শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১১:১৬ পূর্বাহ্ন

বিপজ্জনক সাঁকো পেরিয়ে রোজ স্কুল যায় শিশুরা

খালে পড়ার ভয় নিয়ে বিপজ্জনক বাঁশের সাঁকো পেরিয়ে রোজ স্কুল যায় কোমলমতি শিশুরা। বাঁশে ঝুলে খাল পার হওয়ার দুঃসাহসিকতা আর দুর্ভোগের যেন কোনো অন্ত নেই।

শিক্ষার্থীরা বাঁশের ওই সাঁকো দিয়ে স্কুল-কলেজে যাতায়াতকালে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।

এ ছাড়া বাড়িঘর, হাটবাজার, কর্মস্থলে যেতে প্রত্যেককে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদীটি পার হতে হয়।

নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার খারনৈ ইউনিয়নের শ্রীপুর-কাইতাপুর চৌরাস্তা মোড় থেকে ইউনিয়ন পরিষদ হয়ে গোবিন্দপুর বাজার পর্যন্ত গেলে দেখা যায় এ চিত্র।

রাস্তার ভাসনার খালের ওপর একটি ব্রিজের অভাবে বিশ্বনাথপুর, কায়তাপুর, শ্রীপুর, সেনপাড়া, বিলপাড়সহ ১০-১২টি গ্রামের লোকজন বাঁশের সাঁকোতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এ সাঁকোতে প্রতিদিন সব বয়সের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রায় ১০ হাজার লোকজন চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে আসছে।

বৃহস্পতিবার সরেজমিন পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, উন্নয়নের ছোঁয়া বঞ্চিত জীবন ধারায় পিছিয়ে থাকা গ্রামের মানুষদের বাঁশে ঝুলে নদী পার হওয়ার দুঃসাহসিকতা আর দুর্ভোগের যেন কোনো অন্ত নেই।

বাড়িঘর, হাটবাজার, কর্মস্থল ও ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে প্রত্যেককে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদীটি পার হতে হয়। শিক্ষার্থীরা বাঁশের ওই সাঁকো দিয়ে স্কুল-কলেজে যাতায়াতকালে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে আর এলাকার অসুস্থ লোকজন ওই ভাঙা সাঁকোতে ওঠে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

সেনপাড়া ও বিশ্বনাথপুর গ্রামের বিভিন্ন পাড়ার বাসিন্দা জাহেদ মিয়া, অনিমেষ সাংমা, লিনুছ ম্রং, আবদুল হামিদ, আবদুল মতিন , সুইট নকরেক ও সেনোরা বানুর অভিযোগ– দেশজুড়ে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অব্যাহত থাকলেও কী কারণে আর কোন অপরাধে তাদের গ্রামে আজও এই করুণ পরিণতি বইছে তা কেউ বলতে পারেন না।

সরকার নির্বাচিত করতে আর সবার মতো তারাও ভোট দেন, তবে কেন এই বৈষম্য?

সেনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবদুল মান্নান যুগান্তরকে বলেন, প্রতিদিন বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী ওই ভাঙা সাঁকো দিয়ে জীবনের চরম ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যাওয়া-আসা করছে। এখানে একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হলে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ এলাকার ১০-১২টি গ্রামের লোকজনের ভোগান্তির অবসান হবে।

খারনৈ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওবায়দুল হক যুগান্তরকে বলেন, প্রাই দুই বছর আগে ওই খালের ওপর ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে ৫৬ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছিল।

এখন ইউনিয়ন পরিষদে বরাদ্দ না থাকায় তা নতুন করে নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না। উপজেলা পরিষদ যদি বরাদ্দ দেয় তা হলে অতিদ্রুত সময়ের মধ্যেই নতুন করে আরেকটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে দেয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, সমস্যা কাটিয়ে ওঠার জন্য একটি স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি। গ্রামবাসীর এ দুর্ভোগে আমি নিজেও লজ্জিত।

কলমাকান্দা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুল খালেক তালুকদার যুগান্তরকে বলেন, ভাসন খালের ওপর বাঁশের সাঁকোর স্থলে একটি পাকা সেতু নির্মাণ করার লক্ষ্যে সয়েল টেস্ট করা হয়েছে। স্থায়ী সেতু নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: