সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:২২ অপরাহ্ন

হাতীবান্ধায় শাশুড়িকে নিয়ে জামাই উধাও: শশুর কর্তৃক থানায় অভিযোগ দায়ের

(লালমনিরহাট) প্রতিনিধি :: লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় বউকে মারধর করে ফেলে রেখে শাশুড়িকে নিয়ে জামাইয়ের পলায়নের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্ত্রীকে ফিরে পেতে জামাইয়ের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন শ্বশুর।

মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে হাতীবান্ধা থানায় এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন শ্বশুর নাছির উদ্দিন (৫০)।

মামলার বিবরন ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে অভিযুক্ত জামাই এমদাদুল ইসলাম ওরফে এনদা (৩৫) উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের রমনীগঞ্জ গ্রামের তরিফ উদ্দিনের ছেলে। তিনি বড়খাতা বাজারের হাজি জামে মসজিদ এলাকার অটোরিকশার পার্স ব্যবসায়ী। গত ২১ জানুয়ারি তার স্ত্রী নাজনীন বেগম( ২২) কে মারধর করে শাশুড়ি আছিতোন নেছাকে নিয়ে নিরুদ্দেশ হয়। এদিকে তার নির্যাতনে আহত স্ত্রী নাজনী বেগম (২২) বর্তমানে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসাধীন।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, দেড় বছর আগে নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার উত্তর সোনাখুলি গ্রামের নাছির উদ্দিনের মেয়ে নাজনীন বেগমকে বিয়ে করেন এমদাদুল ইসলাম এনদা। বিয়ের পর থেকে জামাই-শাশুড়ির মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায়ই মেয়ের বাড়ি বেড়াতে আসতেন শাশুড়ি। এ সময় স্ত্রীকে ছেড়ে শাশুড়ির প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েন জামাই এমদাদুল। মায়ের সঙ্গে এমন সম্পর্ক দেখে প্রায়ই স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া হতো নাজনীন বেগমের।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন স্ত্রী নাজনীন বেগম বলেন, বিয়ের পর সংসার ভালোই চলছিল। কিন্তু কী থেকে কী হলো নিজেও জানি না। আমার মা আমার স্বামীর বাড়িতেই বেশি সময় থাকতেন। আমার চেয়ে মায়ের সঙ্গেই বেশি সম্পর্ক গড়ে ওঠে আমার স্বামীর। কয়েক দিন আগে নিজ বাড়িতে মায়ের সঙ্গে আমার স্বামীর মেলামেশা দেখে ফেলি। এতে স্বামী আমাকে মারধর করে সাতদিন ঘরে তালা দিয়ে আটকে রাখে। পরে রাতে অসুস্থ অবস্থায় দরজা ভেঙে পালিয়ে এসে খালার বাড়িতে আশ্রয় নিই এবং হাতীবান্ধা হাসপাতালে ভর্তি হই। এ সুযোগে আমার স্বামী আমার মা কে নিয়ে সটকে পড়েন। নিরুপায় হয়ে আমি হাতীবান্ধা থানায় একটি নির্যাতনের অভিযোগ ও দিয়েছি।

নাজনী বেগমের খালা শাহিনা বেগম (৩৫) বলেন,১০ দিন আগে আমার বাড়িতে জামাই এমদাদুল ইসলাম ও আমার বড় বোন আছিতোন নেছা (৪০) আসেন। এরপর একদিন বাড়িতে অবস্থান করেই বড় বোনকে নিয়ে জামাই পালিয়ে যান। সেই থেকে আজ পর্যন্ত বোনের কোনো খোঁজ পাচ্ছি না। শুনতে পাচ্ছি, তিনি নাকি আমার বোনকে বিয়ে করেছেন।

শ্বশুর নাছির উদ্দিন বলেন, আমি দিন মুজুরির কাজে নোয়াখালীতে গেলে আমার স্ত্রী জামাই এমদাদুলের বাড়িতে থাকতেন। নোয়াখালী থেকে ফিরে এসে দেখি জামাইয়ের বাড়িতে আমার স্ত্রী নেই। জামাইয়ের কাছে জানতে চাইলে সঠিক উত্তর না পেয়ে স্ত্রীকে ফিরে পেতে জামাইয়ের বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ করেছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জামাই এমদাদুল ইসলাম এনদা বলেন, আমার স্ত্রী রাতে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছেন। বিষয়টি আমি এলাকার সবাইকে জানিয়েছি। তবে শাশুড়ি আছিতোন নেছাকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।

এ বিষয়ে উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আমিন সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি বিষয়টি শুনে থানায় অভিযোগ করতে বলেছি।

হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনার একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: