শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:২৪ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে  প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হবে- সুবর্ণচর উপজেলা আ.লীগ হাতিয়ার উন্নয়নে সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ কর্মসূচিকে কাজে লাগানো হবে – মোহাম্মদ আলী এমপি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ৩৯ বছর পর জমি ফিরে পেলেন যদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবার শিবালয়ে ১৫তম  মাই টিভির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত  ক্রীড়াবিদরা দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনছে- ধর্মমন্ত্রী উজিরপুরে সৎসঙ্গ ফাউন্ডেশনের সেমিনার অনুষ্ঠিত শিবালয়ে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিবাড়ি খেলা অনুষ্ঠিত লঞ্চের দড়ি ছিঁড়ে ৫ জনের মৃত্যু : আসামিদের তিন দিনের রিমান্ড ঈদের দিনে সদরঘাটে দুর্ঘটনায় ঝরল ৫ প্রাণ সৌদির সাথে মিল রেখে নোয়াখালীর ৪ গ্রামে ঈদ উদযাপন

ঠাকুরগাঁওয়ে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের নেওয়া হচ্ছে পরীক্ষা

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড১৯ ) ঠেকাতে ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে সরকার চলতি বছরের ১৭ই মার্চ থেকে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা করেছেন।

সরকারি আদেশ অমান্য ও স্থানীয় প্রশাসন বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া গিন্নি দেবী আগরওয়াল মহিলা কলেজে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জোর করে ডেকে এনে নেওয়া হচ্ছে পরীক্ষা ।

সরেজমিনে দেখা যায়, গত বুধবার (১২ আগষ্ট ২০) সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে এইচএসসি শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য কলেজ প্রাঙ্গণে ভীড় জমাতে থাকে। শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলাফেরা করছে। অনেকে শিক্ষার্থী মুখে মাস্ক ব্যবহার করছে না। শরীর ঘেঁষে চলাফেরা করছে। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে গল্প করছে, আড্ডা দিচ্ছে।

কলেজ সূত্রে জানা যায়, ২০২০ শিক্ষাবর্ষের অধ্যয়নরত এইচএসসি শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির তালিকা প্রস্তুত করার জন্য মেধা যাচাইয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়। তাই পরীক্ষার জন্য তারিখ নির্ধারণ করে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরিক্ষার সময় তারিখ জানানো হয় এবং মেধা যাচাই পরিক্ষার জন্য মানবিক শাখার শিক্ষার্থীরা ১০ আগস্ট, ব্যবসা শাখা শিক্ষার্থীরা ১১ মার্চ ও বিজ্ঞান শাখার শিক্ষার্থীরা ১২ আগস্ট কলেজ ক্যাম্পাসে উপস্থিত হয়ে পরীক্ষায় অংশ নেয়।

শিক্ষার্থীরা জানান, সরকার যেখানে সারাদেশে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করোনার জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে। সেখানে কলেজ কর্তৃপক্ষের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে কলেজে এসে প্রবেশপত্র নেওয়ার জন্য কলেজে আসতে হচ্ছে।

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রবেশপত্র না নিলে বা এই পরিক্ষায় অংশগ্রহন না করলে পরে ঝামেলা করতে পারে তাই করোনাকে সাথে নিয়ে প্রবেশপত্র নিতে এসেছি। আর পরিক্ষার ফি হিসেবে বিজ্ঞান শাখার জন্য ৭শ, মানবিক ও বানিজ্য শাখার জন্য ৫শ টাকা নেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করে শিক্ষার্থীরা।

নাম না প্রকাশের অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, করোনা ঠেকাতে সরকার দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে। যাতে শিক্ষার্থীরা করোনায় আক্রান্ত না হয়। কিন্তু স্যারেরা আমাদেরকে মোবাইল ফোনে জোর করে ডেকে কলেজে আসতে বাধ্য করেছে। যারা কলেজে এসে পরিক্ষায় অংশ নিবেনা পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে এমন হুশিয়ারি দেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।

সেই শিক্ষার্থী আরও বলেন, পরিক্ষার ফি হিসাবে কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগের জন্য ৭শ ও মানবিক ও বানিজ্য বিভাগের জন্য ৫শ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। যা এই করোনার সময় আমাদের পরিবারের পক্ষে দেওয়া সম্ভব না।

বিজ্ঞান বিভাগের কয়েক জন শিক্ষার্থী বলেন, উপবৃত্তির তালিকা তৈরী করার জন্য এই পরিক্ষা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু পরিক্ষার ফি হিসাবে বিজ্ঞান শাখার প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৭শ টাকা নেওয়া হয়েছে। আর পরিক্ষা না দিলে পরে আমাদের সাথে ঝামেলা করবে এই ভয়ে আমাদের পরিবার ধান কাটার উপর আগাম টাকা ও পাড়া-প্রতিবেশিদের কাছে থেকে সুদের উপর টাকা নিয়ে এসে আমাদের পরিক্ষার ফি দিতে হয়েছে।।

জেলা সিভিল সার্জন সুত্রে জানা যায়, এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ, দিনাজপুর হতে প্রাপ্ত সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী ঠাকুরগাঁও জেলায় শুক্রবার (১৪ আগষ্ট) এপর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৬১৭ জন। সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৩০৬ জন। আর মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের।

এ ব্যাপারে কলেজের অধ্যক্ষ বদরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এবিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মনিরুল হক বাবুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কলেজের প্রিন্সিপাল আমাকে এবিষয়ে কিছুই বলেননি । তিনি তার মত করে কলেজ পরিচালনা করেন কাউকে তোয়াক্কা করেননা । তবে আমি শুনেছি উপবৃত্তির মেধা যাচাইয়ের জন্য পরিক্ষা নেওয়া হয়েছে।

এব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা অফিসার খন্দকার মোঃ আলাউদ্দীন আল আজাদ বলেন, আমি এই প্রথম শুনলাম যে পরীক্ষার্থীদের মোবাইল ফোনে ডেকে পরিক্ষা নেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, আমি একটি অভিযোগ পেয়েছি । কলেজ প্রিন্সিপাল শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোনে ডেকে পরিক্ষা নিয়েছে এবং আমি উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে বলেছি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে।

এব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ নুর কুতুবুল আলম বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রেখে এই ধরনের কার্যক্রম করার কোন সুযোগ নেই। যেহেতু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সেহেতু কোন কলেজ শিক্ষার্থীদের ডেকে নিয়ে পরীক্ষা নিতে পারবে না, তবে অনলাইনে অথবা বাসায় পরিক্ষা নেয়ার সুযোগ আছে।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: