শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:১৩ অপরাহ্ন

শিরোনাম
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে  প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হবে- সুবর্ণচর উপজেলা আ.লীগ হাতিয়ার উন্নয়নে সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ কর্মসূচিকে কাজে লাগানো হবে – মোহাম্মদ আলী এমপি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ৩৯ বছর পর জমি ফিরে পেলেন যদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবার শিবালয়ে ১৫তম  মাই টিভির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত  ক্রীড়াবিদরা দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনছে- ধর্মমন্ত্রী উজিরপুরে সৎসঙ্গ ফাউন্ডেশনের সেমিনার অনুষ্ঠিত শিবালয়ে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিবাড়ি খেলা অনুষ্ঠিত লঞ্চের দড়ি ছিঁড়ে ৫ জনের মৃত্যু : আসামিদের তিন দিনের রিমান্ড ঈদের দিনে সদরঘাটে দুর্ঘটনায় ঝরল ৫ প্রাণ সৌদির সাথে মিল রেখে নোয়াখালীর ৪ গ্রামে ঈদ উদযাপন

মারা গেছেন বাংলাদেশের বন্ধু সাংবাদিক সাইমন ড্রিং

নিউজ ডেস্ক :: একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নিধনযজ্ঞের খবর যিনি বিশ্বের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন, বাংলাদেশের সেই অকৃত্রিম বন্ধু ব্রিটিশ সাংবাদিক সাইমন ড্রিং মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।

সাইমন ড্রিংয়ের আত্মীয় ক্রিস বার্লাস জানান, শুক্রবার রুমানিয়ার একটি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের সময় তার মৃত্যু হয়।

তিনি জানান, কিছুদিন ধরে সাইমন হার্নিয়ার সমস্যায় ভুগছিলেন, সে কারণেই রোমানিয়ায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। সেখানে অস্ত্রোপচারের সময় তার হার্ট অ্যাটাক হয়। ডাক্তাররা তাকে আর বাঁচাতে পারেননি।

সাইমন ড্রিং বৈদেশিক সংবাদদাতা, টেলিভিশন উপস্থাপক এবং তথ্যচিত্র নির্মাতা হিসেবে রয়টার্স, টেলিগ্রাফ ও বিবিসির হয়ে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাত্রিতে পাকিস্তানি বাহিনী যে ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ চালায়; তার প্রতিবেদনেই বিশ্ববাসী প্রথম জানতে পারে। ১৯৭১ সালে সাইমন দ্য টেলিগ্রাফের যুদ্ধ প্রতিবেদক হিসেবে কম্বোডিয়ায় সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন। ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে টেলিগ্রাফের সম্পাদক তাকে লন্ডন থেকে ফোন করে ঢাকায় চলে আসতে বলেন।

৬ মার্চ ঢাকা আসেন সাইমন ড্রিং। ঢাকায় আসার পরদিনই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ শোনার সুযোগ হয় তার। মঞ্চের খুব কাছে দাঁড়িয়ে পুরো ভাষণ শুনেছিলেন সাইমন। এরপর ঢাকায় বিভিন্ন কাজ করছিলেন। এভাবেই পাড় হয়ে যায় দুই সপ্তাহ। এসে যায় ২৫ মার্চ। তিনি জানতে পারেন পশ্চিম পাকিস্তানের ইয়াহিয়া খান কোনো সমঝোতা ছাড়াই ঢাকা ত্যাগ করছেন। পূর্বের অভিজ্ঞতা থেকে সাইমন ধারণা করেন ঢাকায় ভয়ংকর কিছু হতে যাচ্ছে।

এরইমধ্যে বিদেশি সব সাংবাদিকদের একসঙ্গে করে রাখা হয় ইন্টারকন্টিনেন্টালে। তাদের গার্ড দেয় পাকিস্তানের মিলিটারি বাহিনী। তার সন্দেহ আরও বেড়ে যায়। সব সাংবাদিক জানতে পারেন ঢাকায় গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করেছে পাকিস্তানের সেনারা। রাতেই পাকিস্তানের গোয়েন্দা বিভাগের মেজর সালেক সিদ্দিকী নিরাপত্তার অজুহাতে সব বিদেশি সাংবাদিকদের ঢাকা ত্যাগের নির্দেশ দেন। কিন্তু নিজ ইচ্ছায় বাংলাদেশে থেকে যান সাইমন।

বাঙালি কর্মচারীদের সঙ্গে সখ্য করে হোটেলেই লুকিয়ে পড়েন সাইমন। ৩২ ঘণ্টা সময় কাটান হোটেলের লবি, ছাদ, বার এবং কিচেনে। পরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ঘুরে প্রত্যক্ষ করেন গণহত্যার বাস্তব চিত্র। তার মাধ্যমেই ডেইলি টেলিগ্রাফে ১৯৭১ সালের ৩০ মার্চ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রথম খবর প্রকাশ হয়।

একাত্তরে বাংলাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়ানোয় এই ব্রিটিশ সাংবাদিককে ২০১২ সালে মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননায় ভূষিত করে বাংলাদেশ সরকার।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: