বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৩১ অপরাহ্ন

শিরোনাম
চৌদ্দগ্রামে বৃষ্টির প্রার্থনায় ইসতিসকার নামাজ, প্রখর রোদে মুসল্লিদের কান্না হাতিয়ায় সৈকতে দেখা মিলল ‘ইয়েলো বেলিড সি স্নেক’ ফসলি জমি কেটে মাটির ব্যবসা: ভ্রাম্যমাণ আদালতে দুই লাখ টাকা জরিমানা মাটি ব্যবসায়ীর লাখ টাকা জরিমানা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ব্যবস্থাপনা পর্ষদে কুমিল্লার মফিজুর রহমান বাবলু সিনেমা হলে দেখা যাবে আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জয়ের গল্প দেশে পৌঁছেছেন টাইগারদের নতুন কোচ জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এশিয়া : ডাব্লিউএমও নয়াপল্টনে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল জাতি হিসেবে আমাদের সকল প্রাপ্তির দ্বার উন্মোচন করে গেছে মুজিবনগর সরকার-ধর্মমন্ত্রী

শ্রমিকরা আর কতদিন খামখেয়ালীর শিকার হবেন

সর্বাত্মক লকডাউনের মধ্যে হঠাৎ করে ১ আগস্ট থেকে রপ্তানিমুখী শিল্প কারখানা খুলে দেওয়ার ঘোষণা আসে। ফলে ৩০ জুলাই সকাল থেকে সারাদেশে ঈদের ছুটিতে থাকা শ্রমিকরা ঢাকামুখী যাত্রা শুরু করেন। কিন্তু গণপরিবহন বন্ধ থাকায় সারা পথে দুর্ভোগের সাথে যুদ্ধ করে কর্মক্ষেত্রে ফেরার আপ্রাণ চেষ্টা করেন। গণপরিবহন বন্ধ হবার কারণে ট্রাক-পিকআপ মোটরসাইকেল ব্যাটারিচালিত রিকশা বা পায়ে হেঁটে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে ঢাকায় ফিরছেন। সংশ্লিষ্ট গার্মেন্টসকর্মীদের মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়ে তাদের ১ আগস্ট সকাল ১০ টার মধ্যে কর্মক্ষেত্রে যোগ দিতে বলা হয়েছে। তাই চাকরি বাঁচাতে গাদাগাদি করে স্বাস্থ্য বিধি না মেনে ঢাকামুখী যাত্রা। শিমুলিয়া ও দৌলোদিয়া ঘাটের ঢাকামুখী মানুষের ভিড়ে যানবাহন বা অ্যাম্বুলেন্স উঠতে পারেনি। শুধু মানুষ আর মানুষ সকাল থেকেই এমন চিত্র দেখা গেছে ঘাটগুলোতে। এতে শ্রমিকেরা ঢাকায় কষ্ট করে ফিরলেও করোনা সংক্রমনের ভয়াবহতা থেকে নিষ্কৃত পাবেন কিনা বলা যায়না। অন্যদিকে সরকারি ঘোষণার পরেও বরিশাল নদী বন্দর থেকে কোন লঞ্চ ছাড়েনি। সার্বিক দিক বিবেচনা করে ৩১ জুলাই দুপুর থেকে ১ আগস্ট দুপুর ১২টা পর্যন্ত গণ পরিবহন চলাচলের অনুমতি সরকার দিয়েছেন শ্রমিকদের ঢাকায় ফেরার জন্য। মানুষের ঢাকামুখী স্রোত থাকলেও পথে পথে যানজটে নাকাল হয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। গার্মেন্টস শ্রমিকদের নিয়ে বিধিনিষেধের মধ্যে যা ঘটল এবং ঘটছে তা সত্যি সভ্য দুনিয়ার বিস্ময়কর। এরপর আর কি দেশে লকডাউন এর প্রয়োজন আছে?

গার্মেন্টস মালিকদের দাবির প্রেক্ষিত কারখানাগুলো খোলার অনুমতি দিয়েছে সরকার। সরকার ও মালিকপক্ষ জানতো ১ আগস্ট থেকে কারখানা খুলবে। শ্রমিকদের কাজে ফেরার জন্য পরিবহন ব্যবস্থা করা প্রয়োজন ছিল। এ ছাড়া কাজে পরিবহন ব্যবস্থা করা প্রয়োজন ছিল। কাজে যোগ দেওয়ার আগে করোনা পরীক্ষা করা, কেউ আক্রান্ত হলে আইসোলেশনে রাখা এবং চিকিৎসা ব্যবস্থা করার মত সর্তকতা অবলম্বন দরকার ছিল। যদি কোনো শ্রমিক আক্রান্ত হয়ে মারা যায় তাহলে তাদের সরকারের কর্মীদের মতো ক্ষতিপূরণ দেওয়ার চিন্তাভাবনা কি সরকার বা গার্মেন্টস মালিকরা করছেন। তাই সরকারের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের উচিত কারখানাগুলোকে নজরদারিতে রাখা। কারখানা মালিকরা ঠিক কাজের যথাযথ পরিবেশ বজায় রাখছেন নাকি মুনাফার আশায় অন্ধ হয়ে কোনরকম উৎপাদন চালাচ্ছেন।

এদিকে এত কষ্ট করে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিলেও তাদের বেতন ৪০ শতাংশ কাটা হবে বলে গার্মেন্টস মালিকরা সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন। তাদের যুক্তি এ মহা দুর্যোগের সময় ১৯ দিন কোন কাজ শ্রমিকরা করেননি। এতে বিদেশি অর্ডার সময় মত দিতে না পারায় আর্থিক সংকটে গার্মেন্টস মালিকরা। তারা অর্ডার সাপ্লাই দিয়ে বিল পেলে শ্রমিকদের বেতন সমন্বয় করতে চান। আর এপ্রিল মাসের প্রথম ৫ দিন বাদে তাদের বেতন দিতে সরকারি প্রণোদনা দাবি করছেন। যদিও সরকার ইতঃপূর্বে শিল্প কারখানা মালিকদের জন্য সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা দিয়েছেন।মাথার ঘাম পায়ে ফেলা শ্রমের বিনিময়ে মালিকরা বছরের-পর-বছর মুনাফা করছেন। কিন্তু তার ভাগ তারা শ্রমিকদের দেন না। নিজেদের ভোগবিলাসে তা খরচ করেন এখন মহামারীর সময় শ্রমিকরা কেন তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হবেন। শ্রমিকরা কি সবসময় শোষিত হতে থাকবেন সরকার ও মালিকদের খামখেয়ালিপনার শিকার হতে থাকবেন?


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: