শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৪৭ অপরাহ্ন

শিরোনাম
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে  প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হবে- সুবর্ণচর উপজেলা আ.লীগ হাতিয়ার উন্নয়নে সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ কর্মসূচিকে কাজে লাগানো হবে – মোহাম্মদ আলী এমপি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ৩৯ বছর পর জমি ফিরে পেলেন যদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবার শিবালয়ে ১৫তম  মাই টিভির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত  ক্রীড়াবিদরা দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনছে- ধর্মমন্ত্রী উজিরপুরে সৎসঙ্গ ফাউন্ডেশনের সেমিনার অনুষ্ঠিত শিবালয়ে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিবাড়ি খেলা অনুষ্ঠিত লঞ্চের দড়ি ছিঁড়ে ৫ জনের মৃত্যু : আসামিদের তিন দিনের রিমান্ড ঈদের দিনে সদরঘাটে দুর্ঘটনায় ঝরল ৫ প্রাণ সৌদির সাথে মিল রেখে নোয়াখালীর ৪ গ্রামে ঈদ উদযাপন

ফুলে ফুলে সিক্ত হয়ে মা-বাবার কোলে বিশ্বজয়ী আকবর

কারো হাতে ফুলের তোড়া, চোখে-মুখে আনন্দের বার্তা, কেউবা রয়েল বেঙ্গল টাইগার সাজে, সর্বত্র সাজ রব রব, ব্যানার-ফেস্টুন-প্ল্যাকার্ডে ঝলমলে পুরো রংপুর।

এর সবটাই বিশ্বকাপজয়ী যুব ক্রিকেট দলের অধিনায়ক আকবর আলীকে ঘিরে।

বৃহস্পতিবার রংপুরবাসী তাদের গৌরবের ভূমিপুত্র আকবর আলীকে বীরোচিত সংবর্ধনা দিতে এমন জমকালো আয়োজন করে।

হাজারো আকবর ভক্তদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান জনসমুদ্রে রূপান্তরিত হয়।

এর আগে আকবর আলী বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা থেকে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে আসেন। বিমান থেকে অবতরণের পর পরই রংপুর সিটি মেয়র, জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ ও ক্রীড়া সংস্থা, জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের সুধীজন ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।

এ সময় আকবর ভক্ত-সমর্থকদের উচ্ছ্বাস রুখতে পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকদের হিমশিম খেতে হয়।

আকবর আলীকে রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির গাড়িতে তুলে নেন। এ সময় সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাও একই গাড়িতে ওঠেন। শুরু হয় বর্ণিল শোভাযাত্রা।

সেখান থেকে তাকে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেলের বিশাল বহরে করে রংপুরে নেয়া হয়।

আকবরকে বহনকারী গাড়িবহর শুভেচ্ছা স্লোগানে পুরো নগরী প্রকম্পিত করে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে পৌঁছান। সেখানে রংপুর জেলা প্রশাসন ও ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে দেয়া হয় সংবর্ধনা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন রংপুর জেলা প্রশাসক আসিব আহসান, সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সাফিয়া খানম, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আবু সুফিয়ান, রংপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু মারুফ হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফজলে এলাহী, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিয়ার রহমান সাফি, সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডলসহ জেলা প্রশাসন, ক্রীড়া সংস্থা, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন এবং বিভিন্ন সামাজিক-ক্রীড়া-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।

পরে তাকে নিজপাড়া ও বাড়িতে ঢোকার পথে নগরীর কৈলাস রঞ্জন স্কুল গেটের সামনে থেকে ফুলের গালিচায় মা-বাবার কোলে পৌঁছে দেয়া হয়। এ দিকে বৃহস্পতিবার বিকালে রংপুর সিটি কর্পোরেশন ও পশ্চিম জুম্মাপাড়া এলাকাবাসীর আয়োজনে দেয়া হয়েছে সংবর্ধনা। সংবর্ধনাকে ঘিরে আতশবাজি, মিউজিক্যাল সাউন্ড শো, আর লাল-সবুজের পতাকায় পশ্চিম জুম্মাপাড়া হয়ে উঠেছে বর্ণিল। সেখানে একটি নাম উচ্চারিত হচ্ছে ‘আকবর দ্য গ্রেট’।

এ দিকে সকাল থেকেই আকবরের বাড়ির সামনেই ক্রিকেট ভক্তসহ সর্বস্তরের মানুষের ছিল ভিড়।

জানা গেছে, আকবর আলী শুরুতে মাদ্রাসায় ভর্তি হলেও পরে বাড়ির পাশের জুম্মাপড়া বেগম রোকেয়া উচ্চবিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে নগরীর লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তি হন। ক্লাস সিক্সে উঠে রংপুরের অসীম মেমোরিয়াল ক্রিকেট একাডেমিতে ভর্তি হন।

সেখানে কোচ অঞ্জন সরকারের হাত ধরে রংপুর জিলা স্কুলের মাঠে তার ক্রিকেটের সত্যিকারের হাতেখড়িটাও হয়ে যায়। ২০১২ সালে বিকেএসপিতে সুযোগ পান।

এরপর শুধুই এগিয়ে যাওয়ার গল্প তৈরি করে আকবর। বিকেএসপির বয়সভিত্তিক দলে খেলে সুযোগ পেয়ে যান জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৭ দলে। নেতৃত্ব দেয়ার অভিজ্ঞতাও হতে থাকে সমানতালে।

শুধু ক্রিকেট নিয়েই অবশ্য পড়ে থাকেননি আকবর। পড়াশোনাটাও দারুণভাবে করেছেন তিনি। ২০১৬ সালে তার এসএসসি পরীক্ষার সময় চলছিল প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লীগ। তখন খেলা ও লেখাপড়া দুটিই সামলেছেন দারুণ মনোযোগে। এসএসসিতে জিপিএ ৫ পান তিনি। এইচএসসিতে জিপিএ ৪.৪২।

সবকিছুতে ভালো করার ধারাবাহিকতায় এবার বাংলাদেশ যুবদলের নেতৃত্বের ভার তার কাঁধে। দক্ষিণ আফ্রিকার আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে নেতৃত্বের ভার সামলে চমক দেখালেন আকবর আলী।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: