বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১০:৫২ অপরাহ্ন

স্মৃতি কথা – মোঃ মোবারক হোসেন দেলোয়ার

জীবন থেকে কখন যেন
পঞ্চাশ হলো গত,
হৃদয় পটে উঠে ভেসে
স্মৃতি কথা শত।
মোসাখালী নদী তীরে
গাঁয়ের পাঠশালা,
পথের ধারে হাট আর
বটের তলায় মেলা ।
বিলের জলে শাপলা-শালুক
জল তরঙ্গের মেলা,
জলজ পাখির কিচিরমিচির
জল ছিটানো খেলা।
আকাঁ বাঁকা নদীর বুকে
রঙ্গীন পালের নাও
ধানের খেতে টেউ খেলানো
দখিণা-পূবালী বাও।
বাঁশ বাগানের ছায়ায় বসে
চড়ুই ভাতি খেলা,
চাঁদনী রাতে গানের আসর
জারী-সারি আর পালা।
মেঠো পথে ঘোড়ার গাড়ী
মাঠে গরুর পাল,
বাঁশির সুরে মন মাতানো
গাঁয়ের রাখাল।
বৌ-পালানো, কানামাছি
দাড়িয়াবাঁধা খেলা,
ডাংগুলি আর গোল্লাছোট
হরেক খেলার মেলা।
পালকি নিয়ে চার বেহারার
হুনহনা হুন গান,
একতারা হাতে গাঁয়ের পথে
ঘর ছাড়া বাউল।
ভরা বর্ষায় নৌকা বাইচ
কলা গাছের ভেলা,
ময়ুর পঙ্খী রঙ্গীন সাজ
নদীতে সাতাঁর খেলা।
শীতের ভোরে খেজুরের রসে
ক্ষীর-পায়েসের স্বাদ,
মায়ের হাতের ভাপাপুলি
মামীর হাতে দুধ-ভাত।
সান বাঁধানো পুকুর ঘাট
জ্যোৎস্না মাখা রাতে,
স্বপ্ন মাখা গল্প বলা
দু’জন দু’জনাতে।
কলসী কাঁখে গায়ের বধু
লাঙ্গল কাঁধে চাষী,
নতুন ফসল ঘরে তোলা
কৃষাণীর মুখের হাঁসি।
পোটলা পিঠে বুড়ো দাদু
হাতে বেতের লাঠি,
মাটির দাওয়ায় বিছানো
খেজুর পাতার পাটি।
শাশুড়ি ননদ ফাকি দিয়া
মাটির প্রদীপ জ্বেলে,
স্বামীর কাছে লিখা চিঠি
কাজল ধোয়া জলে।
চিঠি হাতে ডাক পিয়ন
বাইস্কোপের ছবি,
মেলায় দেখা পুতুল নাচ
হারিয়ে গেছে সবই।
এমন সুন্দর সুখের জীবন
আর পাবনা ফিরে,
যেতে হবে পরপারে
এই বসুন্ধরা ছেড়ে।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: