শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৫২ অপরাহ্ন

শিরোনাম
চৌদ্দগ্রামে বৃষ্টির প্রার্থনায় ইসতিসকার নামাজ, প্রখর রোদে মুসল্লিদের কান্না হাতিয়ায় সৈকতে দেখা মিলল ‘ইয়েলো বেলিড সি স্নেক’ ফসলি জমি কেটে মাটির ব্যবসা: ভ্রাম্যমাণ আদালতে দুই লাখ টাকা জরিমানা মাটি ব্যবসায়ীর লাখ টাকা জরিমানা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ব্যবস্থাপনা পর্ষদে কুমিল্লার মফিজুর রহমান বাবলু সিনেমা হলে দেখা যাবে আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জয়ের গল্প দেশে পৌঁছেছেন টাইগারদের নতুন কোচ জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এশিয়া : ডাব্লিউএমও নয়াপল্টনে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল জাতি হিসেবে আমাদের সকল প্রাপ্তির দ্বার উন্মোচন করে গেছে মুজিবনগর সরকার-ধর্মমন্ত্রী

বেলাল মোহাম্মদ: জীবনজুড়ে কাব্যময় সুখ-দুঃখ

কবি বেলাল মোহাম্মদের ‘রবারের খেলা’ বইটি যখন হাতে আসে; তখন আমি সম্ভবত একাদশ শ্রেণিতে পড়ি। হয়তো ২০০৩-২০০৪ সাল হবে। খালাবাড়ির পারিবারিক পাঠাগার থেকে বইটি এনেছিলাম। বইয়ের খালি পাতায় খালাতো ভাই মো. মহি উদ্দিনের নাম লেখা আছে। বই নম্বর সাত। স্বাক্ষরে আরেক খালাতো ভাই মহসীনের নাম। তারিখ ১৯৯৬ সালের ৪ সেপ্টেম্বর। শুরুতেই এসব বলার কারণ বইটি প্রকাশিত হয়েছে ১৯৯৬ সালে কলকাতা বইমেলায়। প্রকাশ করেছিল প্রকাশনা সংস্থা প্রমা প্রকাশনী। প্রচ্ছদ করেছিলেন বিজয় দত্ত। বইয়ের স্বত্ব ছিল কবির ছেলে জেড কে আনন্দের। বইয়ের মূল্য রাখা হয়েছিল পঁচিশ টাকা। ভূমিকা লিখেছিলেন কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়।

একসময় বইটির নাম মনে থাকলেও আমি ভেবেছিলাম, হয়তো হারিয়ে ফেলেছি। কবি বেলাল মোহাম্মদ ২০১৩ সালের ৩০ জুলাই মুত্যুবরণ করেন। ২০১৪ সালে ঢাকায় থিতু হওয়ার পর থেকে বইটি অনেক খুঁজেছি। কলকাতায় প্রকাশিত বলে বাংলাদেশে পাইনি। রকমারিতেও নেই। আশার কথা হলো, গত কোরবানির ছুটিতে পুরোনো বইয়ের মাঝে বইটি খুঁজে পেয়েছি। সঙ্গে তার ‘সাকিন সন্দ্বীপ’ নামের একটি কিশোর উপন্যাসও পেয়েছি। সেটি সংগ্রহের ইতিহাস আমার মনে নেই। হয়তো পল্টনের পুরান বইয়ের দোকান থেকে কিনেছিলাম। বলে রাখা ভালো, কবি বেলাল মোহাম্মদের প্রতি আমার এত আগ্রহ কেন? কারণ তিনি আমার আত্মীয়। আমার মেজ আপা মোহসিনা পারভীনের (খালাতো বোন) চাচা শ্বশুর। আপার শ্বশুর কামালুদ্বীন খানও বিদ্বান ছিলেন। তিনি ইসলামি পণ্ডিত ছিলেন। লক্ষ্মীপুর রায়পুর আলীয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ছিলেন। অবসরকালে ইসলামী ব্যাংকের শরীয়াহ বোর্ডের সদস্য ছিলেন। তাঁর লেখা ‘নকশে হায়াৎ’ পড়েছিলাম অনেক আগে।

বেলাল মোহাম্মদ ১৯৩৬ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলার মুছাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার মায়ের নাম মাহমুদা খানম এবং বাবার নাম মৌলভি মোহাম্মদ ইয়াকুব। তিনি দশ সন্তানের মধ্যে পঞ্চম ছিলেন। তিনি ইন্টারমিডিয়েট দ্বিতীয় বর্ষ পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। ছাত্রাবস্থায় বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের প্রথম চট্টগ্রাম কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৫৫ সাল থেকে ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত টানা ৯ বছর মিরসরাইয়ের আমানটোলা খানকা শরীফে সূফি আবদুল লতিফের সান্নিধ্যে অবস্থান করেন। এ বিষয়ে ‘আমানটোলার সুফি’ নামে একটি বইও লিখেছেন।

১৯৬৪ সালে তিনি দৈনিক আজাদীতে উপ-সম্পাদক হিসেবে কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। পাশাপাশি রেডিও পাকিস্তান চট্টগ্রাম কেন্দ্রে ‘স্ক্রিপ্ট রাইটার’ পদে চুক্তিবদ্ধ হন। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ কালুরঘাট প্রচার ভবনে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের উদ্যোক্তা-সংগঠক ও মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শব্দসৈনিক ছিলেন। ১৯৭১ সালের ১ জুন প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বেতারের সহকারী পরিচালক (মুজিবনগর কর্মচারী) পদে নিযুক্ত হন। সরকারি চাকরির মেয়াদ শেষে বাংলাদেশ বেতারের অনুষ্ঠান পরিচালনা বিভাগ থেকে ১৯৯৪ সালে অবসর গ্রহণ করেন।

তার স্ত্রী ১৯৭৩ সালে মারা যান। এরপর তিনি আর বিবাহ করেননি। একমাত্র ছেলে জেড কে আনন্দকে নিয়েই পাড়ি দিয়েছেন সংসার-সমুদ্র। কিন্তু ১৯৯৮ সালে মাত্র ৩২ বছর বয়সে তরুণ লেখক ছেলেটিও মৃত্যুবরণ করেন। ছেলেকে হারিয়ে মানসিকভাবে অনেকটা ভেঙে পড়েন কবি বেলাল মোহাম্মদ। এরপর থেকে পড়াশোনা, লেখালেখি ও দেশ-বিদেশ ভ্রমণ করেই কাটিয়ে দেন। ছেলের প্রকাশিত ও অপ্রকাশিত উপন্যাস, গল্প, প্রবন্ধ, কবিতা একসঙ্গে আনন্দ ভূমিকা প্রকাশন থেকে ২০১২ সালের একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়।

পরিবারে তিনি ছিলেন সবার ‘জাদুমণি’। সবার খোঁজ-খবর নিতেন সব সময়। তিনি তাঁর ‘রবারের খেলা’ কাব্যগ্রন্থটি বড় ভাইয়ের স্ত্রী অকালপ্রয়াত লেখিকা সফিনাজ নুরুন্নাহারকে উৎসর্গ করেছিলেন। শেষদিকে তিনি রাজধানীর উত্তরায় বসবাস করতেন। তার বড় ভাই তাকে একটি ফ্ল্যাটের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। তিনি ২০১৩ সালের ৩০ জুলাই ৭৭ বছর বয়সে মারা যান। ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর ৫টার দিকে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন। তাঁর ইচ্ছানুসারে মরদেহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাশাস্ত্রের শিক্ষার্থীদের গবেষণার উদ্দেশ্যে দান করা হয়।

বেলাল মোহাম্মদ ২০১০ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার; ২০১১ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বহু পুরস্কার, সংবর্ধনা ও সম্মাননা পেয়েছেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থসমূহের সংখ্যা ৬০টিরও বেশি। এর মধ্যে—‘কবিতা নয়’ (১৯৫৪), ‘পর্যায়ক্রম নেই’ (১৯৬৯), ‘অকাল অপাত্র’ (১৯৭৭), ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’ (১৯৮৩), ‘ছোটদের আর এক মুক্তিযুদ্ধ’ (১৯৮৬), ‘রবারের খেলা’ (১৯৯৬), ‘জয় বাংলা রেডিও’ (১৯৯৬), ‘নির্বাচিত কবিতা’ (২০০১), ‘ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার’ (২০০১), ‘বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ’ (২০০১), ‘বীরশ্রেষ্ঠদের কথা’ (২০০১), ‘আমাদের বিশেষ দিনগুলো’ (২০০১), ‘আমার প্রতিবাদের ভাষা’ (২০০৪), ‘আমানটোলার সুফি’ (২০০৫), ‘অন্যকূলে পলিমাটি’ (২০০৯), ‘উপনয়ন’ (২০০৯), ‘চিত্ররূপা’ (২০০৯), ‘নারীগণ’ (২০১১), ‘স্বপ্নসাধ ক্রসবাঁধ’ (২০১৩), ‘কতো ঘরে ঠাঁই’ (২০১৩), ‘মরণ-উত্তর’ (২০১৩), ‘যাবো কেষ্টপুর’ (২০১৩) প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

তিনি কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, গবেষণা, সম্পাদনা, উপন্যাস, শিশুতোষ বই রচনা করেছেন। তবে কবি হিসেবেই বেশি পরিচিতি লাভ করেছেন। এবার তাঁর ‘রবারের খেলা’ বইটির দিকে দৃষ্টিপাত করছি। গ্রন্থের ভূমিকায় কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছিলেন, ‘স্বাধীনতা সংগ্রামী হলেও বেলাল মোহাম্মদের রচনায় শুধু উচ্চ চিৎকার নেই। তাঁর কবি হৃদয়টি অতিশয় সংবেদনশীল, কখনো ধারালো বিদ্রুপে তা ঝলসে উঠলেও তিনি চিরকালীন মানব সম্পর্কে আস্থাবান। মানবতাই তাঁর কবিতার মূল সুর। বাংলাদেশের মাটিতে তাঁর শিকড়, ঐতিহ্যের প্রতি তিনি দায়বদ্ধ। ‘মাটি জানেই না, স্বয়ং সে মৃতসঞ্জীবনী’ এরকম পংক্তি যেন শুধু বাংলার কোনো কবির পক্ষেই লেখা সম্ভব। কোনো কোনো কবিতায় মরমী আবেগ ভারি চমৎকার ফুটেছে। যেমনঃ
‘কারো জন্যে গীতের আসর
কারো জন্যে রাতের বাসর
তোমার জন্যে কিসের সময়সীমা?
তোমার জন্যে এখন-তখন, সারাজীবন।’
তাঁর এই কবিতা-সংগ্রহটি বাংলা সাহিত্যে বিশেষ একটি স্থান পাবে, এই আমার বিশ্বাস।’ (ভূমিকা: রবারের খেলা)
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ও বিদায় নিয়েছেন তাঁর (বেলাল মোহাম্মদ) মৃত্যুর এক বছর আগে। এক কবির প্রতি অন্য কবির সেই ভালোবাসা এখনো রয়ে গেছে বইয়ের পাতায়।

কবি বেলাল মোহাম্মদের কবিতা সহজ-সরল ও প্রাঞ্জল। কোনো আতিশয্য নেই তাতে। কেমন সাবলীল ভাবেই বলে ফেলতে পারেন অন্তরের গভীর কথাগুলো। পাঠকের হৃদয়কে স্পর্শ করে নিতে পারে সহজেই। কবির ভাষায়—
‘দীর্ঘ জল কেটে চলে যায় লাশের ভেলা—
কিন্তু লক্ষীন্দরের চুলে বেহুলা কাটে না তো বিলি।
নিঃসঙ্গ লক্ষীন্দর দীর্ঘ জল কেটে চলে যায়।’
(জন্মদিনে জলযানে: রবারের খেলা, পৃ-৯)
তাই তো উপমা-অলঙ্কারে তাঁর কবিতা হয়ে উঠেছে পাঠকেরই অভিব্যক্তি। স্মরণ করিয়ে দেয় ভালোবাসার ইতিহাস। যা অন্তরের অতলে গিয়ে যেন কড়াঘাত করে।

বেলাল মোহাম্মদের কবিতায় ব্যাপক কারুকাজ লক্ষ্য করা যায়। তাঁর ছন্দ ও ভাষাজ্ঞান কল্পনাতীত। কবিতায় তুলে ধরেছেন দুঃখ, ভালোবাসা, সমাজ, দেশ, রাজনীতি ও মানবতাবাদ। শিরোনাম কবিতায় কবি বলেছেন—
‘টানলে টান টান হয়, ছাড়া পেলে
ফিরে আসে ফের।
বারবার তোমার আমার রবারের খেলা।’
(রবারের খেলা: রবারের খেলা, পৃ-২১)
কবি এখানে বোঝাতে চেয়েছেন প্রান্তিক জীবনের সহযোগ। তুলে এনেছেন সুখের অনটন কিংবা খুনসুটির কথা। জীবন কি তবে রবারেরই খেলা। টানলেই টান টান, ছেড়ে দিলেই ফিরে যায়।

ছড়া কিংবা ছন্দোবদ্ধ কবিতায় তাঁর বিচরণ দেখতে পাই কখনো কখনো। সেই সঙ্গে উঠে আসে গ্রামীণ উপকরণ। মাটির গন্ধ, জলের ঢেউ ছোঁয়া কবি গ্রামকেও আপন করে নেন অনায়াসে। কবির ভাষায়—
‘আদূরে বোলচাল
ভেতরে আলোচাল
গরুতে খাবে না রে,
আমূল অধিকারে।।’
(তোর পাকা ধান: রবারের খেলা. পৃ-২৮)
মাটির সঙ্গে সঙ্গে দেশমাতার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন কবি। একজন শব্দসৈনিক হয়ে উদ্বুদ্ধ করেছেন মুক্তিযোদ্ধাদের। তাই তো কবি বলেছেন—
‘আমি তো দেখলাম, মায়ের বোনের ভালবাসায়
মরলো যুবারা, মাটিকে ভালোবেসে মরলো লক্ষপ্রাণ।
ওরা কি পেলো সুখ?
তবু তো মিছে নয় সেই ভালোবাসা।
আমরা মান পেলাম, সীমানা পেলাম সেই ভালোবাসায়।
(কিছুই জানি না-জানি না: রবারের খেলা, পৃ-১৩)
তাঁর কবিতায় মুক্তিযুদ্ধ, দেশপ্রেম, স্বাধীনতা এসেছে সঙ্গত কারণেই। যুদ্ধদিনের দুঃসহ স্মৃতি তিনি আমৃত্যু লালন করেছেন মননে ও কবিতায়।

কবির মনের অনন্ত হতাশা ও প্রত্যাশা প্রাপ্তির শুকরিয়াও ফুটে ওঠে কবিতায়। চেয়ে অনেক কিছু পাওয়ার পরও হতাশা যেন থেকে যায় মনে। আবার না চাইতেই সামান্য কিছু পেলেও কবি যেন উচ্ছসিত হন। যেন রবীন্দ্রনাথেরই পুনরাবৃত্তি—‘না চাহিলে যারে পাওয়া যায়’। কবি বলেছেন—
‘চেয়ে যা পাই, হোক না অনেক তা-ই—
যেচে যা দাও, তিলেক হলেও
তার তুলনা নাই।।’
(তিলেক হলেও: রবারের খেলা, পৃ-৪৩)
জীবন মানেই দুঃখ-বিরহ। জীবন মানেই ভালোবাসা-আনন্দ। তবে কারো কারো জীবনে তা কেবলই মরীচিকা। কবিও এখানে ব্যতিক্রম নন।

তা ছাড়া একের পর এক দুঃখ আহত করেছে কবিকে। স্ত্রী-সন্তান হারানোর ক্ষত নিয়েই কাটিয়ে দিয়েছেন বাকিটা জীবন। তবুও আধুনিক ও স্মার্ট ছিলেন সব সময়। গবেষণা করেছেন, কবিতা, গল্প, উপন্যাস লিখেছেন। ছোটদের স্নেহ করতেন। ভালোবাসতেন স্বজনদের। তাতে তাঁর অন্তরের বেদনা প্রশমিত হয়েছে কি না—তিনিই হয়তো বলতে পারতেন। কবি অবশ্য বলেছেন—
‘আমার সময়গুলো কাকে খায়, পোকে খায়—
এমন তো ভাবতে পারিনি।
আমার সময়গুলো লাখেরাজ বনানীর ফুল ফল,
অযত্নে অপরিচর্যায় ঝরে যায়—
এমন তো ভাবতে পারিনি।’
(আমার সময়গুলো: রবারের খেলা, পৃ-২৪)
কবি অন্যত্র বলেছেন—
‘লেখাটা তোমার জন্যে—তোমারই জন্যে।
একবার তুমি যদি চোখ বুলিয়ে দাও,
ওতেই সার্থকতা।
তারপর ছিঁড়ে ছুঁড়ে ফেলতেও দ্বিধা নেই।’
(লেখাটা তোমার জন্য: রবারের খেলা, পৃ-৫৬)
বুকের ভেতর লালিত দুঃখ নিয়ে বাকিটা জীবন কাটিয়ে দেওয়া বড্ড সহজ নয়। সেই অসাধ্যকেই সাধন করেছেন তিনি। তারপরও সংসার বিমুখ হননি কখনো। জড়িয়ে ছিলেন পরিবারের অন্য সবার মায়ার বন্ধনে। ভালোবাসার পাত্র ছিলেন শেষ অবধি।

মানুষের মাঝেই কবি বেঁচে থাকবেন। বেঁচে থাকবেন কবিতায়। ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে তাঁর নাম। তা সহজেই মুছে ফেলবার নয়। তবুও কবিকে নিয়ে আরও বেশি আলোচনার দাবি রাখতেই পারি। পরবর্তী প্রজন্ম যেন চিনতে পারে তাঁকে। আমি তাঁর বহুল পাঠ ও আলোচনা কামনা করছি। মৃত্যুবার্ষিকীতে জানাই গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: