শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:০৮ পূর্বাহ্ন

বিএমডিসির অনুমোদন মেলেনি: শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) অনুমোদন না পাওয়ায় ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে রাজশাহীর শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজের প্রায় ২শ’ শিক্ষার্থীর। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে। ফলে রোববার থেকে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন কর্মসূচি পালন করছেন। করেছেন মানববন্ধন ও সমাবেশ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাসে ফিরবেন না। বিএমডিসির অনুমোদন না হওয়া নিয়ে কিছুদিন ধরেই শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে চরম অসন্তোষ চলছে। কর্তৃপক্ষ আগের সমস্যার সমাধান না করেই ফের শিক্ষার্র্থী ভর্তি চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ।

রাজশাহীর শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, এই কলেজের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মধ্যে গত বছর মার্চে মাত্র চারজন এমবিবিএস পাস করেন। কিন্তু এমবিবিএস পাস করেও এই কলেজটি বিএমডিসির অনুমোদন না থাকায় ওই শিক্ষার্থীরা এক বছর ধরে কোথাও ইন্টার্নশিপ করতে পারছেন না। এ কারণে তারা ডাক্তারি পাস করেও রোগী দেখার অনুমতি পাচ্ছেন না। এমনকি তারা পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসকও হতে পারেননি। ওই চার শিক্ষার্থী হলেন মামুনুর রশিদ, রুমা খাতুন, মোহাম্মদ জিন্নাহ ও মৌ খাতুন।

জানা গেছে, শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজে এখন পর্যন্ত মোট সাতটি ব্যাচে প্রায় ২শ’ শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে প্রথম ২ ব্যাচ ও চতুর্থ ব্যাচে ২৫ জন করে এবং পরবর্তীতে ৫০ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন মেলে। তবে কলেজটিতে শুরু থেকেই অবকাঠামো না থাকা, একাডেমিক অনুমোদন না পাওয়া, শিক্ষক সংকট এবং হাসপাতালে রোগী না থাকায় শিক্ষার্থীরা এখানে ভর্তিতে আগ্রহ দেখায়নি। ফলে এর অধিকাংশ আসন ফাঁকাই থেকে যায়। ফলে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাচে প্রায় ২শ’ শিক্ষার্থী রয়েছেন কলেজটিতে।

শিক্ষার্থী মামুনুর রশিদ বলেন, ‘নানা সংকটেও আমি গত বছরের ১২ মার্চ এমবিবিএস পাস করেছি। কিন্তু কেন ইন্টার্নশিপ করতে পারছি না, সেটি জানতে বারবার মেডিকেল কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছে গেছি। কিন্তু তারা আমাকে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। উল্টো আমাকেই নানাভাবে হুমকি দেয়া হয়েছে, যেন আমি বিষয়টি নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি না করি। যেন চুপ থাকি। বাকি তিনজনের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা হয়েছে।

এদিকে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান স্বাধীন বলেন, তার কলেজের একাডেমিক স্বীকৃতি ও অনুমোদন রয়েছে। তবে বিএমডিসির অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হয়েছে অনেক আগেই। বিএমডিসির অনুমোদন না থাকলে পাস করা শিক্ষার্থীরা ডাক্তারি সনদ পাবেন না। তারা কলেজ পরিদর্শন করেছেন। কিছু শর্ত দিয়েছেন। সেগুলো পূরণের চেষ্টা চলছে। হয়তো দ্রুত আমরা অনুমতি পেয়ে যাব। তবে কিছু শিক্ষার্থী পরিস্থিতি বুঝতে না পেরে আন্দোলনে যাচ্ছেন।

এদিকে জানা গেছে, শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজটি নিয়ে এর আগেও নানা জটিলতা রয়েছে। ২০১৫-১৬ সেশনে ২৫ শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন দেয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ ভর্তি করে ৫০ জন। এর ফলে ওইসব শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল হয়। জরিমানা করা হয় কলেজ কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু এরপরও কলেজটির সমস্যা কাটেনি। নানা সংকটে সেখানে মেডিকেল শিক্ষার পরিবেশ নেই বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: