শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০১ অপরাহ্ন

বৈশ্বিক জ্বালানি সংকটে আরও ধনী হচ্ছে উপসাগরীয় অঞ্চল

নিউজ ডেস্ক :: আগামী আট সপ্তাহের মধ্যে প্রায় ১০ লাখ ফুটবল ভক্ত কাতারে পৌঁছাবেন, যাদের মধ্যে অধিকাংশই দুবাই ও আবুধাবির মতো শহর হয়ে যাবেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে জ্বালানি সমৃদ্ধ উপসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক চেহারা দিনে দিনে পাল্টে যাচ্ছে। জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় সংকটের সম্মুখীন পশ্চিমা রাজনীতিবিদরাও এখন জীবাশ্ম-জ্বালানি নির্ভর অর্থনীতির রাজকীয়তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন। চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে অঞ্চলটি সফরে যাবেন জার্মানির চ্যান্সেলর। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মাদ বিন সালমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে সৌদি আরব যান। যদিও মানবাধিকার ইস্যুতে সৌদি সরকারের সমালোচনা করেছিলেন বাইডেন।

ইউক্রেনে হামলা চালানোর পরই রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে পশ্চিমা বিশ্ব। তাছাড়া রাশিয়ার ওপর জ্বালানি নির্ভরতা কমানোরও ঘোষণা দিয়েছে তারা। এমন পরিস্থিতিতে ইউরোপ উপসাগরীয় দেশগুলো থেকে জ্বালানি আমদানি বাড়িয়েছে। এতে ফুলেফেঁপে ওঠেছে উপসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনীতি। এদিকে বহুমুখী বিশ্বের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে মধ্যপ্রাচ্য। কারণ নিরাপত্তা ইস্যুতে এখন আর যুক্তরাষ্ট্র শেষ কথা নয়। তবে জায়গাটি স্থিতিশীলতার উৎস হবে কি না তা এখনো স্পষ্ট নয়।

উপসাগরীয় দেশগুলো এমন একটি অঞ্চলের অন্তর্গত যেখানে দুই দশক ভয়াবহ পরিস্থিতি ছিল। আন্দোলন ও যুদ্ধের কারণে মধ্যপ্রাচ্যে অন্তত ১০ লাখ মানুষ মারা গেছেন। সে সময় অর্থাৎ ২০১২ সালে বিশ্ব জিডিপিতে তাদের অবদান কমে যায় উল্লেখযোগ্য হারে। এমন নাজুক অবস্থার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র পর্যায়ক্রমে ইরাক ও আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেয়। এরপর থেকে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়ে জ্বালানির অন্যতম উৎস সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।

জানা গেছে, বিশ্ববাজারে জ্বালানির বর্তমান মূল্যের ফলে উপসাগরীয় ছয়টি দেশ আগামী পাঁচ বছরে তিন দশমিক পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলার আয় করতে পারে। মূলত রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানির বাজারে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। রাশিয়া জ্বালানি রপ্তানির ক্ষেত্রে যখন পূর্বকে বেছে নিয়েছে তখন পশ্চিমাদের জন্য বড় সরবরাহকারী হয়ে ওঠেছে উপসাগরীয় অঞ্চল।

জ্বালানি বাজারের এমন পরিস্থিতিতে দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নিয়ে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত তেলে আরও বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। দুই দেশেরই লক্ষ্য হচ্ছে তেলের দৈনিক উৎপাদন বাড়ানো। তাছাড়া কাতার আগামী কয়েক বছরে তার নর্থ ফিল্ড প্রকল্পকে প্রসারিত করছে।

একটি সুস্পষ্ট তাৎপর্য হলো উপসাগরীয় অঞ্চল আগামী দশকগুলোতে বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে থাকবে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অঞ্চলটির তাৎপর্য এক সময় শেষ হয়ে যাবে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, উপসাগরীয় অঞ্চল থেকে ইউরোপের তেল ও গ্যাস আমদানি বাড়তেই থাকবে। মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ১৯৮১ সালের পর সর্বোচ্চ হয়েছে। আঞ্চলিক জিডিপির ৬০ শতাংশ অবদান রাখছে এটি, যা আরও বাড়বে।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: