শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:০৪ অপরাহ্ন

জলবায়ু ঝুঁকি কমাতে এক মাস আগেই মিলবে কৃষি পূর্বাভাস

বাংলাদেশের কৃষকরা সীমিত কয়েকদিনের জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাস পান। সেজন্য তারা প্রতিকূল আবহাওয়ার জন্য সবসময় প্রস্তুত হতে পারেন না। আগামীতে জলবায়ু ঝুঁকি কমাতে এক মাস আগে আবহাওয়ার পূর্বাভাস পেতে ‘সাব-সিজনাল টু সিজনাল ফোরকাস্টিং সিস্টেম’ (প্রাক-মৌসুমি ও মৌসুমি কৃষি পূর্বাভাস) চালু করা হবে।

রোববার (২২ অক্টোবর) বাংলাদেশ মিলিটারি জাদুঘরে এক অনুষ্ঠানে ‘সাব-সিজনাল টু সিজনাল ফোরকাস্টিং সিস্টেম’র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরতে কৃষি, জলবায়ু এবং আবহাওয়ার বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন।

তারা বলেন, গত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশ ক্রমাগত জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হচ্ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অধীন ‘কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতকরণ’ প্রকল্পের আওতায় তৈরি করা হয়েছে ‘সাব-সিজনাল টু সিজনাল ফোরকাস্টিং সিস্টেম’। প্রথাগতভাবে বাংলাদেশি কৃষকরা সীমিত কয়েকদিনের জন্য পূর্বাভাস পান যা তাদের প্রতিকূল আবহাওয়ার জন্য সবসময় প্রস্তুত রাখতে পারে না। এই উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে দুর্যোগ পরিস্থিতির কথা জানিয়ে দেবে দুই সপ্তাহ থেকে এক মাস আগেই।

বাংলাদেশ আবহাওয়া দপ্তরের সম্পৃক্ততায় ডাচ সংস্থা ওয়েদার ইমপ্যাক্ট এবং ওয়াখেনিংগেন ইউনিভার্সিটি, ডিজিটাল ইনোভেশন ফর ইমপ্যাক্ট (ডিআইআই) এবং রয়্যাল নেদারল্যান্ডস মেটিওরোলজিক্যাল ইনস্টিটিউটের (কেএনএমআই) যৌথ উদ্যোগে এই সিস্টেম তৈরি হয়েছে।

jagonews24

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে এএমআইএসডিপির প্রকল্প পরিচালক ড. মো. শাহ কামাল খান সঠিক সময়ে কৃষকদের আবহাওয়া তথ্য প্রদানের তাৎপর্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ আবহাওয়া বিভাগ এবং আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে যে পূর্বাভাস সিস্টেম তৈরি করেছে তা প্রশংসাযোগ্য। বিশ্বের মধ্যে মাত্র অল্প কয়েকটি দেশে এ ধরনের আগাম পূর্বাভাসের পদ্ধতি রয়েছে, বাংলাদেশ যার মধ্যে আজ অন্যতম হিসেবে স্থান করে নিলো।

নেদারল্যান্ডসের ‘ওয়েদার ইমপ্যাক্ট বিভি’র গবেষক এবং প্রকল্প সমন্বয়কারী বব আমেরলান এই পদ্ধতির ওপর একটি বিস্তারিত প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তার উপস্থাপনায় আগামী সপ্তাহ থেকে এক দশকে বাংলাদেশের কৃষিতে কী ধরনের প্রতিকূলতা আসতে পারে তা তুলে ধরা হয়।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এই উদ্যোগের প্রশংসা করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে কৃষির জন্য ‘সাব-সিজনাল টু সিজনাল ফোরকাস্টিং সিস্টেম’ একটি নতুন অধ্যায়, যা কৃষক এবং কৃষি সংশ্লিষ্ট সকলকে ক্রমবর্ধমান জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় সহায়তা করবে। এটি স্মার্ট বাংলাদেশে রূপকল্পের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং বাংলাদেশে একটি সমৃদ্ধ কৃষিখাত গড়ে তোলার জন্য এই সিস্টেম অগ্রগামী ভূমিকা পালন করবে।

অনুষ্ঠানে ফিড দ্য ফিউচার বাংলাদেশ ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার প্রজেক্টের প্রধান ইশরাত জাহান, বাংলাদেশে নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের জলবায়ুনীতি উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, আইইউসিএন বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ রকিবুল আমিন, এবং সেভ দ্য চিলড্রেন বাংলাদেশের খাদ্যনিরাপত্তা বিভাগের পরিচালক তানিয়া শারমিন আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: