রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:১৮ অপরাহ্ন

লোকলজ্জার ভয়ে অন্তঃসত্ত্বা শিশুর ভ্রূণ নষ্ট করল পরিবার!

বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা পেয়ারা কিনতে গিয়ে এক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে মোসলেম খান নামের ৮০ বছরের এক বৃদ্ধের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় শিশুটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। পরে তার গর্ভের ১৮ সপ্তাহের ভ্রূণটি নষ্ট করে দিয়েছে পরিবারের সদস্যরা।

ওই ঘটনায় মৌখিকভাবে শিশুটির নানা পাথরঘাটা থানায় একটি অভিযোগ করেছেন। তবে লিখিত অভিযোগ বা মামলা না হওয়ায় ধর্ষণে জড়িত মোসলেম খানকে আটক বা গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। জানা গেছে, তিনি পালিয়ে গেছেন।

মোসলেম খান পাথরঘাটা কালমেঘা ইউনিয়নের বাসিন্দা। অভিযোগ আছে, তার ছেলে সালু খান ভুক্তভোগীর পরিবারকে হুমকি দিচ্ছিলেন। গতকাল সোমবার এ বিষয়টি জানার পর স্থানীয় সাংবাদিকরা শিশুটির বাড়ি গিয়ে তার কাছ থেকে তথ্য নেন। এ কথা জানতে পেরে শিশুটির নানাকে মারধরও করেন সালু ও তার লোকজন।

শিশুটির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মোসলেম খানের বাড়িতে পেয়ারা কিনতে গিয়েছিল সে। ঘরে কেউ না থাকায় তার মুখ চেপে ধরে ভেতরে নিয়ে ধর্ষণ করেন তিনি। এ ঘটনা কাউকে জানালে ‘খুন করে ফেলবেন’ বলেও হুমকি দেন মোসলেম।

ভুক্তভোগীর মা আমাদের সময়কে জানান, কয়েকদিন ধরে মেয়ের পেটের আকৃতির পরিবর্তন দেখে তাদের সন্দেহ হয়। তারা স্থানীয় এক ওঝা ডেকে ঝাড়ফুঁক করান। কিন্তু তাতে কোনো সুবিধা না হওয়ায় মেয়েকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান তারা। পরে জানতে পারেন, মেয়ে ১৮ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা।

বাড়ি ফিরে মেয়ের কাছে বিষয়টি জানতে চান বাবা-মা। খুন হওয়ার ভয়ে প্রথমে বলতে না চাইলেও পরে পুরো ঘটনা তাদের জানায় ভুক্তভোগী।

বিষয়টি নিয়ে শিশুটির বাবা মোসলেম খানের সাথে কথা বলতে যান। এ সময় মোসলেম ঘটনা স্বীকার করেন। পরে বিষয়টি নিজের ছেলেদের কাছেও খুলে বলেন। লোকলজ্জা ও সম্মানহানীর ভয়ে শিশুর পেটের ভ্রূণ নষ্ট করতে তাদের ৩০ হাজার টাকা দেন। এ ছাড়া শিশুটির বিয়ের সব খরচ বহনের প্রতিশ্রুতি দেন তারা।

ওই শিশুর মা আরও জানান, লোকলজ্জা ও সম্মানহানের ভয়েই তারা হাসপাতালে গিয়ে সন্তানের পেটের ভ্রূণ নষ্ট করে ফেলেন।

শিশুর মা অভিযোগ করে আরও জানান, এ ঘটনা জানাজানি হলে স্থানীয় সাংবাদিকরা তাদের বাড়ি আসেন। এ সময় তার বাবা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এ কথা জানতে পেরে মোসলেমের ছেলে সালু ও তার লোকজন শিশুটির নানাকে মারধর করেন। এ বিষয়ে সালু ও মোসলেমের সঙ্গে কথা বলতে তাদের বাড়ি দিয়ে ঘর তালাবদ্ধ পাওয়া যায়।

ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতের মারধরের শিকার ব্যক্তি পাথরঘাটা থানায় সমগ্র ঘটনা নিয়ে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন।

পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মারধরের শিকার ব্যক্তি থানায় মৌখিক অভিযোগ দিয়েছেন। কোনো লিখিত অভিযোগ বা মামলা হয়নি। এ কারণে পুলিশ কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তাকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: