈতিকভাবে সমাধান করা দরকার।

এসব বিষয় সমাধানে রাজনৈতিক দলগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। বিশ্লেষণে আরও দেখা যায়, সংলাপে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল আগামী নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের বিপক্ষে মত দিয়েছে।

জাতীয় পার্টিসহ ১৫টি রাজনৈতিক দল এ মেশিনে ভোটগ্রহণের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। অপরদিকে আওয়ামী লীগসহ ১১টি রাজনৈতিক দল (ইভিএম) ব্যবহারের পক্ষে মত দিয়েছে।

পক্ষে মত দেওয়া কয়েকটি দল ইভিএমে পেপার অডিট ট্রেইল যুক্তের শর্ত জুড়ে দিয়েছে। এছাড়া সবচেয়ে বেশি আলোচনায় ছিল নির্বাচন কমিশনের আস্থা অর্জন ও ক্ষমতায়নের বিষয়টি। নির্বাচনের সময় স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, জনপ্রশাসনসহ কয়েকটি মন্ত্রণালয় ইসির অধীনে ন্যস্তের কথা বলেছে আওয়ামী লীগসহ ১৭টি রাজনৈতিক দল। জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের বিরোধিতা করেছে অন্তত ১০টি দল।

আটটি রাজনৈতিক দল ইসির নিজস্ব কর্মকর্তা ও দুটি দল জেলা জজদের রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের দাবি জানিয়েছে। জাতীয় পার্টিসহ পাঁচটি দল একাধিক দিনে ভোটগ্রহণ এবং ছয়টি দল ভোটের আনুপাতিক হারে প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা প্রবর্তনের সুপারিশ করেছে।

অন্তত ১২টি রাজনৈতিক দল ইসির তত্ত্বাবধানে নির্বাচনি প্রচারের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছে। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনী মোতায়েনের সুপারিশও করেছে কয়েকটি দল।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপের শেষ দিনে রোববার বিকালে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বসে নির্বাচন কমিশন। ১১ দিনের এ সংলাপে উঠে আসা রাজনৈতিক দলগুলোর মোটা দাগের সুপারিশ নিজ থেকেই সরকারি দল আওয়ামী লীগের সামনে তুলে ধরেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল।

তিনি বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে যে সংলাপ করে এসেছি সেখানে কিছু বিষয় উঠে এসেছে। যেহেতু আপনারা সরকারে আছেন, কাজেই সেটা আপনাদের দৃষ্টিতে আনা উচিত।’ তিনি বলেন, ‘অনেক পার্টি মনে করছে একদিনে নির্বাচন করা সমীচীন হবে না। এটা ভারতের মতো একাধিক দিনে হওয়া দরকার। কারণ আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অপ্রতুল।’ সিইসি বলেন, ‘অনেকে সেনাবাহিনীকে নিয়োগ করতে বলেছেন।

সেনাবাহিনীর প্রতি আমাদের দেশের জনমানুষের অনেক বেশি আস্থা আছে বলে তারা মনে করেছেন। এটা বলছি আপনাদের নলেজে আনার জন্য। আমরা এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। সব সংলাপ পর্যালোচনা করে লিখিতভাবে সিদ্ধান্ত জানাব।’

নির্বাচনকালীন সরকার : নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টি ইসির এখতিয়ারভুক্ত নয়। তবুও ১৪টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনের বিষয়ে তাদের মতামত জানিয়েছে। খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও গণফোরাম-এই পাঁচটি দল নির্বাচনের সময়ে নিরপেক্ষ বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তনের দাবি জানিয়েছে। এজন্য ইসিকে সরকারের কাছে সংবিধান সংশোধনের সুপারিশ করতে অনুরোধ জানিয়েছে। এছাড়া চারটি দল নিবন্ধিত বা সংসদ প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোকে নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের প্রস্তাব করেছে। দলগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি।

তবে আওয়ামী লীগসহ চারটি দল বিদ্যমান সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনের কথা বলেছে। রোববার সরকারি দল আওয়ামী লীগ বলেছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার অতীত। এটি আর ফিরবে না।

তবে নির্বাচনের সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন এবং অত্যাবশ্যকীয় সব সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানকে ইসির অধীনে ন্যস্ত থাকার প্রস্তাব করেছে। ইসলামী ঐক্যজোট (আইওজে), বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল) ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি বিদ্যমান সরকারের থাকাবস্থায় নির্বাচন দাবি করেছে। সরকার যাতে নির্বাচনের ওপর প্রভাব ঘটাতে না পারে, সেজন্য দৈনন্দিন কাজ করবে এবং উন্নয়নমূলক কাজ করতে পারবে না। মন্ত্রী ও সংসদ-সদস্যরা প্রটোকল পাবেন না।

যদিও সংলাপে এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার গণফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে আপনাদের (রাজনৈতিক দলের) মেসেজগুলো সরকারের কাছে পৌঁছে দেব। এটা সরকারই করতে পারবে। রাজনৈতিক দলের নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, এটা নিয়ে রাজনৈতিক সংলাপের প্রয়োজন। আপনারা নিজেদের মধ্যে আলোচনার দরকার আছে। সরকার সমীপেও সে প্রস্তাব দেবেন। আমি বিশ্বাস করি, নির্বাচনের স্বার্থে সংবেদনশীল যে কোনো উপযুক্ত প্রস্তাব গ্রহণ করার মানসিকতা অবশ্যই যে কোনো দায়িত্বশীল সরকারের থাকবে।

ইভিএমের বিপক্ষে বেশিরভাগ দল : নির্বাচন কমিশন ইভিএমের পক্ষে অবস্থান করলেও বেশিরভাগ দলের অবস্থান বিপক্ষে। সংলাপে অংশ নেওয়া ২৮টি দলের মধ্যে ১৫টি বিপক্ষে তাদের অবস্থানের কথা জানিয়েছে।

সর্বশেষ রোববার সংলাপে জাতীয় পার্টি ইভিএমের ঘোর বিরোধিতা করে। এমনকি এ মেশিন ব্যবহার করলে আসন্ন গাইবান্ধা-৫ আসনে উপনির্বাচনে দলটি অংশ নেবে না বলে জানিয়েছে। অপরদিকে আওয়ামী লীগসহ ১১টি রাজনৈতিক দল ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে মত দিয়েছে।

তাদের মধ্যে কয়েকটি দল শর্তসাপেক্ষে এ মত দেন। এ মেশিন ব্যবহারের পক্ষে মত দিয়ে এনডিএম বলেছে, এটি ব্যবহার করতে হলে পেপার অডিট ট্রেইল সংযুক্তি করতে হবে। শঙ্কা কাটলে ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে মত দেয় ইসলামী ঐক্যজোট (আইওজে)।

তবে ইভিএম পদ্ধতি চালু করা এখন সময়ের দাবি বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল)। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ ইভিএমের পক্ষে মত দিয়েছে। এক্ষেত্রে দলটি ইভিএমের পাশাপাশি ব্যালট পেপারেও ভোট নেওয়ার প্রস্তাব করেছে।

যান্ত্রিক ত্রুটি ও জটিলতা দূর করা ও ভোটারদের প্রশিক্ষণ দিয়ে ইভিএম ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ। গণতন্ত্রী পার্টি ইভিএমের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এ পক্ষে রয়েছে বিকল্পধারা বাংলাদেশ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি ও বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন।

অপরদিকে ইভিএমের বিপক্ষে মত দিয়েছে জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, জাকের পার্টি, গণফোরাম, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ এবং বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি।

ইভিএম প্রসঙ্গটি রোববার আওয়ামী লীগের সংলাপে তুলে ধরেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, ‘আরেকটি বিষয়ে সংকট থেকে যাবে সেটা হলো ইভিএম। ইভিএম নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে বেশকিছু সমর্থন পেয়েছি।

আবার অধিকাংশ দল ইভিএম বিশ্বাস করছে না। এর ভেতরে কী যেন একটা আছে। আমরা ইভিএম ব্যবহার করেছি। আমরা এটাকে ডিসকারেজ করছি না। আমরা এখন পর্যন্ত যে ইভিএম ব্যবহার করেছি তাতে ভোটার ৭১% পর্যন্ত টার্নআউট হয়েছে।

কিন্তু অনেককে আমরা আস্থায় আনতে পারছি না। কথাও বলেছি কিন্তু তারা বলেছে ‘না’ এখানে একটা…। আপনাদের এ বিষয়ে সহযোগিতা চাইব যে, ইভিএম নিয়ে একটা সংকট থাকবে। এটার বিষয়ে আমাদের একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমরাই নেব সিদ্ধান্ত। কিন্তু আপনাদের জানিয়ে দিচ্ছি-এর ওপর পুরোপুরি ঐকমত্য নেই।’

ইসির হাতে প্রশাসন রাখার মত ১৬টি দলের : আওয়ামী লীগসহ ১৬টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনের সময়ে ইসির হাতে স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, প্রতিরক্ষাসহ কয়েকটি মন্ত্রণালয় ন্যস্তের প্রস্তাব করেছে।

সর্বশেষ রোববার সংলাপে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নির্বাচনের সময়ে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ আবশ্যকীয় সব সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান ইসির তত্ত্বাবধানে ন্যস্ত করার প্রস্তাব করেছে।

প্রথমদিনের সংলাপেই এনডিএম তাদের সুপারিশে সিইসিকে সুপার প্রাইম মিনিস্টারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার প্রস্তাব করে। নির্বাচনের সময়ে জনপ্রশাসনকে ইসির নিয়ন্ত্রণে নেওয়া এবং রাজনৈতিক দলের দাবির প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রশাসনে রদবদল আনার সুপারিশ করে। আর বাংলাদেশ কংগ্রেস নির্বাচনের সময়ে স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ইসির তত্ত্বাবধানে পরিচালনার প্রস্তাব করে।

দ্বিতীয় দিন থেকে বেশিরভাগ সংলাপেই নির্বাচনকালীন কয়েকটি মন্ত্রণালয় ইসির হাতে রাখার প্রস্তাব আসতে থাকে। এমনটি আওয়ামী লীগের শরিক জোটের কয়েকটি দলও এ ধরনের প্রস্তাব দেয়।

সংলাপে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি নির্বাচনকালীন স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে ন্যস্তের প্রস্তাব করে। ভোটের আগের তিন মাস ও পরের তিন মাস কর্মকর্তাদের বদলি, শাস্তি, পদোন্নতি বিষয়ে ইসি কর্তৃপক্ষ হিসাবে কাজ করবে বলেও তাদের প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট নির্বাচনের সময়ে স্থানীয় সরকার, জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা ও অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, অর্থ, তথ্য ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ইসির প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণে পরিচালনার প্রস্তাব করেছে। একইভাবে খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল), বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগ প্রায় একই ধরনের প্রস্তাব করেছে। নির্বাচনকালে নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী নির্বাহী বিভাগকে ন্যস্ত করার প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ।

একই সঙ্গে নির্বাহী বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্বাচনি আইন লঙ্ঘন ও অসদাচরণের দায়ে শাস্তি দিতে ইসিকে আহ্বান জানানো হয়। এছাড়া ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম প্রায় একই ধরনের প্রস্তাব করেছে।

সংসদ ভেঙে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি : সংলাপে নয়টি রাজনৈতিক দল সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাব করেছে। তাদের যুক্তি, মন্ত্রী ও এমপিরা পদে থেকে নির্বাচন করলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হবে না। দলগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, বাংলাদেশ ন্যাপ ও গণফোরাম।

ইসির নিজস্ব কর্মকর্তা রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োগ : সংলাপে দশটি রাজনৈতিক দল প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্বাচনে রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ না দেওয়ার প্রস্তাব করেছে। তাদের মধ্যে আটটি রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশনের জনবল থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের কথা বলেছে। দলগুলো হচ্ছে-জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি)। এছাড়া জাতীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগ জেলা জজদের রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের প্রস্তাব করেছে।

নির্বাচন কমিশনের ব্যবস্থাপনায় প্রচার : নির্বাচনে ইসির তত্ত্বাবধানে প্রচারণা ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছে ১১টি রাজনৈতিক দল। সেগুলো হচ্ছে-বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ কংগ্রেস, এনডিএম, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল), গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ ও গণফোরাম।

একাধিক দিনে ভোট : পাঁচটি দল একাধিক দিনে ভোটগ্রহণের প্রস্তাব করেছে। দলগুলো হচ্ছে-জাতীয় পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি ও ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ। আর জাতীয় পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল), বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ও বাংলাদেশ ন্যাপ ভোটের আনুপাতিক হারে আসন বণ্টনে আইন সংস্কারের প্রস্তাব করেছে।

সংলাপে অংশ নেয়নি যারা : যে নয়টি দল সংলাপে অংশ নেয়নি, সেগুলো হচ্ছে-বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল-বিএনপি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: