শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৩১ পূর্বাহ্ন
সব ধরণের ক্রিকেট থেকে তিন বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন উমর আকমল। বাজিকরদের কাছ থেকে পাওয়া ম্যাচ গড়াপেটার প্রস্তাবের তথ্য গোপন করার কারণে এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড।
ম্যাচ ফিক্সিং ইস্যুতে অবধারিতভাবে সবার আগে নাম চলে আসে পাকিস্তানের। সেলিম মালিক, আমির, আসিফ, সালমান বাটের পর এবার তালিকায় নতুন নাম উমর আকমল। আকমল ব্রাদার্সে সবচেয়ে প্রতিভাবানের তকমা নিয়ে অভিষেক ২০০৯ এ। ডানেডিনে সাদা পোশাকে অভিষেকেই সেঞ্চুরি। কিন্তু এরপর ব্যাটিংয়ের চেয়ে শৃঙ্খলা ইস্যুতেই বেশি সময় কেটেছে আকমল ভাইদের কনিষ্ঠজনের।
১১ বছরের ক্যারিয়ারে অর্জনের চেয়ে বেশি মনোযোগ বিতর্কে। ব্যাটিংয়ের চেয়ে আগ্রহ বেশি বেটিংয়ে। এর আগে, ২০১৫ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে গড়াপেটার প্রস্তাব পাওয়ায় কথা আকমল জানিয়েছিলেন এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে। হেড কোচ মিকি আর্থারের সমালোচনা করে নিষেধাজ্ঞা পেয়েছিলেন তিন মাসের জন্য, ফিটনেস টেস্টে ব্যর্থ হয়ে ক্ষোভ ঝেড়েছেন ট্রেনারের ওপর, তবে এবার বিষয়টি গুরুত্বর। পাকিস্তান সুপার লিগের পঞ্চম আসর শুরুর আগে ম্যাচ পাতানো সংক্রান্ত তথ্য পান উমর। অ্যান্টি করাপশন কোড অনুযায়ী, সে তথ্য বোর্ডকে জানাননি। এরপর ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে তাকে সবধরনের ক্রিকেট থেকে বরখাস্ত করা হয়। পিসিবির আনা অভিযোগের বিরুদ্ধে আপিল না করায় শুনানি হয়নি, সরাসরি শাস্তি দেয় ডিসিপ্লিনারি কমিটি।
পরিস্থিতি বলছে ১৬ টেস্ট, ১২১ টি ওয়ানডে ও ৮৪টি টি টোয়েন্টিতেই থেমে যেতে হচ্ছে আকমলকে। তার নিষেধাজ্ঞায় আবারো কালো ছায়া পাকিস্তান, তথা পুরো ক্রিকেট বিশ্বে।
উমরের নিষেধাজ্ঞায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সাবেকরা, দাবী তুলেছেন আরো কঠিন শাস্তির।
পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার রমিজ রাজা বলেন, অর্থ-খ্যাতি কিছুর অভাব ছিলোনা উমরের। ওকে একাধিকবার পরামর্শ দিয়েছিলাম বাজে বন্ধুর সংস্পর্শে না যেতে। ওদের সাথে মিশে উমর এটাই উপহার দিল পাকিস্তান ক্রিকেটকে। প্রতি বছর, প্রতি মৌসুমে এমন জঘন্য কিছু ঘটনা ঘটছে পাকিস্তান ক্রিকেটে। সিনিয়ররা যে ভুল করে সেটা থেকে নতুনরা কিছু শিখছেনা। আমি পরামর্শ দেবো ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িতদের আরো কঠিন শাস্তি দেয়ার জন্য। না হলে পাকিস্তান ক্রিকেট এমন অবমাননা থেকে কখনো মুক্ত হতে পারবেনা।
আগামী ২৯ মে ৩০ বছর পূর্ণ করবেন আকমল। এই বয়সে লম্বা সময় ক্রিকেটের বাইরে থাকার পর আবারো ফেরাটা তার জন্য অনেক কঠিন হবে, তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। ১৬ টেস্টের পাশাপাশি ১২১ ওয়ানডে ও ৮৪টি টি-টোয়েন্টি খেলা আকমল দেশের হয়ে সবশেষ মাঠে নেমেছিলেন ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি রান আছে তার।