বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৪৫ পূর্বাহ্ন

গলাকেটে মাটি চাপা দিলো বন্ধুর লাশ

নিউজ ডেস্ক : চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে এক বন্ধুকে আরেক বন্ধু জবাই করে হত্যা করেছে। হত্যাকাণ্ডের দুই দিন পর শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ একটি ঘরে মুরগীর খোয়ারের (খামার) প্রায় তিন ফুট মাটির নীচ থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছে। শনিবার এলাকাবাসী হত্যাকারীকে আটক করে পুলিশে দিলে তিনি ঘটনার কথা স্বীকার করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সীতাকুণ্ডের সলিমপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত উত্তর সলিমপুর গ্রামের লাল মিয়া কলোনীতে দীর্ঘদিন পাশাপাশি বসবাস করতেন হবিগঞ্জ জেলার চুনারঘাট থানার পাইকপাড়ার মো. রমজান আলীর ছেলে রুমেন মিয়া (৩০) ও সীতাকুণ্ডের কেশবপুরের নুরুল হকের ছেলে মো. নুর উদ্দিন (৩৭)।

নুর উদ্দিনের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম বলেন, রুমেন প্রতিমাসে ৩ হাজার টাকায় বিনিময়ে ঘরের খাবার খেত। গত মার্চ মাস থেকে খাবারের টাকা না দেওয়ার কারণে নুর উদ্দিনের সাথে প্রায় সময় ঝগড়া হতো। গত ১৩ আগস্ট হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান নুর উদ্দিন। এরপর থেকে তার স্ত্রী, দুই সন্তানসহ প্রতিবেশিরা সম্ভাব্য সকল স্থানে তাকে খুঁজেও সন্ধান পাননি। এরই মধ্যে বাড়ির পাশে একটি জমিতে মাটি ফেলে মুরগির খামার তৈরি করেন রুমেন মিয়া। নুর নিখোঁজের পর থেকে রুমেনের আচরণে কিছুটা পরিবর্তন লক্ষ্য করেন অন্যান্য বাসিন্দারা। এক পর্যায়ে ১৫ আগস্ট সন্ধ্যার পর তারা রুমেন মিয়াকে চ্যালেঞ্জ করলে তিনি নুরউদ্দিনকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। এতে এলাকার জনপ্রতিনিধিরা পুলিশকে খবর দিয়ে রুমেনকে থানায় সোপর্দ করেন। খবর পেয়ে রাত ১০ টার দিকে হত্যাকারী রুমেনকে নিয়ে সীতাকুণ্ড সার্কেলের এডিশনাল এসপি শম্পা রানী সাহা, থানার ওসি মো. ফিরোজ হোসেন মোল্লা, ওসি (তদন্ত) সুমন বণিক ও সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। পরে রুমেনের দেখিয়ে দেওয়া স্থানে মাটি খুঁড়ে নুর উদ্দিনের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়।

সলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সালাউদ্দিন আজিজ জানান, ১৩ আগস্ট রুমেন মিয়া তার প্রতিবেশি নুর উদ্দিনকে গলাকেটে লাশ মাটি চাপা দিয়ে দেয়। এরপর লাশের উপর মুরগির খামার তৈরি করে তিনি মুরগি পালন শুরু করেন।

সীতাকুণ্ড মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরোজ হোসেন মোল্লা বলেন, নুরউদ্দিনকে হত্যার অভিযোগ তুলে এলাকাবাসী রুমেনকে আদালতে সোপর্দ করে। আমরা তাকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেন। নুর উদ্দিন তার স্ত্রীকে মারধর করত। এসব মারধর দেখে তার ভালো লাগত না তাই রুমেন নুর উদ্দিনকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে।

থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সুমন বণিক বলেন, নুর উদ্দিন তার স্ত্রীকে মারধর করলেও প্রতিবেশি রুমেনের কেন ভালো লাগত না তা বোধগম্য নয়। এতে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: