শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:১০ অপরাহ্ন

শিরোনাম
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে  প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হবে- সুবর্ণচর উপজেলা আ.লীগ হাতিয়ার উন্নয়নে সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ কর্মসূচিকে কাজে লাগানো হবে – মোহাম্মদ আলী এমপি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ৩৯ বছর পর জমি ফিরে পেলেন যদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবার শিবালয়ে ১৫তম  মাই টিভির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত  ক্রীড়াবিদরা দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনছে- ধর্মমন্ত্রী উজিরপুরে সৎসঙ্গ ফাউন্ডেশনের সেমিনার অনুষ্ঠিত শিবালয়ে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিবাড়ি খেলা অনুষ্ঠিত লঞ্চের দড়ি ছিঁড়ে ৫ জনের মৃত্যু : আসামিদের তিন দিনের রিমান্ড ঈদের দিনে সদরঘাটে দুর্ঘটনায় ঝরল ৫ প্রাণ সৌদির সাথে মিল রেখে নোয়াখালীর ৪ গ্রামে ঈদ উদযাপন

মিরপুরে একের পর এক খুন

নিউজ ডেস্ক:: আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নানামুখী তৎপরতার পরও রাজধানীর মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় মাদক ব্যবসার লাগাম টানা যাচ্ছে না। নিয়মিত অভিযান ও গ্রেপ্তারের পরও নানা কৌশলে সক্রিয় রয়েছে মাদক কারবারিরা। মাদক ব্যবসা ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধে প্রায়ই ঘটছে খুনোখুনি। জুলাইয়ের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে আগস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত এক মাসেরও কম সময়ে মিরপুর পল্লবীতে অন্তত তিনটি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। এসব ঘটনায় জড়িতদের কয়েকজন ইতোমধ্যে ধরাও পড়েছে।

পল্লবী থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ আলী সমকালকে বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা নিয়ে কাজ করছে পুলিশ। নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি উঠান বৈঠকসহ জনসম্পৃক্ত বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মাদকবিরোধী সচেতনতা গড়ে তোলা হচ্ছে। সম্প্রতি তিন খুনের ঘটনায় তদন্ত করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। মাদক সেবন ও ব্যবসা নিয়ে বিরোধে এসব হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহতদের বিরুদ্ধেও মাদক ব্যবসায় সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও মিরপুরের মাদক ব্যবসা থেমে নেই। চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি যোগ হয়েছে নতুন অনেক মুখ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তালিকায় নাম না থাকার সুযোগে তারা অবাধে মাদক বিক্রি করছে। মোবাইল ফোনে মাদকসেবীদের সঙ্গে যোগাযোগের পর সুবিধাজনক স্থানে মাদক হাতবদল হচ্ছে। এ ছাড়া নির্দিষ্ট কিছু স্পটে প্রায় ২৪ ঘণ্টাই বিক্রি হয় ইয়াবা ও গাঁজা। মাদক ব্যবসার সঙ্গে স্থানীয় সন্ত্রাসীদেরও সম্পৃক্ততা রয়েছে। তাদের কেউ কেউ বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছে। তবে সেখান থেকেও তারা মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয় সূত্র বলছে, মাদক ব্যবসা নিয়ে বিরোধে গত এক দশকে মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় ১৯টি খুনের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে পল্লবী ১১ নম্বর সেকশনের প্যারিস রোডে সিটি করপোরেশনের নির্মাণাধীন মার্কেটেই বেশ কয়েকটি খুন হয়। ষষ্ঠ তলার ছাদ পর্যন্ত ঢালাইয়ের পর ২০০৭ সালে ওই মার্কেটের নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায়। তখন থেকেই অর্ধসমাপ্ত মার্কেটটি পরিত্যক্ত হয়ে রয়েছে। এ সুযোগে সেখানে মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীদের আখড়া গড়ে ওঠে। মাদকের টাকার ভাগ নিয়ে বিরোধে ২০১৮ সালে এ মার্কেটে শিমুল, সাবির ও রুবেল নামে তিনজন খুন হয়। গত বছরও চারটি হত্যাকাণ্ড ঘটে এই মার্কেট এলাকায়।

 

চলতি বছরের ২৪ আগস্ট ওই মার্কেট থেকে সাব্বির হোসেন নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। স্বজনের অভিযোগ, মাদক ব্যবসায় বাধা দেওয়ায় সাব্বিরকে হত্যা করে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী রুবেল ওরফে লেংড়া রুবেল। পুলিশ বলছে, নিহত সাব্বিরের বিরুদ্ধেও মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। তার ভাই হিজড়া বাবর তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী। মাদক বিক্রি নিয়ে রুবেলের সঙ্গে তার বিরোধের জের ধরেই খুন হন সাব্বির।

এর আগে ৭ আগস্ট পল্লবীর মহিলা ডিগ্রি কলেজের পাশে ফিরোজ ওরফে গান্দা ফিরোজ নামে এক ব্যক্তিকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। তদন্ত সূত্র জানায়, মাদক সংক্রান্ত বিরোধেই তাকে হত্যা করা হয়। নিহত ব্যক্তি মাদক সেবন ও ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। একটি মামলায় ১৪ বছর কারাবন্দি থাকার পর বছরখানেক আগে তিনি বের হন। এরপর আবারও মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন।

পল্লবীর ১১ নম্বর সেকশনের বাসিন্দা বিপ্লব হাওলাদারকে গত ২৩ জুলাই সন্ধ্যায় তার বাসার কাছেই বেধড়ক পেটায় মাদক ব্যবসায়ী ইমতিয়াজ ও রনি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় দু’দিন পর তার মৃত্যু হয়। তার স্ত্রী ইসমত আরা সমকালকে বলেন, এক সময় মাদক বিক্রি করতেন বিপ্লব। তবে বেশ কিছুদিন আগে তিনি ওই পথ থেকে সরে আসেন। এটাই তার কাল হয়ে দাঁড়ায়। ইমতিয়াজের মাদক বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় তাকে খুন করা হয়। পুলিশের তদন্তেও প্রায় একই রকম তথ্য বেরিয়ে আসে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দু’জনকেই গ্রেপ্তার করা হয়।

এ ছাড়া গত ১৯ ফেব্রুয়ারি পল্লবীর পরিত্যক্ত ডিএনসিসি মার্কেট থেকে মো. সোহেল নামে একজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ হত্যাকাণ্ডের পেছনেও মাদক সংক্রান্ত বিরোধ ছিল বলে জানা গেছে।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: