বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০:২১ অপরাহ্ন

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার অভিযোগ

নিউজ ডেস্ক :: যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবনে ট্রাম্পের সমর্থকেরা সহিংস হামলা চালিয়েছে। বুধবার ক্যাপিটল হিলে জো বাইডেনের জয়কে স্বীকৃতি দেয়ার লক্ষে যখন যৌথ অধিবেশন চলছিল তখনই উচ্ছৃঙ্খল জনতা এ হামলা চালায়। এই ঘটনা আমরিকার ইতিহাসে নজিরবিহীন। হামলাকে কেন্দ্র করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান প্রচেষ্টারও অভিযোগ উঠেছে।

নির্বাচনের ফলাফল উল্টে দেয়ার দাবি জানিয়ে ট্রাম্পের ব্যতিক্রমী সমাবেশের কিছু সময় পরেই পতাকা হাতে একদল উচ্ছৃঙ্খল লোক ব্যারিকেড ভেঙে ক্যাপিটল হিলে ঢুকে পড়ে। তারা ভেতরে প্রবেশ করে ভাঙচুর চালায়। ভবনের ভেতরে গোলাগুলি হয়। এ সময়ে একজন নারী প্রাণ হারায়। অনেকেই আহত হয়। পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছোঁড়ে। আইন প্রণেতাদের সুরক্ষা মাস্ক সরবরাহ করে পুলিশ তাদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়।

নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি একে ‘বিদ্রোহ’ হিসেবেও উল্লেখ করেছেন। তিনি দাবি করেন, ট্রাম্প যেন অবিলম্বে টেলিভিশনে গিয়ে তার সমর্থকদের ক্যাপিটল হিল ছেড়ে যেতে বলেন।

ডেলওয়ারে নিজ বাড়িতে থেকে বাইডেন এ ঘটনাকে গণতন্ত্রের ওপর নজিরবিহীন হামলা হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এটি বিরোধিতা নয়, এটি উচ্ছৃঙ্খলতা। এটি এখনই বন্ধ করা উচিত।
এরপর পরই ট্রাম্প একটি ভিডিও প্রকাশ করেন। এতে তিনি তার সমর্থকদের ক্যাপিটল হিল ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। কিন্তু নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগে অটল থাকেন।

ট্রাম্প বলেন, আমাদের শান্তিতে থাকতে হবে। সুতরাং বাড়ি যাও। আমরা তোমাদের ভালোবাসি। তোমরা খুব বিশেষ। তার এ ভিডিও সহিংসতাকে উস্কে দেবে এমন অভিযোগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কর্তৃপক্ষ তা সাইট থেকে সরিয়ে দিয়েছে।

কর্তৃপক্ষ বলছে, চার ঘন্টার চেষ্টায় তারা সহিংসতাকারীদের ক্যাপিটল হিল থেকে সরিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছেন। কিন্তু শত শত ট্রাম্প সমর্থক এখনও পার্লামেন্ট ভবনের চারপাশে রয়েছে। যদিও নগরজুড়ে মেয়র মুুরিয়েল বাউজার সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করেছেন। এদিকে, এ হামলার ঘটনায় প্রেসিডেন্ট অভ্যুত্থান ঘটাচ্ছেন বলেও আতংক ছড়িয়ে পড়ে।

একাধিক ডেমাক্রেট আইন প্রণেতা এ বিষয়ে সতর্ক করে টুইট করেন।

হামলার আগে ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের বাইরে ক্ষুব্ধ ও কড়া বক্তৃতার মাধ্যমে তার সমর্থকদের ক্যাপিটল হিলের দিকে যাত্রা করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। তিনি উৎফুল্ল সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা কখনই ছাড় দেব না। আমরা কখনই পরাজয় স্বীকার করবো না। বাইডেনের জয়কে স্বীকৃতি না দিতে তিনি রিপাবলিকান আইন প্রণেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।

ট্রাম্প বলেন, তিনি আশা করছেন মাইক পেন্স সে সাহস দেখাবে।

এদিকে, এ হামলার একদিন আগে মঙ্গলবার জর্জিয়ার গুরুত্বপূর্ণ দুটি সিনেট আসন জিতে নেয় ডেমোক্রেট দল। এতে সিনেটে ডেমোক্রেটদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জিত হয়েছে। ঐতিহাসিকরা বলছেন, ১৮১৪ সালের পর এ প্রথম মার্কিন পার্লামেন্টে এ ধরণের ঘটনা ঘটল। এর আগে ১৮১২ সালের যুদ্ধে ব্রিটিশরা এতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল।

গত দুই শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে কংগ্রেসের এই যৌথ অধিবেশন শান্ত ও আনুষ্ঠানিক ভাবেই আয়োজিত হয়ে আসছে। যৌথ এ অধিবেশনে নির্বাচনে জয়ী প্রার্থীকে স্বীকৃতি দেয়া হয়। গত ৩ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেন ৭০ লাখেরও বেশি ভোটে রিপাবলিকান দলের ট্রাম্পকে হারিয়েছেন। এছাড়া, বাইডেন ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পেয়েছেন ৩০৬টি এবং ট্রাম্প পেয়েছেন ২৩২টি।

এসি


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: