রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৩:৫৫ পূর্বাহ্ন

ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন আজ

নিউজ ডেস্ক :: সারা দেশে আজ অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন। ৬ থেকে ৫৯ মাস বয়সি ২ কোটি ২০ লাখ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।

রোববার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। ক্যাম্পেইনের আওতায় ৬-১১ মাস বয়সি ২৫ লাখ শিশুকে নীল রংয়ের ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।

এছাড়া ১২-৫৯ মাস বয়সি প্রায় ১ কোটি ৯৫ লাখ শিশুকে লাল রংয়ের ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। সব মিলিয়ে সারা দিনে ৬ থেকে ৫৯ মাস বয়সি প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ খাওয়ানো হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পরবর্তী সময়ে অপুষ্টিজনিত কারণে শিশুদের মাঝে রাতকানা রোগের হার ছিল ৪ দশমিক ১০ শতাংশ। বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালে রাতকানা রোগ প্রতিরোধ কার্যক্রম গ্রহণ করেন। শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানোর উদ্যোগ নেন। পরবর্তী সময়ে বর্তমান সরকার ২০১০ সাল থেকে নিয়মিতভাবে বছরে দুবার ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো অব্যাহত রেখেছে। বর্তমানে ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবজনিত রাতকানা রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা শূন্য দশমিক শূন্য চার শতাংশে নেমে এসেছে।

তিনি বলেন, ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর মাধ্যমে অন্ধত্ব প্রতিরোধ ছাড়াও শিশুর দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি নিশ্চিত হয়। শিশু মৃত্যু হার ২৪ ভাগ হ্রাস করে। হাম, ডায়রিয়া এবং নিউমোনিয়ার কারণে মৃত্যুহার উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসে।

তিনি জানান, জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন উপলক্ষ্যে সিটি করপোরেশন, জেলা, উপজেলা ও পৌরসভা পর্যায়ে অবহতিকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় ওয়ার্ড পর্যায়ে এবং উপজেলায় ইউনিয়ন পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবী প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কেন্দ্র থেকে মাঠপর্যায়ে লজিস্টিকস পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় ওষুধাগার থেকে জেলা, সিটি করপোরেশন ও মাঠপর্যায়ে পাঠানো হয়েছে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল।

মন্ত্রী জানান, লাল রংয়ের ক্যাসপুল আছে ২ লাখ আইইউ (ইন্টারন্যাশনাল ইউনিট) যার মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ ২০২৪ সালের জুন। আর নীল রংয়ের ক্যাপসুল আছে ১ লাখ আইইউ, যার মেয়াদ আছে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শিশুদের ভরাপেটে কেন্দ্রে নিয়ে আসতে হবে। কাঁচি দিয়ে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুলের মুখ কেটে এর ভেতরে থাকা সবটুকু তরল ওষুধ চিপে খাওয়ানো হবে। জোর করে বা কান্নারত অবস্থায় ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না। ৬ মাসের কম বয়সি এবং ৫ বছরের বেশি বয়সি এবং অসুস্থ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না।

এদিন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতাধীন এলাকার ১ হাজার ৮২৭টি কেন্দ্রে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এই ক্যাম্পেইন চলবে। রোববার দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় নগর ভবনে আয়োজিত সভায় এ তথ্য জানানো হয়। করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবিরের সভাপতিত্বে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নগরভবনে আয়োজিত পৃথক আরেক সভা করেন ডিএনসিসি প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান। এসময় তিনি বলেন, ডিএনসিসি আওতাধীন এলাকায় ৮ লাখ ৭১ হাজার ১৯ জন শিশুকে খাওয়ানো হবে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস। মোট এক হাজার ৯০৫টি কেন্দ্রে এই ক্যাম্পেইন চলবে। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপপ্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লে. কর্নেল মো. গোলাম মোস্তফা সারওয়ার, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. এমদাদুল হক ও ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা।

এছাড়া ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন দপ্তরের তত্ত্বাবধানে ৫ উপজেলা ও একটি পৌরসভায় ৫১ লাখ ২ হাজার ৪৪৬ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস খাওয়ানো হবে। রোববার ঢাকা সিভিল সার্জন ডা. এএফএম শাহাবুদ্দিন খান সংবাদ সম্মেলন করে এই তথ্য জানান।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: