শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০১:২৪ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে  প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হবে- সুবর্ণচর উপজেলা আ.লীগ হাতিয়ার উন্নয়নে সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ কর্মসূচিকে কাজে লাগানো হবে – মোহাম্মদ আলী এমপি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ৩৯ বছর পর জমি ফিরে পেলেন যদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবার শিবালয়ে ১৫তম  মাই টিভির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত  ক্রীড়াবিদরা দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনছে- ধর্মমন্ত্রী উজিরপুরে সৎসঙ্গ ফাউন্ডেশনের সেমিনার অনুষ্ঠিত শিবালয়ে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিবাড়ি খেলা অনুষ্ঠিত লঞ্চের দড়ি ছিঁড়ে ৫ জনের মৃত্যু : আসামিদের তিন দিনের রিমান্ড ঈদের দিনে সদরঘাটে দুর্ঘটনায় ঝরল ৫ প্রাণ সৌদির সাথে মিল রেখে নোয়াখালীর ৪ গ্রামে ঈদ উদযাপন

দুর্নীতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

শুনতে খারাপ লাগলেও সত্য যে, স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা প্রভৃতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও এখন আর দুর্নীতিমুক্ত নয়। সর্বগ্রাসী দুর্নীতি এসব প্রতিষ্ঠানেও হানা দিয়েছে। যুগান্তরের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দুর্নীতি ও লুটপাটের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। আর এসব দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে ত্রিপক্ষীয় সিন্ডিকেট। কোথাও দুর্নীতি করছেন প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটির সভাপতিসহ অন্য সদস্যরা; আবার কোথাও অধ্যক্ষ অথবা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা। এ দুই ক্ষেত্রেই তাদের সহযোগী হিসাবে কাজ করছেন দুর্নীতিবাজ শিক্ষকরা। এই তিন পক্ষ প্রতিষ্ঠানে এমন এক অবস্থা সৃষ্টি করে রেখেছে যে, সৎ শিক্ষকরা প্রতিবাদ করারও সাহস পাচ্ছেন না। কেউ প্রতিবাদ করতে গেলে তাকে শোকজ করা হচ্ছে কিংবা তার বেতন বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি বরখাস্ত করার ঘটনাও ঘটেছে। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, দুর্নীতির কারণে আজ পর্যন্ত কোনো প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটির সভাপতি অথবা সদস্যকে জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হয়নি। লুটপাটের টাকা ফেরত দেওয়ারও নজির সৃষ্টি হয়নি। আর পরিচালনা কমিটি পক্ষে থাকলে প্রতিষ্ঠানপ্রধানকেও বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে না।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দুর্নীতিবাজরা আগে অর্থ হাতিয়ে নিত মূলত ভর্তি বাণিজ্য ও শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের খাত থেকে। এছাড়া টিউশন ও অন্যান্য ফি, খাতা-কাগজ-কলম-ডায়েরি-স্কুল ড্রেস প্রভৃতি বিক্রির টাকাও তছরুপ হতো। এখন এসব খাতের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরও নানা খাত। প্রতিষ্ঠানের জন্য জমি-গাড়ি ক্রয়, ভবন নির্মাণ, বিভিন্ন ধরনের সংস্কার কাজ প্রভৃতি খাতেও চলছে লুটপাট। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের টাকা এ ব্যাংক থেকে ও ব্যাংকে এফডিআর করে কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগও রয়েছে। ওদিকে অসাধু শিক্ষকরা ছাত্রছাত্রীদের জিম্মি করে তাদের কোচিং-প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করে আসছেন বহুদিন থেকেই।

বলা বাহুল্য, ওপরে যেসব তথ্যের কথা বলা হয়েছে, সেগুলো শিক্ষাক্ষেত্রের অধঃপতনের সূচক। একটা সময় ছিল যখন সেবার মানসিকতা নিয়ে শিক্ষানুরাগীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হতেন। এখন চিত্র পালটে গেছে। বর্তমানে শিক্ষার পরিবর্তে আর্থিক সুবিধা আদায়ের দিকেই তাদের নজর বেশি। দুঃখজনক হলো, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটির সঙ্গে এখন আঁতাত করে চলেছেন অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য অসাধু শিক্ষক। এ এক ভয়ংকর পরিস্থিতি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় নিয়মিত পরিদর্শন এবং অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হলে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটতে পারে। দ্বিতীয় কথা, প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি গঠনের প্রক্রিয়াটিও স্বচ্ছ হওয়া প্রয়োজন। এসব কমিটিতে যাতে প্রকৃত শিক্ষানুরাগী ও সৎ ব্যক্তিরা অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন, তা নিশ্চিত করা জরুরি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলো দেশের ভবিষ্যৎ সুনাগরিক তৈরির কারখানা। এ প্রতিষ্ঠান সব ধরনের দুর্নীতিমুক্ত থাকবে, এটাই সবার চাওয়া। আমরা মনে করি, ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষের উচিত তাদের স্ব স্ব এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে ভূমিকা রাখা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষ যদি প্রতিটি স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসাকে আদর্শ প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তুলতে চায়, তাহলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে বাধ্য।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: