মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৪৭ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম
ক্রীড়াবিদরা দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনছে- ধর্মমন্ত্রী উজিরপুরে সৎসঙ্গ ফাউন্ডেশনের সেমিনার অনুষ্ঠিত শিবালয়ে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিবাড়ি খেলা অনুষ্ঠিত লঞ্চের দড়ি ছিঁড়ে ৫ জনের মৃত্যু : আসামিদের তিন দিনের রিমান্ড ঈদের দিনে সদরঘাটে দুর্ঘটনায় ঝরল ৫ প্রাণ সৌদির সাথে মিল রেখে নোয়াখালীর ৪ গ্রামে ঈদ উদযাপন নোয়াখালীতে দুর্বৃত্তরা ঘর আগুনে পুড়ে দিয়েছে, ১০ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি সুবর্ণচরে মানব কল্যাণ সংস্থার উদ্যোগে হতদরিদ্র ও অসহায়দের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ  ঢাকা আরিচা মহাসড়কের মসুরিয়ায় নামে এক অজ্ঞাত ব্যাক্তি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত চাটখিলে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ

চলে গেলেন গণসংগীত শিল্পী ফকির আলমগীর

নিউজ ডেস্ক :: করোনায় আক্রান্ত হয়ে চলে গেলেন গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর।

ফকির আলমগীরের ছেলে মাশুক আলমগীর রাজীব জানান, শুক্রবার রাত ১০টার দিকে রাজধানীর একটি বেসরকারী হাসপাতালের কোভিড ইউনিটে ভেন্টিলেশনে থাকা অবস্থায় ফকির আলমগীরের হার্ট অ্যাটাক হয়। রাত ১০টা ৫৬ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।

মৃত্যুকালে ফকির আলমগীরের বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে রেখে গেছেন।

গত ১৪ জুলাই ফকির আলমগীরের শরীরে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর চিকিৎসকের পরামর্শে বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু পরদিন সন্ধ্যা থেকে তার জ্বর ও শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। এজন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এর আগে শুক্রবার ফকির আলমগীরের সর্বশেষ অবস্থা জানিয়ে ছেলে মাশুক বলেছিলেন, ‘বাবার শরীরে ডি-ডাইমার কমেছে। রক্ত ও ফুসফুসে ইনফেকশন পাওয়া গেছে। ব্লাড প্রেসার খুবই লো হয়ে গেছে। রক্তে ইনফেকশনের জন্য প্রায় প্রতিদিনই সকালে জ্বর আসছে। সবাই বাবার জন্য দোয়া করবেন।’

বৃহষ্পতিবার জানা যায়, ফকির আলমগীরের অক্সিজেন স্যাচুরেশন শতভাগ। তার ডান ফুসফুস সংক্রমণমুক্ত থাকলেও বাম ফুসফুস এখনও ভাইরাসের সঙ্গে যুদ্ধ করছে। ফলে ডানপাশে কাত হলেই অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৭৫-এ নেমে আসে। ’

ফকির আলমগীরের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শোক জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

ফকির আলমগীর একজন কণ্ঠযোদ্ধা। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি স্বাধীনবাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ছিলেন। যদিও ষাটের দশক থেকে গণসংগীত গেয়ে আসছেন তিনি। ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠী ও গণশিল্পী গোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে অসামান্য ভূমিকা রাখেন তিনি। পরে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী।

নব্বইয়ের দশকে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধে গড়ে উঠা সাংস্কৃতিক সংগঠন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটেও তিনি যুক্ত হয়েছিলেন। মৃত্যুর আগে তিনি এই সংগঠনের সহসভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।

স্বাধীনতার পর ফকির আলমগীর পপ ঘরানার গানে যুক্ত হন। পাশ্চাত্য সংগীতের সঙ্গে বাংলার লোকজ সুরের সমন্বয় ঘটিয়ে তিনি বহু গান করেছেন। সংগীতে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৯৯ সালে সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে।

ফকির আলমগীর ১৯৫০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানার কালামৃধা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মো. হাচেন উদ্দিন ফকির, মা বেগম হাবিবুন্নেসা।

জগন্নাথ কলেজ থেকে স্নাতক পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।

ফকির আলমগীর ১৯৬৬ সালে ছাত্র ইউনিয়নের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে তিনি সামিল হন তার গান দিয়ে।

মুক্তিযুদ্ধের পর যে কজন শিল্পী বাংলাদেশে পপ ঘরানার গানের চর্চা শুরু করেছিলেন, ফকির আলমগীর ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম।

১৯৮২ সালের বিটিভির ‘আনন্দমেলা’ অনুষ্ঠানে ফকির আলমগীরের গাওয়া ‘ও সখিনা গেছস কিনা ভুইল্যা আমারে’ গানটি এখনও লোকমুখে ফিরে।

‘মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও বিজয়ের গান’, ‘গণসংগীতের অতীত ও বর্তমান’, ‘আমার কথা’, ‘যাঁরা আছেন হৃদয়পটে’সহ বেশ কয়েকটি বইও প্রকাশিত হয়েছে তার।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: