সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৩৬ পূর্বাহ্ন

জনগণের দাবির ফয়সালা করা হবে রাজপথে : মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সারা দেশের মানুষ তাদের অধিকার আদায়ের জন্য রাজপথে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। সরকারের কোনো ষড়যন্ত্র, দমন, প্রলোভন এই আন্দোলনকে বিভ্রান্ত কিংবা বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। তাই সময় থাকতেই জনগণের মনোভাব বুঝে বিএনপি ঘোষিত ১০ দফা মেনে নিয়ে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় রাজপথে জনগণের দাবির ফয়সালা করা হবে।

গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আজ মঙ্গলবার (৯ মে) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, “দেশের মানুষ গণতন্ত্র, মৌলিক অধিকার তথা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা ও ভোটের অধিকার প্রয়োগসহ মুক্ত মত প্রকাশের জন্য স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ করে রক্ত দিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছে। আজকে সেই দেশে, মানুষের সকল অধিকার হরণ করা হচ্ছে। দুর্নীতি আর মিথ্যাচারের মহোৎসব চলছে। সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য বিরোধী মতের নেতাকর্মীদের ওপর বিভিন্ন কৌশলে নির্যাতন নিপীড়নের যাত্রা শুরু করেছেন।”

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, “বিএনপিসহ বিরোধী মতের দলগুলো ও দেশবাসী এই সরকারের অধীনে নির্বাচন না করা এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে যখন ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে, ঠিক সে সময় অবৈধ সরকারের মন্ত্রী ও শাসকগোষ্ঠীর নেতৃবৃন্দ জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য মিথ্যাচার ও অলীক কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।”

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই অবৈধ সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনই নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে না এবং জনগণ স্বাধীনভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে না। সংসদ ভেঙে দিয়ে এই অবৈধ সরকার পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি আজ গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। এই অবৈধ সরকার দেশের মানুষের উপরে অত্যাচার নির্যাতন চালানোর জন্য এবং অধিকার হরণের জন্য রাষ্ট্রের তিনটি বিভাগকে (আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগ) এই সরকার দখল করে নিজেদের ইচ্ছামতো বিরোধিমতের মানুষসহ এ দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের উপরে অন্যায় অত্যাচার, নির্যাতন, জুলুমের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে।

মির্জা ফখরুল জানান, সর্বশেষ আশ্রয়স্থল বিচার বিভাগকে দলীয়করণ করা হয়েছে। সরকার প্রধানের ইচ্ছামতো মানুষকে কারাগারে বন্দি রাখা, নির্যাতন করা বিচার বিভাগের অবৈধ সরকারের নির্দেশে ফরমায়েশী রায় প্রদান করে বিরোধী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে মামলা-হামলায় কারাগারে প্রেরণ ও সাজা প্রদান করছে। তারই ধারাবাহিকতায় উচ্চ আদালতের জামিন থাকার পরেও জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমির এজাজ খান, সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চুসহ প্রায় শতাধিক নেতাকর্মীকে নিম্ন আদালত কারাগারে প্রেরণ করেছেন; যা আইনের শাসনের পরিপন্থী বলে জনগণ মনে করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, “সরকার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ফরমায়েশি রায় দিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে। পুনরায় নতুন করে বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, ডা. জোবায়দা রহমানসহ জিয়া পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে নতুন নতুন মিথ্যা মামলা দিয়ে চার্জ গঠন করে সাজা দেওয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। দলের অন্যতম ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম পিন্টু, লুৎফর জামান বাবর, কাজী সলিমুল হক কামালসহ বেশ কয়েকজন নেতাকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। ”

“রাষ্ট্রের অর্থ ব্যয় করে আইন মন্ত্রণালয় মামলার তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। এই সকল হীন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য সরকার তথা সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় দেশে উদ্ভুত পরিস্থিতির সকল দায় সরকারকেই বহন করতে হবে।”


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: