শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৪১ অপরাহ্ন

শিরোনাম
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে  প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হবে- সুবর্ণচর উপজেলা আ.লীগ হাতিয়ার উন্নয়নে সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ কর্মসূচিকে কাজে লাগানো হবে – মোহাম্মদ আলী এমপি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ৩৯ বছর পর জমি ফিরে পেলেন যদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবার শিবালয়ে ১৫তম  মাই টিভির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত  ক্রীড়াবিদরা দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনছে- ধর্মমন্ত্রী উজিরপুরে সৎসঙ্গ ফাউন্ডেশনের সেমিনার অনুষ্ঠিত শিবালয়ে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিবাড়ি খেলা অনুষ্ঠিত লঞ্চের দড়ি ছিঁড়ে ৫ জনের মৃত্যু : আসামিদের তিন দিনের রিমান্ড ঈদের দিনে সদরঘাটে দুর্ঘটনায় ঝরল ৫ প্রাণ সৌদির সাথে মিল রেখে নোয়াখালীর ৪ গ্রামে ঈদ উদযাপন

শ্রীলংকা আমাদের শঙ্কা নয়, সতর্কতা

বর্তমান সময়ে বিশ্বের অন্যতম আলোচিত বিষয় শ্রীলংকার নাজুক পরিস্থিতি। এক দশক আগেও যে দেশটি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সংস্কৃতি, আর্থিক দিক, শ্রমদক্ষতা ইত্যাদি সব মিলিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার একটি ভারসাম্যমূলক দেশ ছিল, তা বর্তমানে স্বঘোষিত দেউলিয়া। রাজনৈতিক পরিস্থিতিও অভিভাবকহীন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণের জীবন অতিষ্ঠ। মোদ্দাকথা আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার কোনো উপাদানই আজকের শ্রীলংকায় উপস্থিত নেই। শ্রীলংকার এ ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের দেশে দু’রকমের মত চালু হয়েছে। একদল বলছেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতিও বছরখানেকের মধ্যেই শ্রীলংকার মতো হয়ে যাবে। বিপরীতভাবে অপর দল বলছেন, শ্রীলংকার ছিটেফোঁটা ঘটনাও বাংলাদেশে ঘটবে না এবং ঘটার কোনো কারণও নেই। দুটি মতই দেওয়া হচ্ছে রাজনৈতিক বিবেচনায়, অর্থনৈতিক বিবেচনায় নয়। আমি মনে করি, এ দুটি চরম মনোভাবের কোনোটিই সমর্থনযোগ্য নয়। প্রকৃত সত্য হলো, বাংলাদেশের সরকার যদি কিছু কিছু বিষয়ে এখনি সাবধানতা অবলম্বন না করে ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে শ্রীলংকা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তাই শ্রীলংকার দুরবস্থা থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে।

বিশ্লেষকরা শ্রীলংকার বর্তমান নাজুক পরিস্থিতির জন্য বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে দায়ী করেছেন। তার মধ্যে আছে-এক. বৈদেশিক ঋণে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প। বেশ কয়েকটি মেঘা প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, যার ‘ফিজিবিলিটি’ বিবেচনা করা হয়নি। তাই দিন দিন বিদেশি ঋণের বোঝা বেড়েছে। দুই. দেশটির সরকার কোনো কিছু বিবেচনা না করেই ‘অরগেনিক ফার্মিং’-এর সিদ্ধান্ত নেয়। এর ফলে কৃষিপণ্য উৎপাদন ৬০ শতাংশ কমে গিয়ে মাত্র ৪০ শতাংশে দাঁড়ায়। কৃষি হয়ে পড়ে আমদানিনির্ভর। আর তা করতে গিয়ে দেশটি বৈদেশিক মুদ্রার সংকটে পড়ে। তিন. শ্রীলংকা সরকার জনপ্রিয়তার আশায় ভ্যাটের হার ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮ শতাংশে নামিয়ে আনে। ফলে সরকারি রাজস্ব আশঙ্কাজনকভাবে কমে আসে। চার. দেশটি পর্যটন শিল্পের ওপর বেশি নির্ভরশীল ছিল। করোনার দুই বছরে পর্যটনে বড় ধরনের ধাক্কা খায়। পাঁচ. প্রবাসী আয় ছিল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম উৎস। করোনার কারণে তা আশঙ্কজনকভাবে কমে যায়। ধারণা করা হয়, শ্রীলংকার বৈদেশিক আয় প্রবাহ প্রায় ৮০ শতাংশ সংকুচিত হয়ে গিয়েছিল। ছয়. ক্ষমতাসীনরা দুর্নীতি ও কমিশনের ওপর ভর করে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার করে। ফলে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শূন্যের কোঠায় নেমে আসে। শেষ ফল হিসাবে নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণা করে। সরকারের ব্যর্থতার কারণে সরবরাহ চেইন ভেঙে পড়ে, দ্রব্যমূল্য আকাশচুম্বী হয়। সাধারণ মানুষের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে যায়, তাই তারা মহাবিক্ষোভে ফেটে পড়ে এবং প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে বাসভবন থেকে কেটে পড়ে।

যারা ভাবছেন দিনকয়েকের মধ্যেই বাংলাদেশ শ্রীলংকার পরিস্থিতিতে পড়বে, তাদের ধারণা ভুল। কেননা বাংলাদেশের ‘ডেট সার্ভিস’ বা ঋণ পরিশোধের অবস্থান ভালো; কৃষিতে উৎপাদনে সমস্যা প্রকট নয়; রেমিট্যান্স কিছুটা কমেছে, তবে আশঙ্কাজনক নয়। দ্রব্যমূল্য নিয়ে অসন্তোষ আছে, তবে তা চরম বিক্ষুব্ধতায় পরিণতি লাভ করবে বলে মনে হয় না। কিন্তু তাই বলে নিশ্চিন্ত হওয়ার মতো পরিস্থিতিও নেই। কেননা শ্রীলংকার আজকের পরিস্থিতি একদিনে কিংবা এক মাসে তৈরি হয়নি। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সমস্যা ঘনীভূত হয়েছে। আমরা যদি এখনই সাবধান না হই, তাহলে এমন পরিস্থিতি আমাদের ভাগ্যাকাশেও দেখা দিতে পারে।

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের বরেণ্য ও প্রণম্য অর্থনীতিবিদ সাবেক ইউজিসি অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম তার এক নিবন্ধে কিছু কিছু বিষয়ে সরকারকে সতর্ক থাকার এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। তার ভাষায়, ‘প্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণের পরিবর্তে যদি এসব চটকদার ও স্বল্প প্রয়োজনীয় প্রকল্প নেওয়া হয়, তাহলে শ্রীলংকার মতো ঋণগ্রস্ততার ফাঁদে পড়তে বাংলাদেশেরও দেরি হবে না।’ বর্তমানে চলমান প্রকল্প এবং যেসব প্রকল্প চিন্তাভাবনার মধ্যে আছে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে নিবন্ধটিতে। মেঘা প্রকল্পগুলোর অন্যতম হলো রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। প্রকল্পটি প্রায় শেষের দিকে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী বছর কেন্দ্রটি থেকে ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে এবং ২০২৪ সালে আরও ১২০০ মেগাওয়াট মোট, অর্থাৎ ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারবে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। উৎপাদনকাল ৬০ বছর ধরা হয়েছে এবং সংস্কার করে ৮০ বছর পর্যন্ত উৎপাদন করা যেতে পারে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা, যার ৯০ শতাংশ রাশিয়া ঋণ হিসাবে দিচ্ছে; যা ২০ বছরে পরিশোধযোগ্য। কিন্তু প্রকল্পটি নিয়ে আপত্তি করার কারণ আছে। পরিবেশের কথা বাদ দিয়ে আর্থিক দিকটিতেই আসি। রাশিয়া একই সক্ষমতার একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র ভারতেও স্থাপন করেছে। কিন্তু ব্যয় ধরা হয়েছে আমাদের প্রায় অর্ধেক। কেন আমরা দ্বিগুণ ব্যয় করে প্রকল্পটি হাতে নিলাম? এ অপচয়ের দায় কে নেব? বিদ্যুৎ উৎপাদনের অন্য কোনো বিকল্প ভাবা হলো না কেন?

রেলপথের দুটি প্রকল্পকে ‘সাদা হাতি’ বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। প্রথমটি হলো, চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী হয়ে কক্সবাজার ও ঘুমধুম পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ। প্রথমে মনে করা হয়েছিল, এ পথ দিয়ে মিয়ানমার হয়ে চীনের ইউনান প্রদেশের কুমিং পর্যন্ত রেল চলাচল করবে। প্রকল্পটি পরিকল্পনা করা হয়েছিল যখন, তখন বাংলাদেশ, চীন, ভারত, মিয়ানমার (বিসিআইএম) ইকোনমিক করিডরের চুক্তি করেছিল। কিন্তু ভারতে নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর ভারত সরকার ওই চুক্তি থেকে সরে যায়। ফলে এ রেলপথ ভবিষ্যতে আন্ডার-ইউটিলাইজড থেকে যাবে। এ পথ ব্যবহার করে যে আয় হবে তা দিয়ে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করা যাবে না। তবে সান্ত্বনার কথা হলো এই যে, ঋণদাতা হলো এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)। তাই ঋণের কিস্তি পরিশোধে রূপপুর প্রকল্পের চাইতে ‘কম অসহনীয় বোঝা’ বইতে হবে। দ্বিতীয় সাদা হাতি হলো ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর থেকে পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ। ওয়াকিবহাল মহল সহজেই বুঝবেন যে, পদ্মা সেতুর সড়ক পথ চালু হওয়ার পর ওই সেতুর মাধ্যমে ঢাকা-যশোর-পায়রা পর্যন্ত নির্মীয়মাণ রেলপথের অর্থনৈতিক ফিজিবিলিটি ভবিষ্যতে খুব বেশি আকর্ষণীয় হওয়ার তেমন কোনো সুযোগ থাকবে না, কারণ রেলপথটি পণ্য পরিবহণের তুলনামূলক খরচের বিবেচনায় সড়কপথের সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক বিবেচিত হবে না। ফলে ভবিষ্যতেও রেলপথটি আন্ডার-ইউটিলাইজড থেকে যাবে। অতএব ওই প্রকল্পের সম্ভাব্য আয় দিয়ে ৪০ হাজার কোটি টাকার চীনা ঋণের অর্থে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পটির সুদাসলে কিস্তি পরিশোধ করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।

বর্তমান সময়ে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের দিকেও নজর দিতে হবে। ২০২১ সালের আগস্টে আমাদের রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪৮ বিলিয়ন ডলার। মাত্র ৯ মাসের মাথায় ২০২২ সালের এপ্রিলে পরিমাণটা কমে দাঁড়িযেছে ৪৪ বিলিয়ন ডলারে। গত ২০ বছরের তুলনায় চিত্রটি উদ্বেগজনক। কারণ, ২০০১ সালে বৈদেশিক রিজার্ভের পরিমাণ ছিল মাত্র ১ দশমিক শূন্য ৯ বিলিয়ন ডলার। তারপর থেকে দু-একটি বছর বাদ দিলে আমাদের লেনদেন ভারসাম্যের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকত। তাই আমরা ৪৮ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি; কিন্তু এ বছরে হিসাব পালটে গেছে। এর কারণ হলো আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়া। গত বছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের নয় মাসে আমদানি ব্যয় বেড়েছে প্রায় ৪৬ শতাংশ। বিশ্লেষকদের মতে, আমদানির এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২১-২২ অর্থবছর শেষে ৩০ জুন পর্যন্ত মোট আমদানির পরিমাণ দাঁড়াবে ৮২ থেকে ৮৩ বিলিয়ন ডলার। এর বিপরীতে আমরা রপ্তানি করে পাব ৫০ বিলিয়ন ডলার। তার সঙ্গে যোগ হবে প্রবাসীদের পাঠানো আনুমানিক ২০ বিলিয়ন ডলার। সে হিসাবে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি থেকে যাবে ১২-১৩ বিলিয়ন ডলার; যা আমাদের রিজার্ভের পরিমাণকে ৩২ বিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনতে পারে। বিষয়টি সরকারের নজরদারিতে আনতে হবে। অনেকেই মনে করেন, এ বিপুল পরিমাণ আমদানিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে; বিলাসদ্রব্য আমদানিকে নিরুৎসাহিত করতে হবে। বিশেষজ্ঞরা এ বিশাল আমদানি ব্যয়ের জন্য ওভার ইনভয়সিংকে দায়ী করছেন, যার মাধ্যমে অর্থ পাচার হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে সরকারকে কঠোর মনিটরিংয়ের ব্যবস্থায় যেতে হবে।

এবারে সরকারি ঋণের পরিস্থিতিটা একটু দেখা যাক। আমাদের মতো তুলনামূলকভাবে দুর্বল অর্থনীতির দেশগুলো অর্থনৈতিক গতিশীলতার স্বার্থে সাধারণত ঘাটতি বাজেট করে থাকে। এ ঘাটতি পূরণে সরকারকে দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে ঋণ গ্রহণ করতে হয়। বাংলাদেশে মোট সরকারি ঋণ কত তা বলার আগে শুধু এটুকু বলি, আজকে যে শিশুটির জন্ম হয়েছে তার ঘাড়ে ঋণের বোঝা চেপেছে প্রায় ৭০ হাজার টাকা; যা আন্তর্জাতিক মুদ্রায় ৪৩২ মার্কিন ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশে সরকারি ঋণের পরিমাণ ছিল জিডিপির ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ বা ১৪৮ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে বিদেশি ঋণ আছে জিডিপির ১৭ শতাংশ বা প্রায় ৬০ বিলিয়ন ডলার, বাদবাকি দেশীয় উৎস থেকে নেওয়া। এ তো গেল গত অর্থবছরের হিসাব। চলতি অর্থবছরের নয় মাসে বিদেশি ঋণ ৭২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এই যে সরকার ধার বা ঋণ করে, তার জন্য তাকে প্রতিবছর সুদ এবং আসলের একটা অংশ কিস্তি আকারে পরিশোধ করতে হয়। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে সুদাসল বাবদ ৬৮ হাজার ৫৮৮ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা মোট বাজেটের ১১ শতাংশেরও বেশি। কিছু কিছু প্রকল্পের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হয়ে গেলে আগামী অর্থবছরে কিস্তির পরিমাণ আরও বেড়ে যাবে।

প্রকল্পগুলো ঋণের অর্থে পরিচালিত হয়। তাই প্রকল্প গ্রহণে অধিকতর সিলেক্টিভ হওয়া প্রয়োজন। এমন কোনো প্রকল্প হাতে নেওয়া যাবে না, যার প্রাপ্তি থেকে ঋণ পরিশোধ করা যাবে না। নিজেদের অবস্থা বুঝে প্রকল্প হাতে নিতে হয়। অধ্যাপক মইনুল ইসলাম মনে করেন, আগামীতে সরকারের ভাবনার মধ্যে থাকা অন্তত আটটি প্রকল্পের বাস্তবায়নের কাজ যে পর্যায়েই থাকুক না কেন, এখনই সেগুলো স্থগিত করা প্রয়োজন। প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলো হলো : ১. ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার বুলেট ট্রেন; ২. দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প; ৩. পূর্বাচলে ১১০ তলাবিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু বহুতল ভবন কমপ্লেক্স; ৪. শরীয়তপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর; ৫. পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া দ্বিতীয় পদ্মা সেতু; ৬. নোয়াখালী বিমানবন্দর; ৭. দ্বিতীয় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ প্রকল্প এবং ৮. ঢাকার বাইরে রাজধানী স্থানান্তর। আমাদের আর্থিক সংগতির নিরিখে পরে তা চেষ্টা করা যাবে।

সাবধানের মার নাই। আমাদের অবস্থা হয়তো দ্রুতই শ্রীলংকার মতো হবে না; কিন্তু সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে বড় ধরনের ত্রুটি-বিচ্যুতি, অবহেলা, ব্যক্তি কিংবা দলীয় স্বার্থ, প্রকল্পে আর্থিক অনিয়ম ইত্যাদি আমাদের সেই সম্ভাবনা থেকে মুক্তও রাখবে না। এ বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

মুঈদ রহমান : অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: