বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:১২ পূর্বাহ্ন

শ্রীমঙ্গলের চা বাগানগুলোতে শিক্ষা ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসছে

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে পিছিয়ে পড়া চা জনগোষ্ঠীর সন্তানদের শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধির লক্ষে ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন ও নতুন ভবন নির্মাণের কাজ এখন শেষ পর্যায়ে।

নির্মাণাধীন এসব ভবনের ১৭টি আগামী মার্চ-এপ্রিলে ও বাকি ২টি ভবন জুন-জুলাইয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেয়া হবে। শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা ও উপজেলা নির্বাহী অফিস সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদফতর এনএনজিপিএস প্রকল্পের অধীন বিগত ২০১৯ সালের এপ্রিলে এসব স্কুলের নতুন ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করে।

জানা গেছে, সরকার শ্রীমঙ্গলের চা বাগানঅধ্যুষিত অঞ্চলের সুবিধা বঞ্চিত ও অবহেলিত চা শ্রমিক সন্তানদের শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এ প্রকল্প হাতে নেয়।

এতোদিন চা বাগানকেন্দ্রীক এসব বিদ্যালয়গুলি বাগানের মালিকদের নিয়ন্ত্রণে থাকায় ভবনগুলি জরাজীর্ণ অবস্থায় ছিল।

ভবনের অভাবে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের খোলা আকাশের নিচে অথবা মাটিতে মাদুর বিছিয়ে ক্লাস করতে হতো।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগে ১৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ ও অবকাঠামো উন্নয়নের ফলে এসব স্কুলের ৩ হাজার ১৮১ জন শিক্ষার্থী উপকৃত হবে।

তাছাড়া, আধুনিক এসব ভবনের মাঠে শিশু শিক্ষার্থীদের আলাদা ওয়াশরুম, বিনোদনের জন্য খেলাধূলার উপকরণ সরবরাহ করা হবে।

নতুন ভবন নির্মিতব্য স্কুলগুলো হলো- উপজেলার জেরিন, সাঁতগাও ছনখলা, মাইজদিহি কমিউনিটি, আমরাইল ছড়া কমিউনিটি, কালিঘাট, জঙ্গলবাড়ি, শিশিলবাড়ী, সিঁন্দুরখান, টিপরাছড়া, লাখাইছড়া, এমআর খাঁন, হরিণছড়া, উদনাছড়া, কাঁকিয়াছড়া, মির্জাপুর, ভাড়াউড়া, খেজুরিছড়া, পুটিয়াছড়া চা বাগান ও চা বাগান লাগোয়া কুঞ্জবন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী সঞ্জয় মোহন সরকার বলেন, এনএনজিপিএস প্রকল্পের অধীন প্রথম ধাপে আগামী মার্চ এপ্রিলে ১৭টি ও পরবর্তিতে জুন জুলাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয় ধাপে বাকি ২টি স্কুল খুলে দেয়া হবে।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নজরুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, অবহেলিত ও পিছিয়ে পড়া চা জনগোষ্ঠীর সন্তানদের শিক্ষায় এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর একটি সিদ্ধান্তে ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে একযোগে উপজেলার ১৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ শুরু হয়।

এই প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে শ্রীমঙ্গলের চা বাগানগুলোতে শিক্ষা ক্ষেত্রে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে বলে তিনি জানান।

অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, সাবেক চিপ হুইপ স্থানীয় সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ যুগান্তরকে বলেন, চা বাগান এবং নৃত্বাত্তিক জনগোষ্ঠীর সুবিধাবঞ্চিত সন্তানদের শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি ও প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের ঝড়ে পড়া রোধে তাদের সাংবিধানিক অধিকার সুরক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগে সরকার শিক্ষাখাতের ব্যাপক অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ করছে।  এছাড়া উপজেলার বর্ম্মাছড়া চা বাগানে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় নির্মাণ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে।

এটি হবে সিলেট বিভাগে চা বাগানের ভেতর একমাত্র সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়। তিনি বলেন, নতুন ভবন দেখে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ায় উৎসাহ পাবে।

শিশুদের শিক্ষায় উৎসাহ ও তাদের স্কুলমুখী করতে বিদ্যালয়ে খাবার, বই খাতা সরবরাহ ও যাতায়াতসহ সব ধরনের সুযোগ সুবিধা দেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: