শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:২১ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম
চৌদ্দগ্রামে বৃষ্টির প্রার্থনায় ইসতিসকার নামাজ, প্রখর রোদে মুসল্লিদের কান্না হাতিয়ায় সৈকতে দেখা মিলল ‘ইয়েলো বেলিড সি স্নেক’ ফসলি জমি কেটে মাটির ব্যবসা: ভ্রাম্যমাণ আদালতে দুই লাখ টাকা জরিমানা মাটি ব্যবসায়ীর লাখ টাকা জরিমানা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ব্যবস্থাপনা পর্ষদে কুমিল্লার মফিজুর রহমান বাবলু সিনেমা হলে দেখা যাবে আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জয়ের গল্প দেশে পৌঁছেছেন টাইগারদের নতুন কোচ জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এশিয়া : ডাব্লিউএমও নয়াপল্টনে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল জাতি হিসেবে আমাদের সকল প্রাপ্তির দ্বার উন্মোচন করে গেছে মুজিবনগর সরকার-ধর্মমন্ত্রী

বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল – নাসরীন মুস্তাফা

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের বড়ো ছেলে শেখ কামাল। ১৯৪৯ সালের ৫ আগস্ট তারিখে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন কামাল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে স্বাধীনতাবিরোধী শত্রুর কাপুরুষোচিত হামলায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে প্রথম শহিদ হন তিনি। আজ তাঁর ৭৩তম জন্মদিনে গভীর বেদনার সাথে স্মরণ করছি মাত্র ছাব্বিশ বছরে থমকে যাওয়া এক চিরতরুণের অনন্য অসাধারণ জীবনকে। আজকের তরুণ প্রজন্মকে উৎসাহিত করার জন্য এই তরুণের জীবনের নানাদিক সামনে নিয়ে আসা খুব জরুরি। কেননা, বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশ বলেই এই সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারের জন্য চাই সর্বোৎকৃষ্ট সম্পদ, যার নাম দেশপ্রেমিক-মানবিক-মেধাসম্পন্ন-আত্মমর্যাদাশীল জনগোষ্ঠী।

১৯৭২ সালের ৪ জুলাই কুমিল্লায় এক জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে জাতির পিতা বলেছিলেন, “সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ পয়দা করতে হবে।” যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে গড়ে তোলার পাশাপাশি সোনার মানুষ তৈরির কাজ তিনি শুরু করেছিলেন। তাঁর সন্তান হিসেবে কেবল নয়, মানসিক উত্তরাধিকারী হিসেবে শেখ কামাল এগিয়ে এসেছিলেন সোনার মানুষ গড়ে তোলার নতুন সেই লড়াইয়ে। মাত্র ২৬ বছরে তাঁকে থামিয়ে না দিলে এই কাজ কতটুকু এগিয়ে যেতে পারত, তা ভাবলেই হাহাকার জমা হয় মনে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে সরিয়ে এনে বাংলাদেশকে দুর্নীতি, মুনাফালোভী সমাজ উপহার দিয়েছিল সুবিধাভোগী সরকারগুলো। এর ফলে বাংলাদেশে গড়ে উঠেছে দেশ-দেশের মানুষের স্বার্থকে এক নিমিষে জলাঞ্জলী দিতে পারা ভয়ংকর দুর্নীতিবাজ, টাকা পাচারকারী অংশ। এরা হতাশা ছড়ায়, ছড়িয়েছে এতকাল। দেশের টাকা বিদেশে পাচার করেছে, নিজেদের ঠিকানা বিদেশেই ঠিক করেছে। দেশকে ব্যবহার করেছে মাত্র। এরকম প্রেক্ষাপটে সোনার মানুষ হয়ে ওঠার চেষ্টায় একালের তারুণ্য যখন করোনা মহামারীর মতো যে কোনো বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়ছে মানুষের জন্য, শেখ কামাল নামের আলোকিত শুভ্রতা এই প্রজন্মকে সাহস জোগায়। তিনি তো এদের মতোই জাগ্রত ছিলেন। ছিলেন আপাদমস্তক খাঁটি দেশপ্রেমিক।

২৫শে মার্চের কালরাতে গণহত্যা শুরু করার পাশাপাশি তীব্র প্রতিহিংসাপরায়ন পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠী ধানমন্ডি বত্রিশ নম্বর থেকে গ্রেফতার করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। গ্রেফতার হওয়ার আগেই ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু। বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত সর্বাত্মক যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার আহবান জানান। বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সবাইকে বন্দী করে রাখা হয় ধানমন্ডির ১৮ নম্বরের বাড়িতে। কঠোর নজরদারি এড়িয়ে কৌশলে পালিয়ে যাওয়া শেখ কামালকে গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানার চাপতা বাজার থেকে দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে ভারতে গিয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ শেষে শেখ কামাল ‘বাংলাদেশ ফার্স্ট ওয়ার কোর্স’-এর কমিশন পান। ছিলেন প্রধান সেনাপতি মুহাম্মদ আতাউল গণি ওসমানীর এইড ডি ক্যাম্প (এডিসি)।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা পদক, ভারতের পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা বীরপ্রতীক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহিরের সাথে ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় সহজ শেখ কামালের অনন্য পরিচয়ের খোঁজ পেয়েছিলাম। ১৯৭১ সালে মুজিবনগরে শেখ কামালের সাথে দেখা হলে নিজের পোশাক থেকে ফতুয়া আর লুঙ্গি এনে বলেছিলেন, জহির ভাই! পরে নিন্। নিজের খাবার থেকে আরেক থালায় ভাত-ডাল-সবজি দিয়ে খেতে দিয়েছিলেন। ঘুমানোর জন্য ছেড়ে দিয়েছিলেন নিজের বিছানা। এতে বিব্রত হয়েছিলেন শেখ কামালের জহির ভাই। বঙ্গবন্ধুপুত্র কেনো বিছানায় শোবেন না! শেখ কামাল মৃদু হেসে বলেছিলেন, আমি আপনার মাথার উপরে থাকব। বিছানার পাশে থাকা টেবিলের উপর ঘুমিয়েছিলেন তিনি।

শেখ কামালের স্পষ্ট বক্তব্য ছিল, বীর মুক্তিযোদ্ধার পাশে থাকতে চান তিনি। কেননা, বীর মুক্তিযোদ্ধারা তাঁর পিতার ডাকে সাড়া দিয়ে জীবন বাজি রেখে ছুটে এসেছেন মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়ার জন্য। অসম সাহসিকতার সাথে যুদ্ধ করছেন। প্রাণ দিচ্ছেন। শেখ কামাল এরপরও আন্তরিকতার সাথে মনে করিয়ে দেন, জহির ভাই! সাবধানে লড়বেন। বেঁচে থাকতে হবে।

মুক্তিযুদ্ধে বিজয় হ’ল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ফিরে এসেছেন প্রিয় মাতৃভূমিতে। ১৯৭২ সালের এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে কাজী সাজ্জাদ আলী জহির গিয়েছিলেন ধানমন্ডি বত্রিশ নম্বরে। শেখ কামাল বাইরে ছিলেন। ফিরে এসে দেখলেন জহির ভাইকে। বঙ্গবন্ধুকে মজা করে বলেছিলেন, আমি কিন্তু জহির ভাইয়ের মাথার উপরে ছিলাম!

বন্ধুবৎসল শেখ কামাল এভাবেই আপন করে নিতেন সবাইকে, আপন হয়ে উঠতেন সবার। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের একজন সদস্য হিসেবে ছাত্র রাজনীতিতে ভূমিকা রাখছিলেন শেখ কামাল। তরুণদের রাজনীতি সচেতনতার পাশাপাশি খেলার মাঠে, নাটক-সংগীতসহ সংস্কৃতির নানা ক্ষেত্রে সম্পৃক্ত থাকার আহবান জানিয়ে ক্ষান্ত থাকেননি তিনি, সুযোগ্য নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি নিজেও সম্পৃক্ত ছিলেন এসবে। ’৬৬-তে বঙ্গবন্ধু ছয় দফা ঘোষণার পর বাংলার রাজনৈতিক পরিবেশে দানা বাঁধে বাঙালির ঐক্য। ’৬৮-তে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দিয়ে তাঁকে রাষ্ট্রদ্রোহী বানিয়ে ফাঁসি দিতে চেয়েছিল পাকিস্তানের শাসকগোষ্টী। ’৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানের পথ বেয়ে বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করে এনে ’৭০-এর

-২-

নির্বাচনে একচেটিয়া জয়লাভ করলেও পাকিস্তানের কূটকৌশলে ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে টালবাহানায় গণমানুষের মতোই শেখ কামালও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণ থেকে নির্দেশনা নিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ঘোষণার “যার যা কিছু আছে, তা নিয়ে প্রস্তুত” থাকার নির্দেশ মেনে শেখ কামাল আবাহনী ক্রীড়াচক্রের খেলার মাঠে এলাকার প্রায় ৫০জন তরুণকে অস্ত্র পরিচালনার ট্রেনিং দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামি অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন শওকত আলী দিয়েছিলেন ট্রেনিং। বাঙালি তরুণরা মুখে কাপড় বেঁধে অবাঙালি বাড়িগুলোতে গিয়ে হুমকি ধামকি দিয়ে ৮০টির মতো অস্ত্র জোগাড় করেছিলেন। জাতির পিতা স্বাধীনতা ঘোষণার পর এই অস্ত্রগুলো নিয়ে যুদ্ধে যান তরুণের দল। শেখ কামালও গেলেন। মুক্তিযুদ্ধ থেকে ফিরে আসার পর তিনি তাঁর কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষা করেছেন। বাংলাদেশের মঞ্চ নাটকের অন্যতম প্রধান দল ঢাকা থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন শেখ কামাল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার সলিমুল্লাহ্ হলের বার্ষিক নাটকে নিয়মিত অভিনয় করতেন তিনি। ’৭২ সালে ডাকসুর নাটকের দলের অংশ হয়ে অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে শহিদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরীর অনুবাদে জর্জ বার্নার্ড শ’র লেখা নাটক ‘কেউ কিছু বলতে পারে না’ মঞ্চস্থ হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গে। প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন শেখ কামাল। তাঁর বিপরীতে ছিলেন ফেরদৌসী মজুমদার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিকেট দলের সহ-অধিনায়ক ছিলেন শেখ কামাল। ১৯৭৪-’৭৫ মৌসুমে খেলেছেন জাতীয় ক্রিকেট লীগ। ভলিবল-হকি-ব্যাডমিন্টনেও তাঁর কৃতিত্ব ছিল ঈর্ষণীয়। অ্যাথলেট হিসেবেও কম যাননি, ১৯৭৫ সালে স্যার সলিমুল্লাহ্ হলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ১০০ মিটার স্প্রিন্টে সেরা হয়েছিলেন। ক্রীড়াপাগল মানুষটি খেলাকে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন পারস্পরিক যোগাযোগ-সম্প্রীতি গড়ে তোলার কাজে। আবাহনী ক্রীড়াচক্রের ব্যয় নির্বাহের পাশাপাশি মানুষকে নির্মল বিনোদন দিতে তিনি সার্কাস দল গড়ে তুলেছিলেন।

কামালের প্রচলিত লোকগীতি-রবীন্দ্র-নজরুল-আধুনিক গানের সাথে যুক্ত করতে চেয়েছিলেন তরুণ প্রজন্মের জন্য একদম তাজা স্বাদের পপ ঘরানার সংগীত। ছিলেন সে সময়ের জনপ্রিয় সাংস্কৃতিক সংগঠন স্পন্দন শিল্পীগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা।

রাষ্ট্রের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ব্যক্তির পুত্র, কী দরকার ছিল তাঁর ছায়ানটে সেতার শেখার? নাটকের অভিনয় করার? গান গাওয়ার? ব্যাডমিন্টন খেলতেন, ওটুকু হলেই হয়তো হ’ত। তিনি কিন্তু ক্রীড়া সংগঠক হলেন। হকি, বাস্কেটবল, ফুটবলের মতোই ক্রিকেট খেলাকে জনপ্রিয় করতে চাইলেন। ফুটবলার সালাহ্উদ্দিন খেলতেন মোহামেডানে, তাকে নিয়ে এলেন নিজের প্রতিষ্ঠিত ক্লাব আবাহনী ক্রীড়াচক্রে। বড় বোন শেখ হাসিনা ১৯৭৫-এর ৩১ জুলাই গেলেন জার্মানিতে। বিদেশ থেকে কী আনবেন, ছোট ভাইকে এই প্রশ্ন করলে বড় বোনের কাছে ছোট ভাই কামালের আবদার ছিল, খেলোয়াড়দের জন্য অ্যাডিডাসের বুট জুতো নিয়ে আসতে। নিজেও যখন বিদেশে গেছেন, খেলোয়াড়দের জন্য ক্রীড়াসামগ্রী খুঁজেছেন। ক্লাবে এনেছেন বিদেশি কোচ, যা সেই সময়কার বাংলাদেশে প্রথম। কোলকাতায় খেলতে গেছে আবাহনী ফুটবল দল, সবার গায়ে জার্সি, যা যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশের খেলোয়াড়দের অসহায়ত্ব ছাপিয়ে উন্নত রুচির পরিচয় দেয়। মুক্তিযুদ্ধে অনন্য অবদান রেখেছেন, অথচ মুক্তিযোদ্ধা সনদ নেননি। চাইলেই উপভোগ করতে পারতেন সেনাবাহিনীর নিশ্চিত জীবন। তিনি বরং দেশ গড়ে তোলার সংকল্পে সেনাবাহিনী ছেড়ে নেমে এলেন সাধারণ মানুষের কাতারে, ফিরে গেলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র হিসেবে। ভালোছাত্র ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর ছেলে, উপরন্তু ভালোছাত্র হিসেবে চমৎকার পেশাগত জীবনও বেছে নিতে পারতেন তিনি। অনেকের মতো উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে চলে যেতে পারতেন। তিনি এসব কিছুই করেননি। দেশ গড়ার দায়বদ্ধতা থেকে যেখানেই ঘাটতি দেখেছেন, ছুটে গেছেন পূরণ করতে, যেমন-১৯৭৪ সালের বন্যার সময় রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে বন্যার্তদের সাহায্যে ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচিতে তিনি ছিলেন অগ্রগামী কর্মী।

পিতা বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক-সামাজিক-রাজনৈতিক নানা ক্ষত সারিয়ে সোনার বাংলা গড়তে চেয়েছেন। সোনার বাংলা গড়তে যে সোনার মানুষ দরকার, পুত্র শেখ কামাল শুরু করেছিলেন সেই সোনার মানুষ গড়ার কাজ। স্বাধীনতাবিরোধী বেঈমান শক্তি বঙ্গবন্ধুকে ক্রমাগত আঘাত করেছে, ১৫ আগস্টের কালরাতের পটভূমি তৈরির জঘন্য চেষ্টা চালিয়েছে। শেখ কামালের বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্র ছিল এই নীল নকশার অংশ। কাপুরুষোচিত হামলার সেই রাতে জাতির পিতাকে রক্ষার জন্য প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল। প্রথম শহিদ তো তিনিই। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের যোগ্য সন্তান, দেশমাতৃকার সাহসী সন্তানকে আমরা চিরতরে হারিয়ে ফেলেছি, কিন্তু যত দিন যাচ্ছে ততই উজ্জ্বলতর হয়ে উঠছেন তিনি দেশপ্রেমের শক্তিতে। আমরা বুঝতে পারছি, বাংলাদেশকে স্বর্নালী ভবিষ্যতের শিখরে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতেন এই স্বপ্নবাজ তরুণ। বড় বোন শেখ হাসিনাও যখন বাংলাদেশকে নিয়ে তাঁর সোনালী স্বপ্নের কথা বলেন, পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সাথে সাথে ভাই শেখ কামালের অসমাপ্ত স্বপ্ন প্রেরণা জোগায় নিশ্চয়ই। ক্রীড়াপ্রেমী, সংস্কৃতিবান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্য দিয়ে ডানা মেলছে শেখ কামালের স্বপ্ন। এই স্বপ্নের সাফল্য যত অর্জিত হচ্ছে, ততই মহিমান্বিত হচ্ছেন শেখ কামাল।

বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্মদিনে জানাই অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে সশ্রদ্ধ অভিবাদন।

লেখক : উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা, তথ্য অধিদফতর, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: