মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৪১ অপরাহ্ন

রপ্তানির সুযোগে চামড়া কেনার প্রতিযোগিতা

নিউজ ডেস্ক : এবার ঈদুল আজহার কোরবানির পশুর লবণযুক্ত চামড়ার কদর বেড়েছে। কাঁচা ও ওয়েটব্লু চামড়া রপ্তানির সুযোগ দেওয়ায় চামড়া কিনতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন ট্যানারি মালিকরা। তারা এখন প্রতিযোগিতা করে চামড়া কেনায় দরও বাড়ছে।

গত বৃহস্পতিবার ও গতকাল শনিবার দু’দিনে পুরান ঢাকার লালবাগের পোস্তার আড়তের অর্ধেকের বেশি চামড়া বিক্রি হয়ে গেছে। আমিনবাজার, টঙ্গী, সোনারগাঁসহ ঢাকার আশপাশের এলাকার চামড়াও বেশির ভাগ কেনাবেচা হয়েছে। গতকাল থেকে ঢাকার বাইরের চামড়া কেনা শুরু করেছেন ট্যানারি মালিকরা।
যদিও ঈদের তিন দিন কোরবানির পশুর চামড়ায় নির্ধারিত দর মেলেনি।

গত বছরের মতো এবারও দর বিপর্যয়ের কারণে অনেক এলাকায় চামড়া নষ্ট হয়েছে। চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার চামড়া রাস্তায় ও নদীতে ফেলে দিয়েছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। কেউ কেউ মাটির নিচে পুঁতে রেখেছেন। তবে যারা লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করেছেন, তারা এখন ভালো দাম পাচ্ছেন বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

গতকাল পোস্তার আড়তে ছোট-বড় সব চামড়া এক লটে বিক্রি হয়েছে। এতে প্রতিটি গরুর চামড়া গড়ে ৯০০ থেকে এক হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে বলে জানান পোস্তার আড়তদারদের সংগঠন বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আফতাব খান। তিনি বলেন, ট্যানারিগুলো এখন ব্যাপক চামড়া কিনছে। দু’দিনে পোস্তার আড়তের অর্ধেকের বেশি চামড়া বিক্রি হয়েছে। আগামী দু-চার দিনে বাকি চামড়া বিক্রি হয়ে যাবে। এখন চামড়ার বেশ কদর আছে। ঢাকার আশপাশে ও ঢাকার বাইরের চামড়াও পুরোদমে কেনাবেচা চলছে। বিশেষ করে নাটোর, কুষ্টিয়া, পাবনা, ঈশ্বরদী, বগুড়া, ময়মনসিংহসহ বেশ কিছু এলাকার চামড়ার মান ভালো। এই চামড়া এখন কিনছে ট্যানারিগুলো।

তিনি বলেন, আড়তদার ব্যবসায়ীদের কাঁচা চামড়া রপ্তানির সক্ষমতা নেই। তাদের সঙ্গে বিদেশি ক্রেতাদের যোগাযোগও নেই। রপ্তানির এ সুযোগ কাজে লাগাতে পারবেন শুধু ট্যানারি মালিকরা।

বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন রিটেইল মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নওয়াব আলী বলেন, এরই মধ্যে পোস্তার আড়তের অধিকাংশ চামড়া বিক্রি হয়ে গেছে। ওয়েটব্লু করে রপ্তানির সুযোগ দেওয়ায় অনেক ট্যানারি মালিক এখন চামড়া কিনে রপ্তানির প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

সাভারের চামড়া শিল্পনগরীতে প্রতিদিনই এখন ট্রাকবোঝাই চামড়া ঢুকছে। রিলায়েন্স ট্যানারির একজন প্রতিনিধি নাম প্রকাশ না করে বলেন, চামড়া কিনতে এখন বেশ প্রতিযোগিতা চলছে। শুরুতে কম দামে কেনাবেচা হলেও এখন লবণযুক্ত চামড়া দ্বিগুণ-তিন গুণ দাম চাইছে।

এবার চামড়ার দর বিপর্যয় ঠেকাতে ঈদুল আজহার আগে চামড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থা। নানা সুবিধা দেওয়া হলেও প্রাথমিক কেনাবেচায় দর বিপর্যয় ঠেকানো যায়নি। সম্প্রতি ট্যানারি মালিক ও আড়তদাররা বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকে চামড়া বিক্রির ক্ষেত্রে ঢাকায় নূ্যনতম দর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়া ৩৫ টাকা দাবি করেছেন আড়তদাররা। আর ট্যানারি মালিকরা প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়ার ৪০ টাকা সর্বোচ্চ দর নেওয়ার জন্য আড়তদারদের কাছে দাবি করেন। উভয় পক্ষের ব্যবসায়ীরা ৩৫ থেকে ৪০ টাকা বর্গফুটে গরুর চামড়া কেনাবেচায় সম্মত হয়েছেন। বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন বৈঠকে এই দরে চামড়া কেনাবেচার সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: