শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৪৮ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে  প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হবে- সুবর্ণচর উপজেলা আ.লীগ হাতিয়ার উন্নয়নে সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ কর্মসূচিকে কাজে লাগানো হবে – মোহাম্মদ আলী এমপি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ৩৯ বছর পর জমি ফিরে পেলেন যদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবার শিবালয়ে ১৫তম  মাই টিভির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত  ক্রীড়াবিদরা দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনছে- ধর্মমন্ত্রী উজিরপুরে সৎসঙ্গ ফাউন্ডেশনের সেমিনার অনুষ্ঠিত শিবালয়ে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিবাড়ি খেলা অনুষ্ঠিত লঞ্চের দড়ি ছিঁড়ে ৫ জনের মৃত্যু : আসামিদের তিন দিনের রিমান্ড ঈদের দিনে সদরঘাটে দুর্ঘটনায় ঝরল ৫ প্রাণ সৌদির সাথে মিল রেখে নোয়াখালীর ৪ গ্রামে ঈদ উদযাপন

সবার দায়িত্বশীলতা জরুরি

করোনা সংক্রমণ রোধে দফা দফায় জারি করা কঠোর বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ার পর রাস্তাঘাট, হাটবাজার, গণপরিবহনসহ প্রায় সর্বত্র ফের যে উদাসীনতা ও খামখেয়ালিপনা পরিলক্ষিত হচ্ছে, তা আমাদের উদ্বিগ্ন না করে পারে না। বৃহস্পতিবার সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোথাও স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই নেই! বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা বলছেন পরিস্থিতি পুনর্বার ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। আমরা দেখছি, ১৯ দিন ধরে দৈনিক মৃত্যুর হার দুইশর ওপরে। তবে চলতি মাসের শুরু থেকে দেশে রোগী শনাক্তের হার কমতে শুরু করেছে। আশা করা যায় সবাই যদি সচেতন-সতর্ক থেকে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথ মেনে চলেন, তাহলে মৃত্যুহারও কমে আসতে পারে। দুঃখজনক হলেও সত্য, প্রাণঘাতী এই ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে প্রায় সবাই এখন কমবেশি জানলেও মেনে চলতেই যত অনীহা। স্বাস্থ্যবিধির ব্যত্যয় ঘটলে পরিণাম কতটা ভয়াবহ হতে পারে তা আমাদের অভিজ্ঞতায় আছে।

আমরা জানি, যে কোনো সংক্রমণ ব্যাধির প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম। করোনাভাইরাস প্রাণঘাতী হলেও এ থেকে রক্ষার উপায় মানুষের সাধ্যের বাইরে নয়। লকডাউন উঠে যাওয়ার পর প্রায় সর্বত্রই স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনের যে চিত্র সংবাদমাধ্যমে উঠে আসছে, তাতে সংক্রমণের নিম্নগতি মাঝপথে ঘুরে যেতে পারে। আমরা এই সম্পাদকীয় স্তম্ভেই লিখেছিলাম, মাসের পর মাস লকডাউন জারি রাখা সম্ভব নয়। এমতাবস্থায় প্রধান রক্ষাকবচ স্বাস্থ্যবিধির অনুসরণ। আমরা জানি, বিশ্বের কোনো কোনো দেশে লকডাউন শিথিল করে কিংবা উঠিয়ে শুধু স্বাস্থ্যবিধির কঠোর অনুসরণে তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে। এমনকি অনেক দেশ করোনা-দুর্যোগ কাটিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতেও সক্ষম হয়েছে। কিন্তু আমাদের জনপরিসরে এক্ষেত্রে যে উদাসীনতা-অনীহা লক্ষ্য করা যায়, এই প্রবণতা আত্মঘাতের শামিল। এটা মনে রাখতে হবে- আতঙ্ক নয়, সচেতনতা-সতর্কতায় এ থেকে উত্তরণ সম্ভব। আগে সংক্রমণ শহরাঞ্চলে থাকলেও দ্বিতীয় ঢেউ গ্রামাঞ্চলে ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

আমরা দেখছি, পর্যবেক্ষক-বিশেষজ্ঞরা যেসব সুপারিশ-পরামর্শ ইতোপূর্বে সরকারের কাছে পেশ করেছেন এবং নীতিনির্ধারকরা এর পরিপ্রেক্ষিতে যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেগুলো অনেক ক্ষেত্রেই কার্যকরভাবে বাস্তবায়নে যথেষ্ট ঘাটতি থেকে যায়। লকডাউন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা গেছে সমন্বয়হীনতা ও বিভ্রান্তি। আবার দেখা গেছে, সরকার যেসব নির্দেশনা জারি করে তা মানেননি অনেকেই। এই দুঃখজনক বৈপরিত্যের কারণেই আমাদের বিপদাশঙ্কা দেখা দেয়। জীবনের চেয়ে মূল্যবান কিছুই নয়- এ কথাটি যেন কেউই ভুলে না যান। এখনও সারাদেশ ঝুঁকিপূর্ণ, তাই দায়িত্বশীলতার বিকল্প নেই। একই সঙ্গে গণটিকাদান কার্যক্রম সুপরিকল্পিতভাবে বাস্তবায়ন ছাড়াও গত্যন্তর নেই। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর বারবার বলছে, টিকার কোনো সংকট নেই। ইতোমধ্যে বিপুল টিকা এসেছে, পাইপলাইনেও পর্যাপ্ত সংখ্যক টিকা রয়েছে। কিন্তু আমরা দেখছি টিকা ব্যবস্থাপনায় নানারকম সংকট ও অনিয়ম। তবে দেশে পর্যাপ্ত টিকা মজুদ না থাকলেও আশাব্যঞ্জক বিষয় হলো, সাধারণ মানুষের মধ্যে টিকা নেওয়ার আগ্রহ বেড়েছে।

আমরা জানি, সুরক্ষা অ্যাপে টিকার জন্য নিবন্ধন করে অপেক্ষায় আছেন প্রায় তিন কোটি নাগরিক। এই বাস্তবতায় টিকা সংগ্রহ ও টিকাদান অভিযান জোরদার ও সুচারু করা জরুরি। দেশে করোনা সংক্রমণে মৃত্যুর সংখ্যা ২৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এই বাস্তবতা এড়ানোর সুযোগ নেই। সংক্রমণ ফের ঊর্ধ্বমুখী হলে সব ব্যবস্থার পরিসর বাড়িয়েও সুফল মিলবে না। ভেঙে পড়তে পারে চিকিৎসাব্যবস্থা। তেমন পরিস্থিতি যাতে মানুষের অপরিণামদর্শী কর্মকাণ্ডে সৃষ্টি না হয়, এ জন্য নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রত্যেকের সচেতনতা-দায়িত্বশীলতার বিকল্প নেই। নিজে সুরক্ষিত না থাকলে পরিবার, সমাজও পড়বে ঝুঁকির মুখে। এ জন্য ব্যক্তির দায়ও অনেক। আমরা চাই, মানুষ যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে- এজন্য সব পক্ষ যূথবদ্ধ প্রয়াস চালাক।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: