শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৪৭ পূর্বাহ্ন
তাসমি বারী, বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি :: এসে যাচ্ছে মধুমাস। আসন্য জৈষ্ঠ মাস বাঙালির কাছে মধু মাস নামে পরিচিত অনেক কাল থেকেই। আর এই মধুমাসের মধুর সবচেয়ে বড় উৎস দিনাজপুর এর লিচু। তাছাড়াও আমের দিক থেকেও রাজশাহী, চাপাই, কানসার্ট এর পরেই আমের বৃহৎ যোগান দিয়ে থাকে দিনাজপুর। লিচু আমের দিনাজপুরে এবার বাগানে ফলের ঘাটতি। বীরগঞ্জ সহ প্রায় জেলার সর্বত্রই আম লিচুর ফলনে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
ফল না আসার ব্যাপারে কথা হয় গবেষক ও উদ্ভিদবিদ, মোসাদ্দেক হোসেন এর সাথে। তিনি বলেন, লিচু ও আম উৎপাদন না হওয়ার কারণ গুলির অন্যতম হচ্ছে বৈশ্বিক জলবায়ু উষ্ণায়নের প্রভাব। সময়মত বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারণে প্লান্ট বায়লজিক্যাল ক্লক বা উদ্ভিদ জৈব ঘড়ির উপরে প্রভাব বিস্তার করছে। অসময়ে অতিবৃষ্টি বা সময়ে অনাবৃষ্টির প্রভাব ফেলছে। গেল বছরে শরৎ ও হেমন্তে বর্ষার প্রভাব লিচুগাছের শরীরবৃত্তিয় কার্যক্রমে প্রভাবিত করায় বসন্তে মুকুলের পরিবর্তে বেরিয়েছে নতুন পাতা। অন্যদিকে বসন্ত ও গ্রীষ্মে নূন্যতম বৃষ্টিপাত না হওয়ায় মুকুল ও গুটির পূর্ণাঙ্গতায় পড়েছে প্রভাব। সারা বিশ্বের বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন প্রভাবিত করছে ফল উৎপাদনে।
হাজার হাজার হেক্টর জমির বাগানে আশানুরূপ ফল না পাওয়ায় দিশেহারা যেমন কৃষকেরা তেমনি চরম ঝুকিতে আছেন বাগান খরিদ্দাররা। ফলন কম হওয়ায় আরশেদ আলী নামের এক বাগান খরিদ্দার বলেন আমার তেরোটি বাগান তিন বা চার বছর মেয়াদী কেনা আছে। বাগান মালিকদের টাকা পরিশোধ করব কি করে আল্লাহ জানেন। তেরটির মধ্যে সাতটি বাগানে চার ভাগের এক ভাগ ফলন নেই। লিচু ভেংগে বিক্রির প্রসেসিং এর টাকা উঠবে না।
বীরগঞ্জের অনন্ত কুমার সাহা নামে একজন বাগান মালিক আবহাওয়াকে দায়ী করে বলেন এরকম উল্টা পাল্টা আবহাওয়ার কারণে বাগানের দুরাবস্থা। এরকম চলতে থাকলে বাগান কেটে অন্যান্য ফসল আবাদ করতে হবে।
সরেজমিনে বেশ কিছু বাগান ঘুরে দেখতে পাওয়া যায় ফলের করুন অবস্থা। যদিও কিছু বাগানে ফল আছে কিন্তু দেরিতে বৃস্টি হওয়াতে ফল পুষ্ট হতে পারেনি।
একদিকে ফলনে ঘাটতি অন্যদিকে করোনা কালীন সময়ে ফলের বাজার কি হবে তা নিয়ে বিপাকে বাগানি কৃষকেরা।