বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৭:৪৯ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম
ভিসা নীতিতে বিদেশগামী উচ্চশিক্ষার্থীদের মাঝে কোন প্রভাব ফেলবে না : শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি চৌদ্দগ্রামে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রশাসনের সাথে মতবিনিময় সভা সুন্দরগঞ্জে জাতীয় পাটির দ্বি-বাষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত যেসব দেশের গণমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র আমেরিকায় না গেলে কারও ক্ষতি হবে না: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলার বিকল্প নেই – প্রতিমন্ত্রী ভারত যাওয়ার ৪৮ ঘণ্টা আগে ভিসা পেলো পাকিস্তান প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান সিলেটে স্ট্যাপ, কার্টিজ পেপার ও কোর্ট ফি তীব্র সংকট ২২ দিন মা ইলিশ রক্ষায় সচেতনতামূলক সভা

ঋণখেলাপিদের ছাড় বন্ধের সুপারিশ

খেলাপি ঋণের ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় দেওয়ার নীতি থেকে সরে আসার সুপারিশ করেছে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক। একই সঙ্গে ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে শিথিলতা থেকেও সরে আসার প্রস্তাব দিয়েছে সংস্থা দুটি। উল্লেখ্য, বৈশ্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইএমএফ-এর কাছে সরকার ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ চেয়েছে। এ বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা করতেই ১২ জুলাই আইএমএফ-এর একটি মিশন ঢাকায় এসেছিল।

ওই সময়ে তারা অর্থ মন্ত্রণালয়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনবিআর-এর সঙ্গে বৈঠক করে। বস্তুত ওই আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আইএমএফ একটি প্রতিবেদন পাঠিয়েছে, যেখানে ব্যাংক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় খেলাপি ঋণের নীতিতে পরিবর্তন আনার কথা বলা হয়েছে।

অন্যদিকে, সম্প্রতি প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের এশিয়াবিষয়ক প্রতিবেদনেও বাংলাদেশের ব্যাংক খাত নিয়ে একই ধরনের মন্তব্য করে বলা হয়েছে-ব্যাংকের ঋণ পরিশোধে গ্রাহককে অব্যাহতভাবে ছাড় দেওয়া হলে ব্যাংকের সম্পদ বা ঋণের মান কমে যাবে। উপরন্তু গ্রাহক ঋণ পরিশোধে অনাগ্রহী হয়ে উঠবে। এতে কোনো কোনো ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা অতিমাত্রায় দুর্বল হয়ে যেতে পারে এবং তাতে আর্থিক খাতে সম্পদের মানে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে, যা এ খাতকে বড় ধরনের দুর্বলতার দিকে নিয়ে যাবে।

আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী কোনো ঋণের কিস্তি পরিশোধের শেষদিন থেকে তিন মাস অতিক্রম হলেই তাকে খেলাপি হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে এটি ছয় মাস করা হয়েছে। মূলত করোনার পর ২০২০ সাল থেকে ঋণ পরিশোধে ছাড় দেওয়া হচ্ছে, যা ২০২১ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এরপর ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে বৈশ্বিক মন্দা প্রকট হওয়ার প্রেক্ষাপটে উদ্যোক্তাদের দাবির মুখে ঋণ পরিশোধে বিভিন্ন খাতে ছাড় দেওয়া হয়েছে, যা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বহাল থাকবে।

এ অবস্থায় প্রায় তিন বছর ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কাছ থেকে ঋণ আদায় করতে পারছে না। বলার অপেক্ষা রাখে না, গ্রাহকদের মধ্যে ঋণ পরিশোধে চাপ না থাকার কারণে এ বিষয়ে তারা শিথিলতা দেখাতে পারে, যা পরবর্তী ঋণ পরিশোধে গ্রাহকদের সক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে। এ অবস্থায় ব্যাংক খাতে সুশাসন ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি খেলাপি ঋণের লাগাম টেনে ধরতে সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি বলে মনে করি আমরা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, গত ১০ বছরে দেশে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় সাড়ে চার গুণ। খেলাপি ঋণ না কমে বরং দিনদিন বৃদ্ধি পাওয়ার অন্যতম কারণ হলো, ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া। এছাড়া ব্যাংকগুলোর শীর্ষ পর্যায়ে থাকা ব্যক্তিদের দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণেও খেলাপি ঋণ, অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম-জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের ঘটনা দিনদিন বাড়ছে, যা কঠোরভাবে রোধ করা প্রয়োজন।

বস্তুত ঋণখেলাপিদের আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধতে ব্যাংক কোম্পানি আইন কঠোর করার পাশাপাশি এর বাস্তবায়নে সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। সরকার এ ব্যাপারে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে, এটাই প্রত্যাশা।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: