বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১:১৪ অপরাহ্ন

শিরোনাম
চৌদ্দগ্রামে বৃষ্টির প্রার্থনায় ইসতিসকার নামাজ, প্রখর রোদে মুসল্লিদের কান্না হাতিয়ায় সৈকতে দেখা মিলল ‘ইয়েলো বেলিড সি স্নেক’ ফসলি জমি কেটে মাটির ব্যবসা: ভ্রাম্যমাণ আদালতে দুই লাখ টাকা জরিমানা মাটি ব্যবসায়ীর লাখ টাকা জরিমানা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ব্যবস্থাপনা পর্ষদে কুমিল্লার মফিজুর রহমান বাবলু সিনেমা হলে দেখা যাবে আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জয়ের গল্প দেশে পৌঁছেছেন টাইগারদের নতুন কোচ জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এশিয়া : ডাব্লিউএমও নয়াপল্টনে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল জাতি হিসেবে আমাদের সকল প্রাপ্তির দ্বার উন্মোচন করে গেছে মুজিবনগর সরকার-ধর্মমন্ত্রী

ইউএনও ওয়াহিদা খানমের সিটিস্ক্যান রিপোর্ট ভালো

নিউজ ডেস্ক : দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতর আহত দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের অস্ত্রোপচার পরবর্তী সিটিস্ক্যান রিপোর্ট ভালো এসেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। বর্তমানে আইসিইউতে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে থাকা ওয়াহিদা দায়িত্বরত চিকিৎসক ও তার স্বামীর সঙ্গে কথা বলেছেন।

এ বিষয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের নিউরো ট্রমা বিভাগের প্রধান ও নিউরোসার্জন মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন বলেন, এখন পর্যন্ত তার সব প্যারামিটার খুবই ভালো। সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট কেমন আসে, সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তা ছিল। তবে ভালো খবর, তার সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট শতভাগ ভালো এসেছে।

জাহিদ হোসেন বলেন, আল্লাহর রহমতে তিনি এখন ভালো আছেন। আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। ওনার জ্ঞান পুরোমাত্রায় আছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওনার মাথায় নয়টি আঘাত ছিল। আমরা ঠিকঠাক করে দিয়েছি। শরীরের এক পাশ অবশ আছে, সে অবস্থা থেকে মুক্ত হতে সময় লাগবে বলেও জানান মেডিক্যাল বোর্ড প্রধান জাহিদ হোসেন।

এদিকে, ওয়াহিদার চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচার শেষে রাতেই তার জ্ঞান ফিরেছে। তিনি বর্তমানে আইসিইউতে পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। তার হৃদস্পন্দন ও রক্তচাপ স্বাভাবিক আছে। শারিরীক অবস্থা স্থিতিশীল থাকলেও তাকে এখনও শঙ্কামুক্ত বলার মতো পর্যায়ে আসেনি।

এর আগে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের যুগ্ম-পরিচালক অধ্যাপক ডা. বদরুল আলম বলেন, এখনই তার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় আসেনি। শনিবার (০৫ সেপ্টেম্বর) এ বিষয়ে আমাদের মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা বসবেন, এরপর এ বিষয়ে চিকিৎসকরা সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে তার শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (০৩ সেপ্টেম্বর) রাতে ৬ সদস্যের চিকিৎসক দল প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় ইউএনও ওয়াহিদার মাথায় জটিল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করে।

অস্ত্রোপচার শেষেই তাকে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রেখেছেন চিকিৎসকরা। তাৎক্ষণিকভাবে তার সেরে ওঠার বিষয়ে আশাবাদী হলেও তিনি এখনও শঙ্কামুক্ত নন বলে জানানো হয়।

বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ১২টার দিকে অস্ত্রোপচার শেষে ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ইউএনও ওয়াহিদার মাথায় ভাঙা হাড়ের সাত-আটটা টুকরা ছিল, সেগুলো আমরা জোড়া দিয়েছি। জোড়া দিয়ে হাড়গুলোকে জায়গামতো বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি যে আরও ছোট ছোট কাটা ছিল, সেগুলোর সবগুলোকেও রিপেয়ার করা হয়েছে।

আমরা আশাবাদী কিন্তু এটা হেড ইঞ্জুরির ব্যাপার, তার মাথার ভেতরে রক্তক্ষরণ হয়েছে এবং মস্তিষ্কে আঘাত লেগেছে। মস্তিষ্কের ওপর একটা চাপ ছিল, সেটা আমরা রিলিফ করেছি। তবে এখনই ক্লিয়ারলি আমরা বলতে পারব না যে রোগী ভালো হয়ে যাবেন।

তিনি বলেন, ইট উইল টেক টাইম। অন্তত ৭২ ঘণ্টা আমরা তার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করব। আমরা আশাবাদী রোগী ভালো হয়ে যাবে, বাকিটা আল্লাহ ভরসা।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওনার ডান পাশটা যে অবশ ছিল, প্যারালাইজড ছিল। আশা করি সেটা রিভার্স হয়ে যাবে, সচল হয়ে যাবে। তবে কিছুদিন সময় লাগবে।

এর আগে রাত ৯টার দিকে তাকে অস্ত্রোপচারের জন্য হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। সেখানে নেওয়ার আগে তার সিটি স্ক্যান করা হয়েছে। প্রেশার চেক করে অবস্থা স্বাভাবিক পেয়ে তার অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা।

এরও আগে চিকিৎসকরা জানান, ওয়াহিদার মাথার বাঁ দিকটা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাথার কিছু অংশ ভেঙে মস্তিষ্কে প্রেশার তৈরি করছে। সেটি অপসারণ করা গেলে অবস্থার উন্নতি হবে এমন আশা থেকে তার অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত হয়।

বুধবার (০২ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাতে ইউএনও ওয়াহিদার সরকারি বাসভবনের ভেন্টিলেটর ভেঙে বাসায় ঢুকে ওয়াহিদা ও তার বাবার ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। ইউএনওর মাথায় গুরুতর আঘাত এবং তার বাবাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয়।

পরে ইউএনওকে প্রথমে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (রমেক) নিয়ে ভর্তি করা হয়। এরপর তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারে করে তাকে ঢাকায় আনা হয়। তিনি বর্তমানে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

 


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: