বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৪৩ পূর্বাহ্ন

শেয়ারবাজারে লেনদেনে মিশ্র প্রবণতা

নিউজ ডেস্ক :: মঙ্গলবারও দেশের শেয়ারবাজারে প্রথম ঘণ্টায় বড় ধরনের উত্থান-পতনে দিনের লেনদেন শুরু হয়েছিল। তবে লেনদেন সময় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অস্থিরতা কমে এসেছে। দুপুর ১টায় দিনের লেনদেনের প্রথম তিন ঘণ্টা শেষে মিশ্র প্রবণতায় লেনদেন চলতে দেখা গেছে।

প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) এ সময় ১৭৪ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড দর বেড়ে কেনাবেচা হচ্ছিল। বিপরীতে দর হারিয়ে কেনাবেচা হচ্ছিল ১৭০টি এবং অপরিবর্তিত অবস্থায় ছিল ৩১টির দর।

শেয়ারদর ওঠানামায় এ সময় মিশ্র প্রবণতা দেখা গেলেও ডিএসইএক্স সূচক সোমবারের তুলনায় ২৬ পয়েন্ট বেড়ে ৬৬৫৫ পয়েন্টে অবস্থান করছিল। এটি এ সূচকের রেকর্ড অবস্থান। আজ সূচকটির পথ চলা শুরু হয়েছিল ৬৬২৮ পয়েন্ট থেকে।

যদিও সকাল ১০টায় লেনদেনে বৃহৎ মূলধনী কয়েকটি শেয়ারসহ বেশিরভাগ শেয়ারের দরবৃদ্ধিতে সূচকটিতে বড় উত্থান দেখা গিয়েছিল। লেনদেনের শুরুর প্রথম ২৮ মিনিটে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গতকালের তুলনায় ৪১ পয়েন্ট বেড়ে ৬৬৬৯ পয়েন্টে উঠেছিল।

এর পরই হঠাৎ বড় শেয়ারগুলো দর হারাতে থাকে। এতে পরের ৪০ মিনিটে (১১টা ৮ মিনিটে) সূচকটি আগের অবস্থান থেকে ৬০ পয়েন্ট হারিয়ে ৬৬০৯ পয়েন্টে নামে। সূচকটির এ অবস্থান ছিল গতকালের তুলনায় ১৮ পয়েন্ট নিচে। এর পর কিছু শেয়ারের দরবৃদ্ধি পেলে পুনরায় সূচক বাড়ছে।

পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সূচকের উত্থানে বড় ভূমিকা রাখছে ব্যাংক খাত। দুপুর ১টায় এ খাতের ৩২ কোম্পানির মধ্যে ২৬টিকেই দর বেড়ে কেনাবেচা হতে দেখা গেছে। বাকি ৫ ব্যাংকের মধ্যে ৩টি দর হারিয়ে কেনাবেচা হলেও সার্বিক বিচারে এ খাতের সব শেয়ারের গড় দরবৃদ্ধির হার ছিল ১.৫০ শতাংশ।

এর বাইরে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে বড় উত্থান দেখা যাচ্ছে। এ খাতের লেনদেন হওয়া ২২ কোম্পানির সবগুলোই দর বেড়ে কেনাবেচা হতে দেখা গেছে। গড় দরবৃদ্ধির হার ছিল ৪ শতাংশের বেশি।

তবে বীমা, প্রকৌশল এবং বস্ত্র খাতে মিশ্র ধারা দেখা গেছে।

জ্বালানি ও বিদ্যুৎ এবং ওষুধ ও রসায়ন খাতের বেশিরভাগ শেয়ারকে দর হারিয়ে কেনাবেচা হতে দেখা যায়। জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের ২৩ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়ে কেনাবেচা হচ্ছিল ৬ শেয়ার, দর হারিয়ে কেনাবেচা হচ্ছিল ১৬টি। ওষুধ ও রসায়ন খাতের লেনদেনে আসা ৩০ কোম্পানির মধ্যে ২১টির শেয়ার দর হারিয়ে কেনাবেচা হচ্ছিল।

অন্য সব খাতে মিশ্রধারা লক্ষ্য করা গেছে।

সার্বিক বিচারে উত্থান-পতনের মধ্যেও ন্যাশনাল হাউজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানির শেয়ার ১০ শতাংশ বা দিনের সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দর ৫১.৭০ টাকায় কেনাবেচা হচ্ছিল, দরবৃদ্ধির শীর্ষে।

১০ শতাংশ দরবৃদ্ধি নিয়ে অপেক্ষাকৃত দুর্বল মৌলভিত্তির দুই শেয়ার মেঘনা পেট এবং তাল্লু স্পিনিং ছিল এর পরের অবস্থানে। এর মধ্যে মেঘনা পেট কোম্পানি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ।

তবে প্রকৌশল খাতের আরএসআরএম স্টিলও এ সময় ১০ শতাংশ দর বেড়ে ৩৩ টাকায় কেনাবেচা হচ্ছিল।

৯ থেকে প্রায় ১০ শতাংশ দর বেড়ে কেনাবেচা হতে দেখা গেছে, আইপিডিসি, উসমানিয়া গ্লাস, ইসলামিক ফাইন্যান্স, ফারইস্ট ফাইন্যান্স কোম্পানিকে। দরবৃদ্ধির এর পরের ১০ শেয়ারের মধ্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের শেয়ারের একক প্রাধান্য দেখা গেছে।

বিপরীতে প্রায় ৮ শতাংশ দর হারিয়ে দরপতনের শীর্ষে ছিল ঢাকা ডাইং। ৪ শতাংশের ওপর দরপতন নিয়ে এর পরের অবস্থানে ছিল এমারেল্ড অয়েল, সোনালী পেপার, সালভো কেমিক্যাল, পেপার প্রসেসিং, নিউ লাইন এবং শাহজিবাজার পাওয়ার।

দুপুর ১টা পর্যন্ত ডিএসইতে ১ হাজার ৯১৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে।

এ সময় খাতওয়ারি লেনদেনে শীর্ষে ছিল বস্ত্র খাত। এ খাতের ৫৮ কোম্পানির ৩০৩ কোটি টাকার বেশি শেয়ার কেনাবেচা হয়েছিল, যা ছিল মোট লেনদেনের ১৫.৯৭ শতাংশ।

খাতওয়ারি লেনদেনের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে ছিল প্রকৌশল খাত। এ খাতের কোম্পানিগুলোর ২৪৯ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়, যা ছিল মোটের ১৩.১২ শতাংশ।

তৃতীয় অবস্থানে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাত। এ খাতের ২০৬ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। যা ছিল মোটের ১০.৮৭ শতাংশ।

একক কোম্পানি হিসেবে লেনদেনের শীর্ষে যথারীতি বেক্সিমকো লিমিটেড। ১টা পর্যন্ত এ কোম্পানির প্রায় ১০৫ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। সাড়ে ৮২ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন নিয়ে এর পরের অবস্থানে ছিল আইএফআইসি ব্যাংক। প্রায় ৪৩ কোটি টাকার লেনদেন নিয়ে লাফার্জ-হোলসিম সিমেন্ট ছিল তৃতীয় অবস্থানে।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: