শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:০০ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম
চৌদ্দগ্রামে বৃষ্টির প্রার্থনায় ইসতিসকার নামাজ, প্রখর রোদে মুসল্লিদের কান্না হাতিয়ায় সৈকতে দেখা মিলল ‘ইয়েলো বেলিড সি স্নেক’ ফসলি জমি কেটে মাটির ব্যবসা: ভ্রাম্যমাণ আদালতে দুই লাখ টাকা জরিমানা মাটি ব্যবসায়ীর লাখ টাকা জরিমানা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ব্যবস্থাপনা পর্ষদে কুমিল্লার মফিজুর রহমান বাবলু সিনেমা হলে দেখা যাবে আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জয়ের গল্প দেশে পৌঁছেছেন টাইগারদের নতুন কোচ জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এশিয়া : ডাব্লিউএমও নয়াপল্টনে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল জাতি হিসেবে আমাদের সকল প্রাপ্তির দ্বার উন্মোচন করে গেছে মুজিবনগর সরকার-ধর্মমন্ত্রী

টেনিসে নারী একক এখন ‘মিউজিক্যাল চেয়ার’

পুরুষদের টেনিসে গ্র্যান্ডস্ল্যাম শিরোপাগুলো বারবার একই হাতে ঘুরছে। গত দুই দশক ধরে হয় রজার ফেদেরার, না হয় রাফায়েল নাদাল আর নয়তো নোভাক জকোভিচ। কিন্তু নারীদের গত পাঁচ শিরোপা উঠেছে পাঁচজনের হাতে। যেন মিউজিক্যাল চেয়ারের মতো হাতবদল হচ্ছে প্রতি টুর্নামেন্টেই। এ বছর ফ্রেঞ্চ ওপেন কে জিতবেন তা অনুমান করে রাখতে পারেন এখনই, বাধা নেই, কারণ নতুন চ্যাম্পিয়ন তো আসবেনই! গারবিন মুগুরুজার বিপক্ষে তিন সেটেই সোফিয়া কেনিনের জয় এটাও স্পষ্ট করছে-  কতটা উন্মুক্ত হয়ে উঠেছে নারীদের টেনিস।

১৪তম বাছাই হয়ে টুর্নামেন্টে পা রেখেছিলেন রুশ বংশোদ্ভূত এই আমেরিকান তরুণী। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের আগে গ্র্যান্ডস্ল্যামে তার সেরা সাফল্য ছিল তৃতীয় রাউন্ডে ওঠা। এতদিন একটি মেজর ফাইনালও জেতেননি। অথচ ২১ বছরের গতিময় এই তরুণী শিরোপার শুরুটাই করলেন গ্র্যান্ডস্ল্যাম দিয়ে। সাফল্যের পথে হারিয়েছেন টেনিসের বর্তমান নাম্বার ওয়ান অ্যাশলে বার্টিকে, আর ফাইনালে দু’বারের চ্যাম্পিয়ন মুগুরুজাকে।

ব্রিটিশ বাজিকররা কেনিন-মুগুরুজা ফাইনালকে গোনাতেই ধরেনি। এই ম্যাচের বাজির হিসাব ছিল ৭৫০-এর ভেতর ১ বার। শিরোপা জিতে মহিলাদের র‌্যাংকিংয়ের সাতে উঠে এসেছেন কেনিন। যা তার ক্যারিয়ার সেরা তো বটেই আমেরিকানদের মধ্যেও বর্তমান সর্বোচ্চ। কেনিনের এখনকার আত্মবিশ্বাসটা সহজেই অনুমান করা যায়। সেই আত্মবিশ্বাস থেকেই সেরেনার পর একাধিক গ্র্যান্ডস্ল্যাম জয়ী হিসেবে নিজেকে দেখছেন এই তরুণী। রবিবার ইয়ারা নদীর ধারে ট্রফি নিয়ে অফিশিয়াল ছবি তোলার দিনে এক গ্লাস ওয়াইন হাতে জানালেন, ‘অবশ্যই আমি সেরেনার মতো একের পর এক শিরোপা জিততে চাইব। এটা অসাধারণ কিছু হবে। তবে এই মুহূর্তে আমি এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না কী হয়েছে। আমি এখনো উত্তেজিত, রোমাঞ্চিত। আমাকে শান্ত হতে হবে এবং সামনে তাকাতে হবে। আশা করি সফল ভাবে এগিয়ে যেতে পারব। গত দুই সপ্তাহ ধরে যে পরিশ্রম ও অর্জন করেছি তা ধরে সামনে এগিয়ে যাওয়া এখন আমার চ্যালেঞ্জ।’

টেনিসে শিরোপা জয়ে পুরুষ ও নারী এককে বিশাল বৈপরীত্য। গত বছর অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতেছিলেন নাওমি ওসাকা, ফ্রেঞ্চ ওপেন জিতলেন অ্যাশলে বার্টি, উইম্বলডন সিমোনা হালেপ আর ইউএস ওপেন জিতে নেন বিয়াঙ্কা আন্দ্রেস্কু। এদিকে পুরুষ এককে গত বছর অস্ট্রেলিয়ান ওপেন ও উইম্বলডন যায় জকোভিচের দখলে আর ফ্রেঞ্চ ও ইউএস ওপেনের মালিক হন নাদাল। এই দুজনের সঙ্গে ২০ বারের শিরোপাজয়ী ফেদেরার মিলে গত দুই দশক পুরুষ এককে রাজত্ব করছেন। করবেনও, কারণ সামনের ফ্রেঞ্চ ওপেনেই হট ফেভারিট নাদাল। মাটির কোর্টে অবিশ্বাস্য ১২ বারের চ্যাম্পিয়নকে তো আর সরিয়ে রাখা যায় না!

বদলে, সামনের ফ্রেঞ্চ ওপেনে নারী একক আরেকটি মিউজিক্যাল চেয়ার হতে যাচ্ছে। গ্রেট সেরেনা উইলিয়ামস আবারও রেকর্ড ২৪টি গ্র্যান্ডস্ল্যামের লক্ষ্যে নামবেন। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বার্টি শিরোপার পুনরাবৃত্তি চাইবেন। সাবেক চ্যাম্পিয়ন সিমোনা হালেপ ও উঠে আসা মুগুরুজাও কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বী। অথচ দেখা যাবে গত পাঁচবারের নিয়ম মেনে নতুন কেউ হচ্ছেন মাটির কোর্টের রানী। নয়তো তরুণ প্রজন্মের ওসাকা, কেনিনরা মুকুট চড়াবেন মাথায়।

আমেরিকান রাজত্ব

নারী এককে আরেকটি লক্ষণীয় দিক যুক্তরাষ্ট্রের দাপট। ২০১৭’র ইউএস ওপেনে স্লোয়ান স্টেফেনস সর্বশেষ আমেরিকান হিসেবে শিরোপা জিতেছিলেন। এরপর টানা আটটি গ্র্যান্ডস্ল্যামের শিরোপা কোনো আমেরিকান নারীর হাতে ওঠেনি। ১৯৯৮-এর পর এই প্রথম ১০টি গ্র্যান্ডস্ল্যামে আমেরিকান দাপট নেই। সেই হারানো দাপট আবার ফিরছে। সেরেনা উইলিয়ামসের উত্তরসূরি হিসেবে গত কয়েক বছরে নিজেদের তুলে আনছেন তরুণ মেয়েরা। বয়স কম হওয়ায় তাদের হাত ধরে আমেরিকান রাজত্ব আরও অনেকদিন থাকবে তা বলাই যায়। এবার তো কেনিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাটন নিয়ে ছুটেছেন। তার পেছনেই থাকবেন কোকো গফ। মাত্র ১৫ বছরের এই আমেরিকান এখনই খেলে ফেলেছেন তিনটি গ্র্যান্ডস্ল্যাম। এবার চতুর্থ রাউন্ডে কেনিনের কাছে হেরেছেন বটে, কিন্তু তার আগে হারিয়েছেন ভেনাস উইলিয়ামস, গতবারের চ্যাম্পিয়ন নাওমি ওসাকাকে। গত বছর ফ্রেঞ্চ ওপেনে ১৮ বছরের তরুণী আমান্ডা আনিসিমোভা খেলেছেন সেমিফাইনাল। শেষ চারে আসার পথে তার শিকার ছিলেন সিমোনা হালেপ। ২০১৭ সালে ইউএস ওপেন জিতে তালিকায় আবির্ভূত হন স্লোয়ান স্টেফেনস। এর পরের বছর ফ্রেঞ্চ ওপেন জিতে ম্যাডিসন কিস আমেরিকান টেনিস শক্তি দেখান। অবশ্য শেষের দুজন গত বছর খুব একটা নাম করতে ব্যর্থ।

আমেরিকান হিসেবে উইলিয়ামস বোনেরা বেশ কয়েক বছর টেনিসে রাজত্ব করেছেন। ২০১০ এর দশক তো পুরোটাই সেরেনার। কিন্তু মা হওয়ার পর থেকে একটিও গ্র্যান্ডস্ল্যাম জিততে পারেননি সেরেনা, যদিও ৪টি টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠেছিলেন। তার বয়স হয়েছে ৩৮। গতি কমে যাওয়াটা স্বাভাবিক। তবে সেরেনার জায়গা নেওয়ার মতো বেশ কয়েকজন ইতিমধ্যে মাথা উঁচু করেছেন। আপাতত কেনিন সবচেয়ে এগিয়ে। জানালেন সেরেনার সঙ্গে তার তুলনা বা তার মতো হওয়ার প্রশ্নগুলো তার বেশ ভালো লাগছে। জানালেন, ‘আমার প্রতি সবার এই মনোযোগটা খুব ভালো লাগছে। এই ভালো লাগার প্রতিটা মুহূর্ত আমি উপভোগ করছি।’


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: