শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:১১ অপরাহ্ন
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনিকে নির্মম হত্যাকাণ্ডের এক যুগ আজ রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি)। গত ১২ বছরেও শেষ হয়নি এ হত্যাকাণ্ডের মামলার তদন্ত। তদন্ত কর্মকর্তারা বিগত ১২ বছরে ১০৫ বার সময় নিয়েও আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিতে পারেননি।
ওইদিন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ঘটনাস্থলে এসে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেফতারের কথা বলেছিলেন। কিন্তু সেই ৪৮ ঘণ্টার ফলাফল ১২ বছরে এসেও শূন্য রয়েছে। এ সময়ে চারবার বদলেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর চেয়ার। চিহ্নিত না হওয়ায় খুনিরা দিনের আলোতে বুক ফুলিয়ে ঘুরলেও আলো দেখেনি হত্যার বিচার।
ঘটনার পর এ বিষয়ে একটি মামলা হয় ডিএমপির শেরে-বাংলানগর থানায়। রুনির ভাই নওশের আলম রোমান মামলাটি করেন। মামলাটির প্রথম তদন্ত শুরু করেন, শেরে-বাংলানগর থানার এস আই জহুরুল ইসলাম। এরপর ৬২ দিন তদন্তের দায়িত্ব থাকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে। ২ মাসেরও বেশি সময় তদন্ত করে রহস্য উদঘাটনে ব্যর্থ হয় ডিবি। এরপরে পর্যায়ক্রমে র্যাবের সহকারী পরিচালক মো. ওয়ারেছ আলী মিয়া, আরেক সহকারী পরিচালক সহিদা রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার মো. শফিকুল আলম, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জাফর উল্লাহ ও সহকারী পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন আহম্মেদ মামলাটি তদন্ত করেন। ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি, ওই বছরের ৭ জুন, ২০১৬ সালের ২ অক্টোবর ও সর্বশেষ ২০১৭ সালের ২১ মার্চ তদন্তে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। তদন্তে অগ্রগতি সংক্রান্ত প্রতিটি প্রতিবেদনে প্রায় একই ধরনের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি র্যাব জানিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পরীক্ষাগার থেকে পাওয়া ডিএনএ রিপোর্টে দুজন পুরুষের পূর্ণাঙ্গ প্রোফাইল পাওয়া গেছে। ব্যস এ পর্যন্তই ফলাফল।
জানা গেছে, মামলার ৮ আসামির দুই জন বাড়ির দারোয়ান পলাশ রুদ্র পাল ও কথিত বন্ধু তানভীর রহমান জামিনে আছেন। অপর ছয় আসামি মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু, বকুল মিয়া, কামরুল হাসান অরুণ, রফিকুল ইসলাম, এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির ও আবু সাঈদ কারাগারে রয়েছেন। এ মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার ৮ জনের কেউই এখন পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেনি। এ পর্যন্ত ১৫৮ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে র্যাব।
এ বিষয়ে মামলার বাদী নওশের আলম রোমান বলেন, ‘গত ১২ বছরে আমার চোখের সামনে অনেক আলোচিত হত্যা মামলার বিচার শেষ হয়েছে, আসামিদের শাস্তিও হয়েছে। কিন্তু এমন আলোচিত একটি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন ১২ বছরেও দাখিল করতে পারেনি তদন্তকারী সংস্থা। এখনও কেন মামলার তদন্ত আটকে আছে সে প্রশ্ন আমাদের।