বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:২৮ অপরাহ্ন

রংপুরে দুই’বোনকে হত্যা , নতুন প্রেম মেনে না নিতে পারায়: বলছে পুলিশ

নিউজ ডেস্ক : রংপুরে চাঞ্চল্যকর দু’বোন হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনের দাবি করেছে পুলিশ। তাদের ভাষ্য, মামাতো ভাইয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠার কারণে সাবেক প্রেমিক রিফাত সুমাইয়া আক্তার মীম ও তার বোন জান্নাতুল মাওয়াকে হত্যা করে।

রোববার রাত ৮টার দিকে রংপুর মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে উপ-পুলিশ কমিশনার আবু মারুফ হোসেন সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

আবু মারুফ হোসেন বলেন, রংপুর নগরীর গণেশপুর এলাকার বাসিন্দা মোকসেদুল ইসলামের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার মীমের (১৭) সাথে ৫ বছর আগে নগরীর মধ্য বাবুখাঁ এলাকার এমাদুল ইসলামের ছেলে মাহফুজুর রহমান রিফাতের (২০) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দীর্ঘদিন ধরে ভাব বিনিময় হলেও সম্প্রতি তাদের সম্পর্ক ছিন্ন হয়। প্রেমিক রিফাত জানতে পারে সুমাইয়া তার মামাতো ভাইয়ের সাথে নতুন করে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছে। এ ক্ষোভ রিফাতের মনে বাড়তে থাকলে সে মীমকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী রিফাত তার ব্যবহৃত মোবাইল সেট ও সিম কার্ড বন্ধু আরিফের কাছে রেখে বন্ধুর মোবাইল ফোন ও অন্য আরেকটি সিম কার্ড নিয়ে এশার নামাজের পর মীমের বাড়ির কাছে এসে তার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করে। মীম তার চাচার বাড়ির একটি ঘরে রিফাত নিয়ে প্রবেশ করে। রিফাত ও মীম একটি ঘরে ও অপর ঘরে চাচাতো বোন জান্নাতুল মাওয়া অবস্থান করে। রিফাত যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট সেবন করে মীমকে ধর্ষণ করে। অন্য বন্ধুর সাথে মীম কেন যোগাযোগ করে সে বিষয়ে রিফাত মীমকে প্রশ্ন করলে মীমের সাথে তার ঝগড়া হয়। তখন মীম বলে, তুমি আমার সাথে যা করেছো আমার অপর বন্ধুও তাই করেছে। এ কথা শোনার পর মীমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে রিফাত। হত্যা ও ধর্ষণের ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য মীমের গলায় ওড়না পেঁচিয়ে রাখে রিফাত।

উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, মীমকে হত্যার পর রিফাত ঘর থেকে বের হলে পাশের ঘরে অবস্থান করা জান্নাতুল মাওয়া রিফাতকে বের হওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করে। পাশের ঘরে মাওয়া ঢুকে মীমকে ঝুলন্ত অবস্থায় যেন দেখে না ফেলে সেজন্য তাকেও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে রুমের মেঝেতে ফেলে রাখে রিফাত। জান্নাতুল মাওয়া হত্যার বিষয়টিও ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার উদ্দেশ্যে হত্যার পর তার গলায় আয়নার কাঁচ দিয়ে কেটে গুরুতর জখম করে।

সংবাদ সম্মেলনে আবু মারুফ হোসেন আরও জানান, রিফাতকে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, সীমকার্ড এবং গুরুত্বপূর্ণ আলামত জব্দ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) শহিদুল্লাহ কাওসার, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি) উত্তম প্রসাদ পাঠক ও কোতয়ালী থানার ওসি আব্দুর রশিদ।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রংপুরের গণেশপুর এলাকায় নিজ বাড়ি থেকে জান্নাতুল মাওয়া (১৪) ও চাচাতো বোন সুমাইয়া আক্তার মীমের (১৭) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় কোতয়ালী থানায় জান্নাতুল মাওয়ার বাবা মমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করলে শনিবার রিফাতকে মধ্য বাবুখাঁ থেকে গ্রেফতার করা হয়। সুমাইয়া আক্তার মীম খলিফাটারী মহিলা মাদ্রাসার ছাত্রী ও জান্নাতুল মাওয়া বীরমুক্তিযোদ্ধা তৈয়বুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে পড়তেন।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: