সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:০৯ অপরাহ্ন

কালীগঞ্জে ভোগদখলীয় সম্পত্তি দখল করে মন্দির নির্মাণের অভিযোগ

কাজী আসাদুজ্জামান খোকন, লালমনিরহাট প্রতিনিধি :: লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় আইনুল হক নামে একজন অসহায় লোকের ক্রয় কৃত ভোগদখলীয় সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করে মন্দির নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে আদালত ১৪৪ ধারা জারি করলেও তা মানছেনা কাকিনা রাজস্মৃতি সার্বজনীন মন্দির কমিটির কেউ।

কাগজপত্র থেকে জানা যায় যে, ১৯৪০ সালের সিএস মোতাবেক উক্ত জমির মালিক কুসুমকুমারী দেববা। তিনি উক্ত জমি ১৯৫৪ সালে খোরকান আলী ওরফে কোরবান আলীর নিকট ২৮ শতাংশ জমির মধ্যে ৪ শতাংশ জমি মন্দিরের জন্য দান করে অবশিষ্ট ২৪ শতাংশ জমি বিক্রয় করেন। ক্রয়সুত্রে উক্ত জমি ১৯৬২ সালে ২৭ শতাংশ জমি খোরকান আলী ওরফে কোরবান আলীর নামে এস এ রেকর্ড ভুক্ত হয়।

কোরবান আলী উক্ত জমি ১৯৭৪ সনে এসএ রেকর্ড মূলে ফজলুল হক ও আইনুল হক এর নিকট বিক্রয় করলে ১৯৯০ সনের বিএস রেকর্ডে ফজলুল হক ও আমিনুল হকের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৭৪ সন হতে ২০১৮ সন পর্যন্ত উক্ত ক্রয় কৃত ২৭ শতাংস সম্পত্তি ভোগ দখল ও খাজনা পরিশোধ করে আসছিলেন ফজলুল হক ও আইনুল হক এ দুভাই।

সরেজমিনে গিয়ে ১২ আগস্ট দেখা যায় যে, মন্দির কমিটির পক্ষে লোকজন বাউন্ডারি ওয়ালের কাজ চলমান রেখেছেন। এ সময় তাদের নিকট মন্দির কমিটির লোকজনের সাথে যোগাযোগের জন্য মোবাইল নম্বর চাওয়া হলে উপস্থিত লোকজন তা দিতে অস্বীকার করেন। ফলে মন্দির কমিটির সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে জমির মূল মালিক ফজলুল হক বলেন, জমিটি আমরা ভোগ দখল করে আসছিলাম কিন্তু হঠাৎ করে উক্ত জমিটি রাতের আধারে মন্দির কমিটির লোকজন জবরদখল করে ফেলে এবং মন্দিরের জমি বলে দাবি করেন। এ বিষয়ে মন্দির কমিটি লালমনিরহাট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আদালত একটি নিষেধাজ্ঞা জারি করে কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মন্দির কমিটির লোকজন উক্ত জমি বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ কাজ শুরু করেন।

এ বিষয়ে আমি গত ৬ আগস্ট কালীগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কালীগঞ্জ থানার এসআই নাজমুল হক সরেজমিনে ঘটনা পরিদর্শন করে মন্দির কমিটিকে কাজ বন্ধ রাখার জন্য বলেন। মন্দির কমিটির লোকজন নিষেধ অমান্য করে কাজ চলমান রেখেছেন।

এরই প্রেক্ষিতে ৮নং কাকিনা ইউনিয়ন পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি বাবু অশ্বিনী কুমার পাল পাল এর সহিত যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কোন সত্যে ঐ মন্দির কমিটির লোকজন জায়গাটি দাবি করেছেন এ বিষয়ে আমার তেমন কিছু জানা নেই। তবে বিষয়টি দ্রুত খবর নিয়ে দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন তিনি।

অপরদিকে গত ১১ আগস্ট (বুধবার) জমির মূল মালিক ফজলুল হক ও আইনুল হক কোন উপায় না পেয়ে লালমনিরহাট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের ফলে উক্ত জমির উপর আদালত ১৪৪ ধারা নির্দেশনা জারি করেছেন।

এ বিষয়ে কালিগঞ্জ থানার ওসি আরজু মোঃ সাজ্জাদ হোসেন আদালতের নির্দেশনার কথা স্বীকার করে বলেন, আদালতের নির্দেশনা পেয়ে তাৎক্ষণিক এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: