শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:১২ অপরাহ্ন

জামালপুরে অবহেলায় রোগীর মৃত্যু, চিকিৎসদের ওপর হামলা

সুমন মাহমুদ, স্টাফ রিপোর্টার : জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় রোগীর স্বজনদের হামলায় আহত হয়েছে তিনজন ইন্টার্নি চিকিৎসক। এছাড়াও পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডের একটি কক্ষ ভাংচুর করেছে বিক্ষুব্ধ স্বজনেরা।

বুধবার (১২ মার্চ) রাত সাড়ে চারটার দিকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ভোর ৪টার দিকে পৌরসভার রশিদপুর এলাকার গুল মাহমুদ নামে একজন রোগীকে জরুরী বিভাগ থেকে ভর্তির জন্য পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে প্রেরন করা হয়। সেই সময় পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডের ইন্টার্নি চিকিৎসকরা মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে একজন রোগীকে সেবা প্রদান করছিলো। কিছুক্ষন পর সেই চিকিৎসকরা পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে ফিরে এসে রোগী গুল মাহমুদকে মৃত ঘোষনা করে। এরপরই গুল মাহমুদের স্বজনেরা তাদের উপর হামলা চালায় ও একটি কক্ষ ভাংচুর করে।

পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডের দুইজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, রাতে যখন রোগীটি আসে তখন সেহেরী খেতে গিয়েছিলো চিকিৎসকরা। রোগীর ছেলেরা অনেক চিৎকার করার পরেও কোনো ডাক্তার না আসলে পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডের ডিউটি ডাক্তারের রুম লাথি দিয়ে খুলে ভাংচুর করে। এর আগে রোগীকে তার ছেলেরা পানি খাওয়ানোর পরই মারা যায়। এতে আরো উত্তেজিত হয়ে পড়ে রোগীর ছেলেরা। এরপরে ডাক্তার আসলে ডাক্তারকে মারধর করে রোগীর দুই ছেলে।

হামলায় আহত তিন ইন্টার্নি চিকিৎসক হলেন- ডা. মঞ্জুরুল হাসান জীবন, ডা. ফাহমিদুল ইসলাম ফাহাদ ও ডা. তুষার আহমেদ। হামলার পর থেকে দুই দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন ইন্টার্নি চিকিৎসকরা।

এই ঘটনায় জামালপুর থানায় অভিযোগ দেয়ার পাশাপাশি রোগীদের দূর্ভোগ কমাতে কর্মবিরতি তুলে নেয়ার আশা ব্যাক্ত করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আর দুপুরে গুল মাহমুদের মরদেহ স্বজনের কাছে হস্তান্তরের পর পুলিশ জানায় তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন তারা।

জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মাহফুজুর রহমান সোহান বলেন, ‘ঘটনার পরে আমরা সদর থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছি। পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবে। আর কর্মবিরতির জন্য যদি কোনো দূর্ভোগ হয় তাহলে আমি চিকিৎসকদের সাথে কথা বলে কর্মবিরতি তুলে নেয়ার ব্যবস্থা গ্রহন করবো। যাতে রোগীদের কোনো দূর্ভোগ না হয়।’

এসব বিষয়ে জামালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মহব্বত কবির বলেন,‘ঘটনার পরপরই আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং দুই পক্ষের সাথে কথা বলেছি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রোগীর ছেলে হায়দারকে আটক করি এবং এরপর তাকে আমরা স্থানীয় কাউন্সিলরের জিম্মায় দিয়েছি।

ওসি মুহাম্মদ মহব্বত কবির আরো বলেন-‘দুপুরে আমরা গুল মাহমুদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করি। এছাড়াও পুরো ঘটনাটি তদন্ত করে আমরা প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো। ’


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: