বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৩৯ অপরাহ্ন
নিউজ ডেস্ক :: দেশজুড়ে চলমান অভিযানের মধ্যেও অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো কীভাবে কার্যক্রম চালাচ্ছে, এ প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। আশ্চর্যজনক হলো, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্যই নেই। মূলত মাঠ পর্যায়ে নজরদারি না থাকার কারণেই এ অরাজকতা চলছে।
উল্লেখ্য, বেসরকারি চিকিৎসা কার্যক্রমকে শৃঙ্খলায় আনার অংশ হিসাবে গত ২৫ মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দেশের অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দেয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ জুন পর্যন্ত ১ হাজার ৬৪১টি অবৈধ চিকিৎসাকেন্দ্র বন্ধ করা হলেও সেগুলো পুনরায় রমরমা ব্যবসায় মেতে উঠছে, এমনকি অনেকেই মাইকিং করে রোগী ডাকছে। এতে এ অভিযানের কার্যকারিতা নিয়ে জনমনে সংশয় তৈরি হয়েছে।
১৯৮২ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী নিবন্ধন না পাওয়া পর্যন্ত কেউ কোনো হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালনা করতে পারেন না। তা সত্ত্বেও সারা দেশে হাজার হাজার অবৈধ প্রতিষ্ঠান কোন্ খুঁটির জোরে চিকিৎসা কার্যক্রম তথা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে, এটাই প্রশ্ন। অভিযোগ রয়েছে, রাজধানীসহ সারা দেশে বৈধ ও অবৈধভাবে গড়ে ওঠা বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সরকারের লোকজন ছাড়াও কিছু চিকিৎসক নেতা জড়িত।
এ কারণে রোগীর কল্যাণ তথা জনস্বার্থ সংরক্ষণের বিষয়টি বরাবরই উপেক্ষিত থেকেছে। আর এ সুযোগে দেশের আনাচে-কানাচে লাইসেন্সবিহীন অসংখ্য হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে উঠেছে। মানহীন ও অবৈধ এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে বিপুলসংখ্যক মানুষ আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে পড়বে, যা মোটেই কাম্য নয়।
সরকারের নানামুখী উদ্যোগ ও আন্তরিকতা সত্ত্বেও দেশের স্বাস্থ্যসেবা যুগোপযোগী ও কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে উন্নীত হয়নি। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর অন্যতম কারণ স্বাস্থ্য খাতে বিরাজমান দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা। প্রচলিত ব্যবস্থায় স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করতে গিয়ে বর্তমানে দেশের অন্তত ৬৭ ভাগ মানুষ পকেট থেকে বাড়তি টাকা খরচ করতে বাধ্য হচ্ছে।
এতে প্রতিবছর কমপক্ষে ৫ শতাংশ মানুষ সহায়-সম্বলহীন হয়ে পড়ছে, যা সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার পরিপন্থী। এ অবস্থার অবসানে দেশজুড়ে গড়ে ওঠা অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধে সরকার কোনো ছাড় দেবে না, এটাই প্রত্যাশা।