মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৫৪ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম
ক্রীড়াবিদরা দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনছে- ধর্মমন্ত্রী উজিরপুরে সৎসঙ্গ ফাউন্ডেশনের সেমিনার অনুষ্ঠিত শিবালয়ে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিবাড়ি খেলা অনুষ্ঠিত লঞ্চের দড়ি ছিঁড়ে ৫ জনের মৃত্যু : আসামিদের তিন দিনের রিমান্ড ঈদের দিনে সদরঘাটে দুর্ঘটনায় ঝরল ৫ প্রাণ সৌদির সাথে মিল রেখে নোয়াখালীর ৪ গ্রামে ঈদ উদযাপন নোয়াখালীতে দুর্বৃত্তরা ঘর আগুনে পুড়ে দিয়েছে, ১০ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি সুবর্ণচরে মানব কল্যাণ সংস্থার উদ্যোগে হতদরিদ্র ও অসহায়দের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ  ঢাকা আরিচা মহাসড়কের মসুরিয়ায় নামে এক অজ্ঞাত ব্যাক্তি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত চাটখিলে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ

ক্রমবর্ধমান করোনা মানুষকে দরিদ্র করছে

করোনার প্রভাবে টানা লকডাউন চলায় মানুষ আর্থিকভাবে নিঃশ্ব হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের অবস্থা খুবই করুণ। তাদের পক্ষে জীবিকা নির্বাহ করা খুবই কঠিন হয়ে যাচ্ছে। সংসারের বাজেট কাটছাট করেও দিন পাড়ি দেয়া কঠিন হয়ে উঠেছে। আর যদি কারো পরিবারে অসুস্থ রোগী থাকেন তবে তো তার চিকিৎসা চালানো সম্ভব হচ্ছে না। সরকারি হাসপাতালগুলো এখন করোনা রোগীতে ঠাসা। অন্য রোগীদের স্থান সেখানে নেই। বেসরকারি হাসপাতালগুলোর উচ্চমূল্যে চিকিৎসা সেবা কেনা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। নিম্নবিত্তদের আগে সামর্থবানরা খাওয়া নিয়ে সাহায্য করলেও ইদানীং এ উদ্যোগ খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। প্রতিদিনের খাওয়া দাওয়ার খরচ নির্বাহ করে ঘর ভাড়া দেওয়া মড়ার ওপর খাড়ার ঘা হয়ে উঠেছে। এজন্য অনেকেই তাদের কর্মস্থল ত্যাগ করে গ্রামের বাড়িতে পাড়ি জমাচ্ছেন বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। সরকারি ভাবে কাউকে চাকুরি চ্যুতি করা নিষিদ্ধ হলেও দেদারসে মানুষ তার কাজ হারাচ্ছে। আর অপ্রতিষ্ঠানিক কাজে নিয়োজিত মানুষের অবস্থা তো আরো করুণ। লকডাউনের কারণে ঘর থেকে বেরুলেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজনের হাতে হেনস্থাসহ কোনো কাজ না পাওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে তারা অর্ধাহারে অনাহারে আছেন।

এদিকে খোদ সরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএস বলছে, করোনা ভাইরাস মহামারির আঘাতে অন্ততঃ ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ নতুন করে দারিদ্র্য সীমার নিচে চলে যাচ্ছে। আর বেসরকারি গবেষণা সংস্থা ব্র্যাক ও পিপিআরসি বলছে, আগে দেশের ২০ শতাংশ মানুষ দরিদ্র ছিল। এখন সেটা আরো ৫ শতাংশ বেড়ে ২৫ শতাংশ হয়েছে। সামনের দিনে এ সংখ্যা আরো বাড়বে বলে মনে করে সংস্থা দু’টি। ফলে করোনা পরবর্তী সময়ে কাজের সুযোগ বাড়াতে হবে। বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেনীর মানুষকে কাজ দিতে না পারলে দারিদ্র্যসীমার ভয়াবহতার দিকে এগিয়ে যাবে দেশ। এতে আমাদের চলমান সব উন্নয়ন কর্মকান্ডসহ সব ধরনের উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত হবে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) সর্বশেষ থানা জরিপ অনুযায়ী করোনার আগে বাংলাদেশের মোট জনগোষ্ঠীর ২০ দশমিক ৫ ভাগ দারিদ্রসীমার নিচে ছিল। চরম দারিদ্র ছিল ১০ ভাগ মানুষ। করোনা মহামারির কারণে সেটা দ্বিগুন হয়ে গেছে বলে বেসরকারি কয়েকটি গবেষণা সংস্থা তথ্য প্রকাশ করেছে। এদিকে বিআইডিএসের সাম্প্রতিক জরিপে বলা হয়েছে, করোনায় ১ কোটি ৬৪ লাখ মানুষ নতুন করে গরিব হয়েছে। অর্থাৎ দারিদ্রসীমার নিচে নেমে গেছে। তাই এখন দেশে গরিব মানুষের সংখ্যা ৫ কোটির বেশি। ফলে কারো বুঝতে অসুবিধা হবার কথা নয় যে দেশের একটা বিশাল অংকের মানুষ দারিদ্র্যতার সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে আছে।

ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ত্রান তহবিল থেকে দরিদ্র মানুষের জন্য ত্রান সহায়তা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সে সহায়তা দরিদ্র মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারে নি। করোনা সংক্রমণের ক্রমবর্ধমান সংক্রমণে আগামী দিনে তাদের জীবন জীবিকার জন্যে আরো কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। তাই সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে হতদরিদ্রদের পাশে দাঁড়াতে হবে। দিতে হবে তাদের খেয়ে পরে বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: