বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০২:১৪ পূর্বাহ্ন

কেউ অপরাধ করলে তার কঠোর শাস্তি হোক: স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজি

নিউজ ডেস্ক : করোনাকালে স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতি নিয়ে নানামুখী চাপে সম্প্রতি সরে যাওয়া স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, কেউ অপরাধ করলে তার কঠোর শাস্তি হোক- এটা তিনি চান। এই বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।

বুধবার দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। দুদক পরিচালক ও অনুসন্ধান টিমের প্রধান মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্ব টিমের সদস্যরা রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সকাল দশটা থেকে প্রায় ‎ছয় ঘণ্টা সাবেক এই ডিজিকে মাস্ক, পিপিইসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যসামগ্রী কেনাকাটায় দুর্নীতির অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

রিজেন্ট হাসপাতালে করোনার নমুনা পরীক্ষায় ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করে প্রতারণা ও দুর্নীতির অভিযোগে ডা. আবুল কালাম আজাদকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। দুদক পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। নমুনা পরীক্ষার জন্য সমঝোতা চুক্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক এই ডিজি ও রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম সই করেছিলেন। নানা দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার মো. সাহেদ রিমান্ড শেষে বর্তমানে কারাগারে আছেন।

এদিন বুধবার করোনার নমুনা পরীক্ষায় রিজেন্ট হাসপাতালের দুর্নীতির বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক পরিচালক ডা. মো. আমিনুল হাসান, উপ-পরিচালক মো. ইউনুস আলী ও গবেষণা কর্মকর্তা ডা. মো. দিদারুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এদিন অধিদফতরের উপ-পরিচালক ডা. মো. শফিউর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হলেও তিনি হাজির হননি।

সাংবাদিকদের এক প্রশেুর জবাবে ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ঔষধাগার সিএমএসডি কর্তৃক স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী ক্রয় সম্পর্কে বিভিন্ন অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। সাবেক মহাপরিচালক হিসেবে এই বিষয়ে আমি কী জানি তা শোনার জন্য দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তারা আমাকে কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে আসার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। আমি যা জানি তা তাদের বিস্তারিত বলেছি। তদন্তাধীন বিষয় সম্পর্কে এই মুহূর্তে আমার পক্ষে এর চেয়ে বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘করোনা থেকে নিজেও রক্ষা পাইনি। বিশ দিন ধরে ভুগে চিকিৎসকদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছি। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরদিনই কাজে যোগ দিয়েছি। কারণ কোভিড এমন একটি মহাদুর্যোগ যে বিশ্রামের কথাও ভাবতে পরিনি।’

স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক ডিজি বলেন, ‘একজন কঠোর পরিশ্রমী, নিষ্ঠাবান, সৎ, দক্ষ, সফল ও মেধাবী কর্মকর্তা হিসেবে সারাজীবন কাজ করেছি। আমি একজন অহংকার ও অহমিকামুক্ত সরল এবং সজ্জন ব্যক্তি। জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার সবক্ষেত্রে আমার পর্যাপ্ত জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং কর্মদক্ষতা আছে। কোভিডের মতো মহাদুর্যোগে যাতে লাখ লাখ মানুষের জীবনহানি না ঘটে সেজন্য আমার জ্ঞান, অভিজ্ঞতা বিবেকবোধ ও সদিচ্ছা থেকে নিজের জীবনকে তুচ্ছ মনে করে কাজ করেছি।’

ডা. আবুল কালাম আজাদ আরও বলেন, ‘২০১৬ সাল থেকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করে আসছিলাম। আমি লক্ষ করছিলাম যে আমাকে নিয়ে অপপ্রচারের অপচেষ্টা শুরু হয়েছে। পদ আগলে রাখা আমার কাছে সম্মানের বিষয় নয়। তাই বিবেকতাড়িত হয়ে গত ২১ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের পদ থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিয়েছি।’


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: