বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০১:২২ অপরাহ্ন
সুন্দরগঞ্জে প্রতারণা চক্রের মুল আসামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা রাসেলকে অব্যাহতি
শহীদুল ইসলাম শহীদ, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি :: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে পুলিশের চাকরি দেওয়ার নাম করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়া ও প্রতারণার জন্য গ্রেফতার ৪ জন ও এ ঘটনার প্রধান আসামী উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহবায়ক আবদুল্লাহ আল মেহেদী রাসেলকে অবশেষে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। রাসেলকে অব্যাহতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের দপ্তর সম্পাদক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আজিজুল হক আজিজ নিশ্চিত করেছেন ।
এই অব্যাহতির খবর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ছড়িয়ে পড়লে সর্বত্র বইছে আনন্দের জোয়ার। চলছে মিষ্টি বিতরণ ও আনন্দ উল্লাস। রাসেল প্রতারণা চক্রের মুলহোতা ও প্রধান আসামী হওয়ায় ও বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশ হলে উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ সহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নের্তৃবৃন্দের টনক নড়ে। ফলে রাসেলকে দলের নাম ভাঙ্গিয়ে ব্যাপক অপকর্ম ও দলীয় শৃংখলা ভঙ্গের দায়ে আজ তাকে অব্যাহতির আদেশ প্রদান করে চিঠি দেওয়া হয়। এদিকে রাসেলকে অব্যাহতি দেওয়ার খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক ভাবে প্রকাশ হলে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে সংগঠনের সর্বস্তরের নেতা কর্মীদের মাঝে আনন্দ উল্লাস ও মিষ্টি বিতরণ করতে দেখা গেছে। ফেসবুকে মোঃ তুহিন প্রামানিক, আরিফুল ইসলাম রাসেল ও জুয়েল রানা সরকার সহ উপজেলার বিভিন্ন নেতা কর্মীদের আইডিতে লিখেছেন রাসেলকে অব্যাহতির মধ্য দিয়ে সুন্দরগঞ্জ কলঙ্কমুক্ত হলো। তারা আরও লিখেছেন রাসেলের মত বহু হাইব্রীড ও দলে অনুপ্রবেশ কারীদের ঠেকাতে হবে। প্রতারণা চক্রের
মুল হোতা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহবায়ক আবদুল্লাহ আল মেহেদি রাসেল পলাতক। জানা গেছে পুলিশ বাহিনীতে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ দেওয়ার নাম করে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে ৪ জনের প্রতারক চক্রকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। এ ঘটনায় ৫ জনকে আসামী করে মামলা হয়েছে সুন্দরগঞ্জ থানায় । মামলার মুল আসামী রাসেল পলাতক রয়েছে। সুত্রে জানা যায় গত ২৭ মার্চ পুলিশের নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ও চাকরি দেওয়ার নাম করে উপজেলার দুই জনের কাছ থেকে রাসেল ৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় রাসেল সহ প্রতারক চক্রটি। বিষয়টি ১ মার্চ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে গাইবান্ধা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মোখলেছুর রহমান। গ্রেফতারকৃতরা হলো উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের শফিকুল ইসলাম, শাহ আলম, সাজেদুল ইসলাম ও গোলাম রব্বানী।
ঘটনার মুলহোতা ও মামলার মুল আসামী একই ইউনিয়নের সাহাবাজ গ্রামের ইমান হোসেনের পুত্র আবদুল্লাহ আল মেহেদি রাসেল পলাতক রয়েছে। সংঘবদ্ধ এই প্রতারক চক্রকে নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গাইবান্ধা শহরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। পুলিশ জানান, জাকারিয়া নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে তার ছেলে কে পুলিশের চাকরি দেওয়ার নাম করে ৫ লাখ টাকা ও আরেক জনের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারক চক্রটি। জানা গেছে জাকারিয়া উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নে তালুক ফলগাছা গ্রামের মৃত বাবর উদ্দিনের পুত্র। জাকারিয়া ঐ চক্রটির প্রতারণা বুঝতে পেরে গ্রেফতারকৃত ৪ জন সহ মুলহোতা রাসেলকে আসামী করে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা করেন।
জাকারিয়া জানান, আসামী রাসেল তার ছেলে সুলতান কে পুলিশে চাকরি নিয়ে দিবে বলে তার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।।এ বিষয়ে উপজেলার কয়েকজন সুধী ব্যক্তির সাথে কথা হলে তারা জানান, প্রতারণা চক্রের মলহোতা ও প্রধান আসামী আবদুল্লাহ আল মেহেদি রাসেল গ্রেফতার হলে তার কুকর্মের অনেক তথ্য বেড়িয়ে আসবে। এসব করে রাসেল একটি বড় রাজনৈতিক দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন। এদিকে আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি বহিষ্কার পলাতক প্রধান আসামী রাসেলকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্ত মুলক প্রদান করা হোক।
